কলকাতা: সোমবার সকালে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Scam) মামলায় রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ মোট ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করে দিয়েছে। অর্থাৎ ২০১৬ সালে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের সবার চাকরি বাতিল। এমনকী প্যানেলের মেয়াদ শেষের পর যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বছরে ১২ শতাংশ হারে সমস্ত বেতন ফেরত দিতে হবে।
বলা বাহুল্য সোমবার এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয়েছে। বহুদিন ধরে চলতে থাকা এক মামলার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। এর শুরুটা হয়েছিল সেই ২০১৮ সালে। তখন বিকাশ ভবনের (Bikash Bhaban) সামনে ছোটখাটো ধর্না, অবস্থান চলত। তা নিয়ে রাজ্যবাসী মাথাও ঘামায়নি, না ছিল তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের তেমন আগ্রহ। ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, এই ছিল অভিযোগ।
আরও পড়ুন: অভিষেক কি জঙ্গি টার্গেট, বাড়ির সামনে রেইকি মুম্বই হামলার ষড়যন্ত্রীর
প্রথম দিকে পাত্তা পাচ্ছিল না এই প্রতিবাদ। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে আগে ছবি পাল্টায়। কলকাতা প্রেস ক্লাবের (Press Club) সামনে অনশনে বসেন আন্দোলনকারীরা। ২৯ দিন ধরে চলে সেই অবস্থান এবং অবশেষে পুরোদস্তুর আন্দোলন হয়ে ওঠে। এর পর সল্টলেকের করুণাময়ীতে ১৮৭ দিনের ধর্না, তারপর আন্দোলন উঠে এল ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে। এর মধ্যে প্রায় আড়াই বছর কেটে গিয়েছে। আন্দোলনকারীরা সংখ্যায় বেড়েছেন, আরও জমাট বেঁধেছে তাঁদের সুবিচারের দাবি। অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
২০২১ সালের অগাস্ট মাসে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সিবিআই আসরে নামতেই কেচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে পড়ে। বোঝা যায় যে এই দুর্নীতিতে শুধু চুনো-পুঁটি নয়, জড়িত রাঘব বোয়ালরাও। প্রথমেই নাম আসে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী তথা দুর্নীতির সময়ের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। তাঁর গঠন করা উপদেষ্টা কমিটি নিয়েও সন্দেহ দৃঢ হয়। তদন্তে শামিল হয় ইডিও। গ্রেফতার হন পার্থ ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা।
তারপরে উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরাও গ্রেফতার হন। ওদিকে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন কখনও থামেনি। সোমবারের ঐতিহাসিক রায় ঘোষণার দিন ১১৩৫ দিনে পড়েছে সেই আন্দোলন।
দেখুন অন্য খবর: