কলকাতা: মামলা, মোকদ্দমা হলেও বন্ধ হয়নি (Covid Bengal) গঙ্গাসাগর মেলা, বন্ধ হয়নি জেলায় জেলায় (Covid positivity rate) নানা মেলা ও উৎসব। এইসব মেলা ও উৎসবে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার নানা বিধিনিষেধও জারি করেছে। কিন্তু করোনার (Covid third wave) মাত্রাছাড়া হানার মধ্যেও বিধিনিষেধ মানছে কোথায় আমজনতা? আর মেলা, উৎসব যখন চলছে, তখন মানুষ তো তাতে সামিল হবেই। যতই চিকিৎসকরা সতর্ক করুন না কেন। তার নিট ফল, রাজ্যে হু হু করে বাড়ছে করোনার (Covid) সংক্রমণ।
এই মুহূর্তে সংক্রমণের শীর্ষে বাংলা এবং কলকাতাও। গত সাতদিনে বাংলায় সংক্রমণের হার ৩২.১৮ শতাংশ। দেশের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গোটা দেশে সংক্রমণে সমস্ত জেলার মধ্যে সেরা কলকাতা, হার ৬০.২৯ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরদের অনেকেরই অবস্থা হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো। তাঁরা বলছেন, মানুষ যদি সতর্ক না হয়, সচেতন না হয়, তা হলে আর কী করা যাবে। কেউ কেউ আবার সরকারকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, সরকারের উচিত ছিল মেলা, উৎসব, ভোট বন্ধ করে দেওয়া। গঙ্গাসাগর মেলা মিটলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, ভেবে শঙ্কিত চিকিৎসকরা। সামনে আবার বইমেলা। তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় চিকিৎসক মহল।
কলকাতা টিভি ডিজিটাল রাজ্যের সংক্রমণের হার নিয়ে কথা বলেছিল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। দেখে নেওয়া যাক, কী বলছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসক সুমন পোদ্দার
বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কি সংক্রমণের হার রুখে দেওয়া সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তরে চিকিৎসক সুমন পোদ্দারের একটাই মত, সাধারণ মানুষই পারে সংক্রমণ রুখতে। সরকারি ভাবে খাতায় কলমে বিধিনিষেধ জারি থাকলেও তা মানার ব্যাপারে সাধারণের মধ্যে অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোভিডের দুটো ঢেউ পার করার পর মানুষ এখন অনেকটাই বেপরোয়া। কোভিডবিধি মেনে নিজেকে একটু গুটিয়ে নেওয়ার কোনও সদিচ্ছাই এখন আর নেই তাদের মধ্যে। ডাঃ পোদ্দার বলেন, ‘প্রশাসনও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধায় ভুগছে। বাংলায় এই মুহূর্তে লকডাউন করার মতো পরিস্থিতি নেই। মানুষ যদি এখনও সচেতন হয় তাহলে কোভিড গ্রাফটা তাড়াতাড়ি নামবে। আর আমরা যদি এখনও ঢিলেমি দিই, তা হলে সংক্রমণ নিম্নমুখী হতে আরও বেশকিছু দিন সময় লাগবে।’
আরও পড়ুন: Covid-19 Third Wave: বাড়ছে পজিটিভিটি রেট, ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত প্রায় আড়াই লক্ষ
অতিমারি বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক
সংক্রমণের গ্রাফ তরতরিয়ে বাড়ার জন্য মানুষের ঢিলেমিকেই দায়ী করেছেন অতিমারি বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে মানুষই পারে সংক্রমণ রুখতে। স্পষ্টভাবেই তিনি জানিয়েছেন, ‘আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যেই সংক্রমণের গতি নিম্নমুখী করা সম্ভব যদি কোভিডবিধির তিনটি নিয়ম মেনে চলা যায়। মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি মেনে চলা, কোভিডের তিনটি ডোজ নেওয়া। এই তিনটি বিধি না মানলে পজিটিভিটি রেট কমতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে বলেই জানিয়েছেন তিনি।’
চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস
চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের গলাতেও একই সুর। সংক্রমণ রুখতে তিনিও জনসাধারণের ঘাড়েই দায়িত্ব সপেছেন। তাঁর কথায়, ‘প্রশাসনকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। আর আমজনতার দায়িত্ব প্রশাসনকে সাহায্য করা। ভ্যাকসিনেশনে আরও বেশি জোর দিতে হবে। তার সঙ্গে কোনওভাবেই জনসমাগম করা যাবে না। এই কয়েকটি ন্যূনতম নিয়ম মানলেই আমরা অবশ্যই জয়ের পথে এগিয়ে যাব।’