কলকাতা: শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় রামপুরহাট মামলার (Rampurhat Violence) রায় দেবে কলকাতা হাইকোর্ট। রামপুরহাটের ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত সহ একাধিক দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবীরা নানা প্রশ্ন তোলেন। শামিম আহমেদ নামে এক আইনজীবীর অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে প্রকৃত কারণ হচ্ছে অবৈধ বালি খাদান ও পাথর খাদানে তোলাবাজি। এলাকার দখল নিয়ে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা। এদিন আদালতে আরও অভিযোগ করা হয়, নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও সকাল পর্যন্ত ওই গ্রামে সিসিটিভি লাগানো হয়নি। তবে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, সিসিটিভি লাগানো হয়েছে।
আর এক আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিশেষ তদন্তকারী দল স্বাক্ষ প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যের অভিযোগ, উপপ্রধান ভাদু শেখের মৃত্যুর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের জেলা সভাপতির জড়িত থাকার বিষয়টিকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, এই ঘটনায় শাসকদল যে জড়িত, তা তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকে গ্রেফতার করার নির্দেশেই পরিষ্কার। মুখ্যমন্ত্রীর কথা থেকে আরও পরিষ্কার হয়েছে, ঘটনার পিছনে কারা জড়িত, তা তিনি জানেন।
নীলাঞ্জন আরও বলেন, ছোট আঙাড়িয়ার ঘটনার সময় আদালত বলেছিল, ঘটনায় শাসকদল জড়িত তাই রাজ্য সরকারের পুলিস দিয়ে তদন্ত করা ঠিক হবে না। ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুলিসমন্ত্রীর অধীনে থাকা কোনও সংস্থাকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: Rampurhat Violence NHRC: রামপুরহাট হিংসায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের
বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, রামপুরহাটের ওই গ্রামে কী হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সব জানেন। যেখানে তদন্ত চলছে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী কী করে ডিজিকে মামলা কোন পথে চলবে তার নির্দেশ দেন?
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এদিন কেস ডায়েরি পেশ করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। তাঁর দাবি, ওই ডায়েরি যেন গোপন রাখা হয়। এজি আরও জানান, সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সকালে তাদের আসার কথা ছিল। কেন আসেনি, তা তাঁর জানা নেই। ইতিমধ্যে প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্তও শেষ হয়ে গিয়েছে। এজি সিটের তদন্ত রিপোর্টও আদালতে পেশ করেন।
আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি ঘটনার এনআইএ তদন্ত দাবি করেন। কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর জানান, কেন্দ্রীয় ফরেনসিক দল এসে গিয়েছে। তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজি বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক রাজ্যের কাজে এখনও পর্যন্ত খুশি। তাই এই মুহূর্তে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আদালত এদিন কেস ডায়রি ফিরিয়ে দিয়ে জানায়, প্রয়োজনে তা আবার চাওয়া হতে পারে। শুনানি শেষে এদিন রায়দান স্থগিত রাখে আদালত। শুক্রবার সেই রায় দিয়ে চলেছে হাইকোর্ট।