কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ডবল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বুধবার বহরমপুরে অধীর বলেন, ভোটের দিন বুথ থেকে স্ট্রংরুমে নিয়ে যাওয়ার সময় আসল ব্যালট বদলে ওই ব্যালট পেপার বাক্সে দিয়ে দেওয়া হবে। ফলে মানুষের আসল মতামত জানা যাবে না। কংগ্রেস নেতার মতে, এ এক মারাত্মক ষড়যন্ত্র। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই কাজ চলছে।
পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতও এদিন অভিযোগ করেন, সেখানে জেলা পরিষদ আসনে ডবল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। জেলায় আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার পরে ভোটের দায়িত্বে থাকা দুই সরকারি কর্মীকে বদলি করা হয়েছে। নেপাল জানান, তাঁরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবেন এবং আদালতে যাবেন এটা নিয়ে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও অভিযোগ করেন, নকল ব্যালট পেপার ছাপানো হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটকে প্রহসনে পরিণত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | Medinipur | কোলাঘাটে বিজেপির হয়ে প্রচার নির্দল প্রার্থীর
অধীর বলেন, ব্যালট ইউনিটের চাবি চাইছে পুলিশ। সেই চাবি দিতে না চাওয়ায় পুরুলিয়ায় তিন সরকারি অফিসারকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাংলায় ভয়ঙ্কর কারচুপির খেলা চলছে। কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, আদালতের রায়ে সন্ত্রস্ত তৃণমূল এখন কারচুপির রাস্তায় নেমে পড়েছে। একদিকে পুলিশকে দিয়ে বিরোধীদের চমকানো হচ্ছে। অন্যদিকে শাসকদলও নানাভাবে হেনস্তা করছে বিরোধী প্রার্থী এবং সমর্থকদের।
শাসকদলের সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, অধীর চৌধুরী মারাত্মক অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের স্বপক্ষে তাঁকে প্রমাণ দিতে হবে। না হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশকে অনুরোধ করব অধীর চৌধুরীর অভিযোগের তদন্ত করতে। তিনি যদি অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারেন, তবে কমিশন এবং পুলিশকে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। শান্তনু বলেন, অধীরবাবু নিজের কেন্দ্রে সর্বত্র পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে পারেননি। তাঁর মুখে এসব অভিযোগ মানায় না।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন অবশ্য কংগ্রেস নেতার এই অভিযোগ নিয়ে এদিন বিকেল পর্যন্ত মুখ খোলেনি। কমিশনের এক কর্তা শুধু বলেন, আমরা অধীর চৌধুরীর বক্তব্য শুনেছি।
এদিকে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে। বহরমপুর ব্লকের ভাকুড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী সুলগ্ন বিশ্বাস এদিন জানান, ওই পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী বাচ্চু মণ্ডল তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন। প্রাণভয়ে তিনি এখন অন্য বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সুলগ্ন বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেস প্রার্থী বাচ্চু কয়েকদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, বহরমপুরের পুলিশ এখন তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। বহরমপুর থানার চক্রান্তে বিনা দোষে বাপি জেল খেটেছেন। তিনি নাকি জেল থেকে বেরিয়ে তৃণমূল প্রার্থীকে ভয় দেখাচ্ছেন। যত সব আষাঢ়ে গল্প। জয়ন্ত বলেন, আসলে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল বিরোধী প্রার্থীদের ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশকে বলার পরেও তারা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।