Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থস্তম্ভ: সুচন্দ্রিমার বাড়িতে ৬০ ঘন্টার তান্ডব ইনকাম ট্যাক্স রেইড এর নামে
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:০১:০১ এম
  • / ৪০৫ বার খবরটি পড়া হয়েছে

শুরু করলাম আজকের চতুর্থস্তম্ভ,  কিছু বলার আগে হাত জোড় করে নমস্কার, প্রণাম, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাই সেই সব অসংখ্য দর্শক, পাঠক, শুভানুধ্যায়ীদের, যাঁরা এই কদিন আমার খবর জানতে চেয়েছেন, কলকাতা টিভির সঙ্গে থেকেছেন, ইনকাম ট্যাক্স রেইড এর নামে চতুর্থ স্তম্ভের ওপর যে আঘাত নামিয়ে আনা হয়েছে, তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তারপরে যে কথা বলবো তা হল, আমি ভয় পাই নি, আমরা ভয় পাই নি। দেশ জুড়ে যে তান্ডব চালানো হচ্ছে, বিরোধী কন্ঠস্বরকে যে ভাবে চুপ করিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে, তারই অঙ্গ হিসেবেই ওরা এসেছিল সাতসকালে ৬০ ঘন্টা ধরে ভয় দেখানোর পরে আজ প্রথম সোমবার, নিন, দেখুন আমি আবার ক্যামেরার সামনে, আমার কণ্ঠস্বর ঐ অগণতান্ত্রিক মোদি সরকার, ফাসিস্ট আর এস এস – বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে  একইরকম সরব, কারণ আমি জানি আজ যদি আমরা ভয় পাই, চুপ করে থাকি, মাথা নুইয়ে দিই, প্রতিবাদ না করি, তাহলে আগামী কদিন পরেই, আবার কোনও ছল ছুতোয় মানুষের অধিকার কাড়া হবে, বহুস্বর কে রুখে দেবার চেষ্টা হবে, গণতন্ত্র আর সংবিধানকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলবে। জার্মানিতে হিটলারের শাসনে মার্টিন ন্যিমেলারের লেখা এই কবিতা টা মনে পড়ছে, 

যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিল, 

আমি কোনো কথা বলিনি,

কারণ আমি কমিউনিস্ট নই।

তারপর যখন ওরা ট্রেড ইউনিয়নের লোকগুলোকে ধরে নিয়ে গেল, আমি নীরব ছিলাম,

কারণ আমি শ্রমিক নই।

তারপর ওরা যখন ফিরে এলো ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে ভরে মারতে,

আমি তখনও চুপ করে ছিলাম,

কারণ আমি ইহুদি নই।

আবারও আসল ওরা ক্যাথলিকদের ধরে নিয়ে যেতে,

আমি টুঁ শব্দটিও উচ্চারণ করিনি,

কারণ আমি ক্যাথলিক নই।

শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে,

আমার পক্ষে কেউ কোন কথা বলল না, 

কারণ, কথা বলার মত তখন আর কেউ বেঁচে ছিল না।

তাই প্রতিবাদ করবো, প্রতিবাদীদের সঙ্গে নেবো, জানি স্বৈরতন্ত্র, ফাসিবাদ শেষ কথা বলে নি, শেষ কথা বলে না। প্রতিবাদ করবো, তার সবচেয়ে বড় কারণ, এই ভারতবর্ষ কারোর বাপের নয়, এ দেশ আমারও। রাহত ইন্দোরি সেই কবেই লিখেছিলেন,

Agar khilaaf hain hone do jaan thodi hai,

Ye sab dhuwan hai koi aasman thodi hai,

Lagegi aag to aayenge ghar kayi zaddd mein,

Yaha pe sirf hamara makaan thodi hai,

Main janta hoon ki dushman bhi kam nahi lekin,

Hamaari tarah hatheli pe jaan thodi hai,

Hamaare munh se jo nikle wahi sadaqat hai,

Hamare munh mein tumhaari zubaan thodi hai,

Jo aaj sahib-e-masnad hai kal nahi honge,

Kiraaye daar hain zaati makaan thodi hai,

Sabhi ka khoon hai shamil yahan ki mitti mein,

Kisi ke baap ka HINDUSTAN thodi hai…”

বিরুদ্ধে চলে যাবে? বেশ তো যাক না, 

জীবন তো আমার পক্ষেই আছে।

এই যে চারিদিকে যা দেখছো, তা তো ধোঁয়াসা,

তার ওপরে নীল আকাশ আছে।

আগুন যদি মহল্লায় লাগে তাহলে কি একা আমার ঘর পুড়বে?

আরও অসংখ্য ঘরবাড়ি কি নেই যা পুড়ে ছাই হবে?

আমি জানিই তো, শত্রু কি কম এই দুনিয়ায়?

কিন্তু তাদের কজনের হৃৎপিন্ড রাখা আছে হাতের চেটোয়? 

আমার মুখ দিয়ে যে শব্দ বের হচ্ছে আজ, সত্য সেটাই

তোমার মুখের ভাষা, তোমার ছড়ানো বিষ আমার মুখে নেই।

যে আজ বসে আছে সিংহাসনে, 

সে আজ আছে, কাল থাকবে কোথায়?

সে তো ভাড়াটে, বাড়ি মালিক তো নয়।

সবার রক্ত লেগে আমার দেশের এই মাটিতে

এই মাটি, এই মানুষ, এই দেশ কারো বাবার নয়।

সভি কা খুন হ্যায় সামিল য়হাঁ কে মিট্টি মে

কিসিকে বাপ কা হিন্দোস্থাঁ থোড়ি হ্যাঁয়?

তাই সত্যি কথা বলবো, যতবার রেইড হবে, ভয় দেখানোর চেষ্টা হবে, ততবার বেশি বেশি করে বলবো।

কী হয়েছিল সেদিন? ১৬ তারিখ, সকালে ঘুমিয়ে আছি, হঠাৎ কড়া নাড়া, বেশ জোরে, আমি দরজা খুলতেই কয়েকজন ঢুকে এলেন, আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হল, বেডরুমে আমার ছেলে ঘুমিয়ে আছে, বলার পরেও তাঁরা বেড্রুম, লাগোয়া টয়লেট, পাশের ঘর, অন্য টয়লেট, পুজোর ঘর সর্বত্র জুতো পরে ঘুরে বেড়াতে থাকলেন। ওদিকে আমার শশুরবাড়িতে আরও নাটকীয়, দরজা ভেঙে তাঁরা ঢুকেছেন, তছনছ করা হচ্ছে প্রত্যেকটা ঘর, আলমারি, বই এর র‍্যাক, দেওয়াল ঠুকে দেখা হচ্ছে, ভেতরে টাকা সোনা গয়না আছে কি না। না আমাকে আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয় নি, এলাকার দুজন গণ্যমান্য পরিচিত কে সাক্ষী করার কথা, তা না করে তাঁরা তাদের গাড়ির দুই ভাড়া করা ড্রাইভার কে এনে সই করিয়ে তাদের বাইরে পাঠিয়ে দিলেন, মানে ৬০ ঘন্টার মিনিট পাঁচেক ছাড়া, পুরো রেইড চললো, কোনও সাক্ষী না রেখেই, এবং প্রশ্ন টাকা কোথায়? কিসের টাকা? আমি কর্মচারী, এমনকি ডিসিসন মেকিং বডিরও কেউ নই, তাহলে আমার কাছে আর পি টেকভিশন কোম্পানির খবর জানতে চাওয়া হচ্ছে কেন? আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, না উত্তর মেলেনি, চলতে থাকলো রেইড এর নামে ভয় দেখানো। এবং এরই মধ্যে আমার বাচ্চার ঘুম ভেঙেচে, ঘুম থেকে উঠে উর্দি পড়া বন্দুক হাতে জওয়ানদের দেখে সে কুঁকড়ে গেছে, তাকে অন্য ঘরে রেখেই আমাকে জেরা করা হচ্ছিল, আমার সন্তান ভয়ে কাঁদছে, আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, কলকাতা টিভি কোন কোন বিজ্ঞাপন থেকে পয়সা পায়? কোথা থেকে ক্যাস টাকা আসে? আমি কত টাকা মাইনে পাই? আমার হোয়াটস অ্যাপ এর পারসোনাল মেসেজ খোলা হচ্ছে, আমার ফটো লাইব্রেরি খুলে দেখছেন কিছু অচেনা পুরুষ, আমার সন্তান এক স্বাধীন দেশের গণতন্ত্রের চেহারা দেখছে, কাঁদতেও ভুলে গেছে, বোবার মত তাকিয়ে রয়েছে। বিকেল নাগাদ এলো সেই মোক্ষম প্রশ্ন, এই যে আপনার মেসেজ বক্স এ লেখা, অনেক বড় বড় লেখা, কী এগুলো? জানালাম চতুর্থ স্তম্ভ। হ্যাঁ জানি, পড়ে শোনান। পড়ে শোনালাম, থাক থাক। বন্ধ করলাম, ওনাদের গুণগান সহ্য হলো না। আমাদের দর্শকরা বহু আগেই কমেন্টবক্সে লিখেছেন, দিদি আপনার ঘরেও যাবে ঐ ইডি, ইনকাম ট্যাক্স সি বি আই এর দল। এল তারা। এবার আমার ব্যাঙ্ক লকার বন্ধ করা হল, আমার ঘরথেকে সেদিনই তাঁরা ১৯০০ টাকা পেয়েছেন ৬০/৭০ গ্রাম সোনা পেয়েছেন, এবং অবাক হয়ে একটা প্রশ্নই করে চলেছেন, ব্যস? ইতনা হি? সন্ধ্যে হল, রাত হল, জেরা থামলো। ১৭ তারিখ সারাদিন কাটলো, আর কোনও প্রশ্ন নেই, পুরুলিয়ার একটি মেয়ে সি আর পি এফ এ কাজ করে, সে আমাকে চা করে দিল, খাবার কেবল আনলো না, খাইয়ে দিল, কোনও জেরা নেই, কিন্তু তাঁরা বসে আছেন। বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছেন না, কেন? ওপর থেকে নির্দেশ নেই। ১৮ তারিখ দুপুর গড়িয়ে সন্ধে, ততক্ষণে ওনারাও ক্লান্ত, হঠাৎ সম্ভবত নির্দেশ এল, ওনারা সন্ধ্যে নামার আগে ব্যাগ গুছিয়ে নিলেন, অজস্র সই করালেন, সিজার লিস্ট তৈরি হল, হ্যাঁ, ১৯০০ টাকা আর ৬৫গ্রাম সোনার সিজার লিস্ট, ও হ্যাঁ, আপনারা যেগুলো আগেই শুনে ফেলেছেন, চতুর্থ স্তম্ভের সেই সব স্ক্রিপ্টগুলোও গেল তাদের সঙ্গে। আমার শশুর বাড়িতেও রেড থেমেছে, সেখান থেকেও শূণ্য সিজার। দরজা ভাঙাই পড়ে থাকলো, তাঁরা চলে গেলেন, খবর পেলাম সম্পাদক কৌস্তুভ রায় এর বাড়িতে, কলকাতা টিভির দপ্তরে তখনও রেইড চলছে। ৬০ ঘন্টা পর আমি আমার বই এর র‍্যাকে রাখা ভারতবর্ষের সংবিধান এর প্রথম পাতা খুললাম, লেখা আছে, 

আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র রূপে গড়িয়া তুলিতে, এবং উহার সকল নাগরিক যাহাতে :

সামাজিক, আর্থনীতিক এবং রাজনীতিক

ন্যায়বিচার,

চিন্তার, অভিব্যক্তির বিশ্বাসের, ধর্মের ও উপাসনার স্বাধীনতা,

প্রতিষ্ঠা ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতভাবে লাভ করেন, 

এবং তাঁহাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তি-মর্যাদা ও জাতীয় ঐক্য ও সংহতির আশ্বাসক ভ্রাতৃভাব বর্ধিত হয়,

এইজন্যই সংবিধান লেখা হয়েছিল, এক স্বাধীন দেশের সংবিধান, যে স্বাধীনতার লড়াই এর সময়ে সকালে বিকেলে ইংরেজ পুলিশ প্রশাসন তাড়া করে বেড়িয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের, জেলে পুরেছে, সেদিন আমাদের ঠাকুর, রবি ঠাকুর লিখেছিলেন, 

ওদের বাঁধন যতই শক্ত হবে ততই বাঁধন টুটবে,

মোদের ততই বাঁধন টুটবে।

ওদের যতই আঁখি রক্ত হবে মোদের আঁখি ফুটবে,

ততই মোদের আঁখি ফুটবে ॥

আজকে যে তোর কাজ করা চাই, স্বপ্ন দেখার সময় তো নাই–

এখন ওরা যতই গর্জাবে, ভাই তন্দ্রা ততই ছুটবে,

মোদের তন্দ্রা ততই ছুটবে ॥

ওরা ভাঙতে যতই চাবে জোরে গড়বে ততই দ্বিগুণ করে,

তোরা ভরসা না ছাড়িস কভু, জেগে আছেন জগৎ-প্রভু–

ওরা ধর্ম যতই দলবে ততই ধুলায় ধ্বজা লুটবে,

ওদের ধুলায় ধ্বজা লুটবে ॥

ওদের বাঁধন যতই শক্ত হবে ততই বাঁধন টুটবে,

মোদের ততই বাঁধন টুটবে ॥

সমস্যা হল, দাড়ি যতই বাড়ান না কেন, এন্টায়ার পলিটিকাল সায়েন্স পড়া মোদিজী রবিঠাকুর পড়েন নি, যে কয়েক লাইন পড়েছেন, তার মানে বোঝেন নি।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মে মাসে কেরিয়ারে বড় উন্নতি হবে ৫ রাশির জাতকের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আচমটাই ঝড়-বৃষ্টি মেদিনীপুর জুড়ে, বাকি জেলায় কবে?
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসুস্থ অভিনেতা সোহম, ভর্তি হাসপাতালে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বিশ্বকাপে খেলতে পারেন রিঙ্কু, আছে আইসিসির এই নিয়ম
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
খড়গ্রামের ঘটনায় গ্রেফতার ৭, এখনও অধরা অনেকে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কুণাল কি বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন, জল্পনা তুঙ্গে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কাল, বৃহস্পতিবার সকালে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
ভোটদানের হার বাড়ল কী করে? প্রশ্ন মমতার
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
আমাকে কি অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে, প্রশ্ন কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের পদ খুইয়ে বিস্ফোরক কুণাল
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কর ফাঁকি দেওয়া ৫ লক্ষের সিমকার্ড ব্লক করছে পাকিস্তান
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
সলমানের বাড়ির বাইরে গুলি: অভিযুক্তের মৃত্যু
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
Aajke | দেশের আইন কানুনের উপর এতটুকুও আস্থা নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা বিজেপি নেতাদের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ গেল কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
Fourth Pillar | এই নির্বাচনের সময়েই দাবি তুলুন, আমাদের মৌলিক অধিকার ফেরত পেতে চাই
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team