কলকাতা : জ্বালানী তেল এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দিল্লিতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধ সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদেরা। সাইকেল চালিয়ে যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঘাস ফুল শিবিরের একদল সাংসদ। এবার সেই দিল্লিতেই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ধর্ণায় বসতে চলেছে বিজেপি। বুধবার দিল্লির রাজঘাটে সাংসদদের নিয়ে ধর্ণায় বসবেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই খবর জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতা শমিক ভট্টাচার্য। তিনি অভিযোগ করেছন যে রাজ্যে বিজেপির নেতা কর্মীদের উপরে নিয়মিত হামলা চালানো হচ্ছ। পদ্ম শিবিরের বহু নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়ে ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন। সেই সঙ্গে শাসকদলের হামলার কারণে শতাধিক কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন শমিকবাবু। যার বিরুদ্ধেই এবার বড় আন্দোলন শুরু করতে চলেছে বিজেপি।
গত মে মাসের দুই তারিখে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে রাজ্য জুড়ে হিংসা ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করছে বিজেপি। যা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আদালতেও গিয়েছে পদ্ম শিবির। আদালতের নির্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এক প্রতিনিধিদল এসেছিল বাংলায়। তাদের রিপোর্টেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল শাসক শিবিরকে। সেই বিষয়টিও এদিন শোনা গিয়েছে বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্যের মুখে।
এদিন শমিকবাবু বলেছেন, “জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট হিমশৈলের চূড়া মাত্র। গত ছয় মাসে পশ্চিমবঙ্গে ১৬২ জন বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে। আগামিকাল(বুধবার) রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে আমাদের সাংসদ সদস্যরা ধর্ণায় বসবেন।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “রাজ্যের অনেক জায়গায় ভয় দেখিয়ে বিজেপি কর্মীদের হাতে তৃণমূলের পতাকা ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
চলতি সপ্তাহের সোমবার রাতে উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ বিধানসভার দক্ষিণ বিষ্ণুপুর বুথের এক বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়। মৃত ওই ব্যক্তির নাম দেবেশ বর্মন। মঙ্গলবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তৃণমূলের পতাকা দিয়ে মৃতের মুখ বাঁধা ছিল। ওই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। এই প্রসঙ্গে শমিক ভট্টাচার্য বলেছেন, “এই ভাবে আমাদের কর্মীদের খুন করে মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে।”
কর্মীদের মনে আশা জুগিয়েও বাংলা দখল করতে পারেনি বিজেপি। যার জেরে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের গদি থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। অবিজেপি দলগুলি জোটের আলোচনাও শুরু করেছে। যা নিয়ে মুখ খুলেছেন বাংলার বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “প্রতি নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভোটের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের মানুষ অস্থায়ী সরকারের বিপক্ষেই ভোট দেবে।”