মুর্শিদাবাদ: পঞ্চায়েত বোর্ড ( Panchayat Board) গঠন নিয়ে অশান্তির আশঙ্কা। নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল নওদা ব্লকের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী কংগ্রেস এবং আরএসপি প্রার্থীরা। তাঁরা চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছেন। বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ওই জয়ী প্রার্থীরা পিটিশন দাখিল করেন। ওই বিরোধী প্রার্থীদের দাবি , চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে গন্ডগোলের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাঁরা আতঙ্কিত বলেই ফলাফলের পরের দিন থেকেই এলাকা ছাড়া হয়ে রয়েছেন। গ্রামে ঢুকে বোর্ড গঠন করতে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হোক বলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই বিরোধী জয়ী প্রার্থীরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের দাবি ভোটের দিন তাদের কর্মী সমর্থকদের মারধর করে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ওই প্রার্থীরা। তৃণমূলের শক্তি আরও বৃদ্ধি হওয়ায় নিজেরাই আতঙ্কিত কংগ্রেস এবং আরএসপি বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
নওদার দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে রয়েছে। বাকি পাঁচটি বিরোধীদের দখলে। চাঁদপুর গ্রাম (Chandpur Village Nawda Block Murshidabad ) পঞ্চায়েতের মোট ২০ টি আসনের মধ্যে ১৩ টি আসন কংগ্রেসের, ২টি আরএসপির এবং ৫টি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওই পঞ্চায়েতে কংগ্রেস এবং আরএসপির মোট ১৫ জন জয়ী প্রার্থী জোটের বোর্ড গঠন করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ওই পঞ্চায়েতের জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী শামীমা মন্ডল, আশরাফুল শেখ ,ইউসুফ মালিথা সহ ১৩ জন জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী ফলাফলের পরের দিন থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ , তাঁরা প্রাণভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। ভয়ে ওই গ্রামে ঢুকতে পারছেন না তারা ফলে আগামী ১১ ই আগস্ট বোর্ড গঠনের দিন তাদের উপরে হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। সে কারণেই তারা হাইকোর্টের দ্বারস্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিপিএম করায় প্রতিশোধ! রাতের অন্ধকারে লক্ষাধিক টাকার ফসল নষ্ট দুষ্কৃতীদের
এ বিষয়ে নওদার কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, বিরোধীদের এখন একটাই ভরসা সেটা হচ্ছে আদালত। নওদার চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগেই তৃণমূলের হুমকি আসছে। জয়ী প্রার্থীরা সকলে আতঙ্কিত। সে কারণে ভোট গঠনের দিন নিরাপত্তা চেয়ে তাঁরা হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছেন। আদালতের সেই রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে, আর এস পির দুই জয়ী প্রার্থীর একই অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই তাঁরা ভোটে জয়ী হয়েছেন ।ফলে তাদের সঙ্গেই জোট করে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করতে চাই আর এস পি। এদিকে নওদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি সফিউজ্জামান শেখ বলেন, চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে মাস্তানি করে জিতেছে কংগ্রেস। ভোটের দিন ২৫- ৩০ জন তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে নওদা ব্লকের মোট ১০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮-৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে চলে যাওয়ায় ভয় পেয়ে গেছে কংগ্রেস। যে সমস্ত কর্মীরা মার খেয়েছেন তারা পাল্টা আক্রমণ করতে পারে ভেবে এলাকা থেকে ফেরার ওই বিরোধী শিবিরের প্রার্থীরা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নওদা ব্লকে বিরোধীদের কাউকেই মারধর করা হয়নি, সে অভিযোগও নেই। ফলে শুধু শুধু তৃণমূলের উপর অভিযোগ আনছে কংগ্রেস বলে জানান তৃণমূল ব্লক সভাপতি।