কলকাতা : রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হুমকি চিঠি’ কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত অরিন্দম সেনকে। তাঁকে জেরা করে জানা গিয়েছে আলাপন বন্ধ্যোপাধ্যায় ছাড়াও গত দু’বছরে একইভাবে প্রায় ৩৬ চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে সিংহ ভাগই হুমকির চিঠি। এমনকী একই দিনে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরও ৬ জনকে পাঠানো হয়েছিল চিঠি।
এই তথ্য পাওয়ার পরেই অরিন্দম সেনের সম্পর্কে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে পেশায় চিকিৎসক অরিন্দম সেনের দু’বার বিয়ে হয়েছিল। যার মধ্যে একটিও টেকেনি। পুলিশের ধারনা এই ব্যক্তিগত টানাপোড়েনের পর থেকে তিনি মানসিক স্থিতি হারাতে শুরু করেন বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। তদন্তের স্বার্থে ইতিমধ্যেই তাঁর মেডিক্যাল হিস্ট্রি জানারও চেষ্টা করছে পুলিশ।
অন্যদিকে, এই বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে অরিন্দম সেনের পাড়া – প্রতিবেশীর তরফ থেকে উঠে এসেছে অভিযোগ। তাঁরা জানিয়েছেন, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ব্যক্তিত্ত্ব ছাড়াও পাড়ার লোকেদেরও বিভিন্ন নাম করে চিঠি পাঠিয়েছেন অরিন্দম সেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গৌরহরি মিশ্রের নাম নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন – আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘হুমকি চিঠি’ কাণ্ডে গ্রেফতার ৩
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে চিঠি লেখা হয়েছে সেটিও গৌরহরি মিশ্রের নাম করেই লেখা হয়েছে। অরিন্দম সেনকে জেরা করার পর জানা গিয়েছে, তাঁর টার্গেট রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন না।
টার্গেট ছিলেন চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তি গৌরহরি মিশ্র। যিনি অরিন্দম সেনের প্রতিবেশী। যাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল অরিন্দমের । ফলে, গৌরহরি নামের ওই ব্যক্তিকে অপদস্থ করার জন্য গোটা বিষয়টি ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে তাঁর নামে চিঠি পাঠান মূল অভিযুক্ত অরিন্দম সেন। একই ভাবে পরিকল্পনা মাফিক পাড়ার বিভিন্ন ব্যক্তির নাম নিয়ে অন্য ব্যক্তিকে চিঠি পাঠাতেন তিনি।
অনেক্ষেত্রে আবার দুই ব্যক্তির মধ্যে ঝামেলা অশান্তি হলে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ ছড়াতেন তিনি। কিছুক্ষেত্রে টিভিতে সংবাদ দেখেও লিখতেন চিঠি। এই বিভিন্ন দিকগুলির কথা মাথায় রেখে তদন্ত আরও জোরাল করছে পুলিশ। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে আদতে তিনি মানসিক রোগী কিনা? বাকিদেরই বা আর কী কী কারণে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।