জলপাইগুড়ি: তৃণমূল (TMC) নেতার দাদাগিরিতে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও ব্যাবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ (Police)। বাধ্য হয়ে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলি। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri PS) জেলার ময়নাগুড়ি থানা (Mainaguri PS) এলাকার উল্লার ডাবরির ঘটনা। ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন বসবাস করছেন ললিত সরকার ও তাঁর দুই ভাই অমূল্য সরকার ও প্রফুল্ল সরকার। বছর পাঁচেক আগে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ফোরলেন তৈরি করার জন্য সরকার পরিবারের কিছু জমি অধিগ্রহণ করে। এর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মোটা অংকের টাকা দেওয়া হয় ওই সরকার পরিবারকে। অভিযোগ, ওই টাকা পাওয়ার পরেই পাপন চাকলাদার নামে ওই তৃণমূল নেতার নজর পরে সরকার পরিবারের উপর। যুব তৃণমূল নেতার এই অত্যাচারের বিষয় নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন ললিত। তাঁর দাবি, আদালত নির্দেশ দিয়েছে তিনি যাতে নিজের বাড়িতে থাকতে পারেন তার জন্য পুলিশ সহযোগিতা করবে৷ কিন্তু তার পরেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন ললিত।
শুক্রবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন ললিত সরকার। এসপি অফিস চত্বরে তিনি জানান, যে জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে তার বাইরেও তাঁর নিজের ব্যক্তিগত কিছু জমি রয়েছে। বাড়ি, জমি নিয়ে যার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। ওই জমি, বাড়ির দখল নিতে চাইছে পাপন চাকলাদার। কেবল তাই নয়, পারিবারিক সমস্যার সুযোগ নিয়ে পাপন ভয় দেখিয়ে তাঁর ভাই প্রফুল্লর কাছ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা আদায় করে। এর পরে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। যে কারণে প্রফুল্ল, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেকে জেলও খাটতে হয়েছে। জেল থেকে বেড়িয়ে বাড়ি ফিরলে ওই পরিবারের উপর শুরু হয় নতুন করে অত্যাচার। বাড়ি ভাঙচুর, আগুন দেওয়া সব করেছে পাপন এবং তাঁর দলবদল। তার পর থেকেই স্ত্রী এবং তিন সন্তান নিয়ে বাড়ি ছাড়া তাঁর ভাই।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের পরই দেউচা পাঁচামির কাজ নিয়ে বৈঠক মুখ্যসচিবের
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাপন চাকলাদারের অত্যাচারে শিকার কেবল সরকার পরিবার নয়। এলাকার একাধিক পরিবার এই নেতার অত্যাচারের শিকার হয়েছে। এই বিষয়ে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ জানিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ললিত। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাপন। তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, তাঁকে বদনাম করার জন্যই এই ধরনে অভিযোগ করা হচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূলের ময়নাগুড়ির ব্লক সভাপতি শিবশঙ্কর জানান, তৃনমূলের মূল দলের সঙ্গে পাপন চাকলাদারের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
দেখুন অন্য খবর: