গুয়াহাটি: অসমে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ রাজ্যের ৩৩টি জেলা জলের তলায়৷ ঠিক তখনই ভিন রাজ্যের বিধায়কদের পাঁচতারা হোটেলে রেখে খাতির যত্ন করায় প্রবলভাবে সমালোচিত মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা৷ বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, এতে মঙ্গলই হয়েছে রাজ্যের৷ শিবসেনা বিধায়কদের বিক্ষোভে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি অন্তত সবার গোচরে এসেছে৷
কয়েকটি জেলা বাদে অসমে বন্যা পরিস্থিতির লক্ষণীয় উন্নতি দেখা যায়নি শনিবারও৷ এখনও বানভাসি বহু এলাকা৷ দিন দিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যায় আরও দশজনের মৃত্যু হয়েছে৷ সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৮৷ ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩ লক্ষের বেশি মানুষ৷ অসমের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিলচরের ৮০ শতাংশ জলের তলায়৷ খাবার ও পানীয় জলের সংকট তৈরি হয়েছে সর্বত্র৷ এই পরিস্থিতিতে রাজধানী গুয়াহাটির বিলাসবহুল হোটেলে শিবসেনার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আপ্যায়নে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে৷ যদিও সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানিয়েছেন, শিবসেনার অন্তর্দলীয় দ্বন্দ্বে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই৷ বিরোধীদের নিশানা করেই তিনি বলেন, ‘রাজ্যে ২০০-র বেশি হোটেলে অতিথিরা রয়েছেন৷ বন্যার দোহাই দিয়ে সবাইকে হোটেল ছেড়ে চলে যেতে বলব? মহারাষ্ট্র বিজেপি শিবসেনার বিক্ষুব্ধদের সাহায্য করছে৷ এখানে আমি জড়িত নই৷’
হিমন্ত বিশ্বশর্মা যতই মুখে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি থেকে নিজেকে এবং অসম বিজেপিকে দূরে রাখার কথা বলুন না কেন, বাস্তবে অসম সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও দলের নেতাকে গুয়াহাটির ওই হোটেলে ঢুকতে এবং বেরতে দেখা গিয়েছে৷ বিরোধীদের দাবি, এতেই স্পষ্ট রাজ্য বিজেপি শিবসেনা বিধায়কদের তোল্লাই দিচ্ছে৷ এ ব্যাপারে হিমন্ত বিশ্বশর্মার প্রতিক্রিয়া, ‘আমাদের কাজ হল বাইরে থেকে আসা অতিথিদের নিরাপত্তা দেওয়া৷ তাঁরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সেদিকে নজর রাখা৷ আগামিদিনে যদি কংগ্রেসের কেউ আসেন তাহলে আমি যাব তাঁদের স্বাগত জানাতে৷ আমি শিবসেনার বিধায়কদের প্রতি কৃতজ্ঞ৷ তাঁরা এসেছেন বলে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি সবার নজরে পড়েছে৷’ কিন্তু রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় ফুঁসছেন৷ এক বাসিন্দা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এখানে এসে বন্যা পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখে যান৷ বন্যার জলে এখনও বহু মানুষ আটকে রয়েছেন৷ কিন্তু রাজ্য সরকার অন্য রাজ্যের মন্ত্রীদের এনে ঘোড়া কেনাবেচায় ব্যস্ত৷ এটাই কি অসম সরকার?’
আরও পড়ুন: Maharashtra: গুয়াহাটির হোটেলের বিল কে মেটাচ্ছে, প্রশ্ন এনসিপির