জলপাইগুড়ি: গত দু’দিনের প্রবল বর্ষণ উসকে দিল ১৯৬৮ সালের লক্ষ্মী পুজোর দিনের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি। ১৯৬৮ সালে লক্ষ্মী পুজোর দিনে প্রবল বর্ষণে ভয়ঙ্কর হয়ে যাওয়া তিস্তার জলে প্রাণ গিয়েছিল বহু মানুষের। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি শহর-সহ জেলার অনেক জায়গা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। শিলিগুড়ি-কালিম্পং টয় ট্রেন লাইন তিস্তার জলোচ্ছ্বাসে বেলাইন হয়ে গিয়েছিল৷
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়ে ১৮ ঘণ্টা আটকে শ’খানেক পর্যটক, উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন
গত দু’দিন ধরে সিকিম-সহ উত্তরবঙ্গের প্রবল বর্ষণে সেই লক্ষ্মীপুজোর দিনই তিস্তা আবার ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। পাহাড়-সহ সমতলের অনেক জায়গাতেই লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার দোমহনি থেকে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ পর্যন্ত লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তিস্তার জল অনেক এলাকায় ঢুকে পড়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার তিস্তার ব্যারেজ থেকে ৩৮০০ কিউসেক জল ছাড়ার ফলেই এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷
মঙ্গলবার দার্জিলিঙে ১৬৬.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে৷ কালিম্পং-এ হয়েছে ৯৪.২ মিলিমিটার, শিলিগুড়িতে হয়েছে ১০৯.৬ মিলিমিটার, জলপাইগুড়িতে ৭৯.৯ মিলিমিটার ও কোচবিহারে ৪৫.৫ মিলিমিটার। প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা পাহাড়-সহ সমতল। কার্শিয়াং ও মহানদীর মাঝখানে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস পড়ায় শিলিগুড়ি কার্শিয়াং-এর রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ যদিও পাঙ্খাবারি এবং রোহিনী হয়ে কার্শিয়াং দিয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা খোলা আছে। পোখরিয়াবং-সুখিয়াপোখরি, ঘুম-বিজন বাড়ির রাস্তা এখনো বন্ধ৷
আরও পড়ুন: গৌরাঙ্গ সেতুতে ফাটল, বন্ধ যান চলাচল
দুর্যোগের মধ্যেও রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। মানেভঞ্জনের কাছে একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ায় মানেভঞ্জন থেকে রিম্বিকের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার কাছে বালাসন ব্রিজের তৃতীয় পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ওই ব্রিজের উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাড়িগুলোকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন বাইপাসে দিয়ে ঘুরিয়ে নৌকাঘাট দিয়ে পাঠানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে গোটা পাহাড়-সহ সমতলের পরিস্থিতি যথেষ্টই উদ্বেগজনক৷