কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বিজেপিই প্রধান শত্রু। পার্টি সদস্যরা এটা মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। সিপিএমের ২৩-তম পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্টে এই ভাষাতেই দলের অভ্যন্তরীণ নীতিগত ত্রুটির বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বুধবার থেকে কেরালার কান্নুরে শুরু হল পার্টি কংগ্রেস। এদিন সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন পলিটব্যুরোর প্রবীণ সদস্য এস রামচন্দ্রন পিল্লাই।
এই যুক্তিকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতে খসড়া রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, গত বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম ভোট প্রচারে তুলোধনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। অথচ, বিজেপি যে পার্টির পক্ষে কতটা ধ্বংসাত্মক তা উপেক্ষা করা হয়েছে। বঙ্গে সিপিএম খুবই নিদারুণ অবস্থায় রয়েছে। খসড়া রিপোর্টে এই করুণ অবস্থার কথা মেনে নিয়ে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর এই প্রথম ওই রাজ্যে আমাদের একটিও বিধায়ক নেই।
শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিমান বসু
সিপিএমের বেঙ্গল ইউনিট বিজেপি-তৃণমূলের বিরোধকে নাটক বলে বুঝতে ভুল করেছে। যার ফলে বিজেপি-বিরোধী প্রচার করতে ব্যর্থ হয়েছে সিপিএম নেতৃত্ব। এ কারণে মানুষের মনে একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, সিপিএম ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে দোলাচলে রয়েছে। এমনটাই খসড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে।
একইভাবে ত্রিপুরাতেও পার্টি বিজেপি-আরএসএসের ক্রমবৃদ্ধির পরিমাপ করতে পারেনি। এইসব দৃষ্টান্ত তুলে ধরে কেরালার ইউনিটকেও সাবধান করে দিচ্ছে পার্টি। খসড়ায় কেরালা সিপিএমকে বিধানসভা জয়ের পর একগুঁয়েমি ও ঔদ্ধত্য ত্যাগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জনপ্রতিনিধিরা যেন মানুষের আস্থা অর্জন করেন তাঁদের আচরণের মাধ্যমে। মানুষ হিসেবে কাজ করুন, প্রশাসনিক ক্ষমতাধারী হয়ে নয়। ক্যাডারদেরও মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মানুষের মধ্যে আরএসএসের যে প্রভাব বৃদ্ধি ঘটছে, বুঝতে অথবা টের পাননি পার্টি কর্মীরা। এর ফলেই বিজেপি গত ৮ বছর ধরে কেন্দ্রে ক্ষমতার রয়েছে। এই ভ্রান্ত নীতিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলা হয়েছে, যেসব রাজ্যে বিজেপি দুর্বল, সেখানে আমরা ক্ষমতাসীন দলকে প্রধান শত্রু হিসেবে মনে করেছি, এটাও ভুল ছিল।
আরও পড়ুন: Narendra Modi: প্রধানমন্ত্রীর পিছনে জেটলির ভূত! জগজীবনকে শ্রদ্ধা জানানোর মোদি-টুইট ঘিরে শোরগোল
খসড়া রাজনৈতিক সাংগঠনিক রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অনেক সিপিএম নেতা ও সদস্য বিশ্বাস করতেন, জনবিরোধী নীতি ও কেন্দ্রের আর্থিক নীতির কারণে বিজেপি কোণঠাসা হয়ে পড়বে। তাঁরা বুঝতেই পারেননি উগ্র জাতীয়তাবাদের মোড়কে হিন্দুত্ববাদী আদর্শ জনমানসে কীভাবে প্রভাব ফেলেছে।