জলপাইগুড়ি: ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই৷’ জলপাইগুড়ির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অবশ্য সোনার হরিণ চাননি৷ চেয়েছিলেন চাইনিজ সেক্স টয়৷ সেজন্য ঘটি-বাটি বেচে দিতেও দ্বিধা করেননি৷ সেক্স টয় কেনার জন্য জলের মতো টাকা খরচ করেছেন৷ অবশেষে ৩৫ লক্ষ টাকা খোয়ানোর পর তাঁর বোধোদয় হয়৷ বুঝতে পারেন প্রতারকের পাল্লায় পড়েছেন৷ থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন৷ অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস একজনকে গ্রেফতার করেছে৷ বিষয়টি জানাজানি হতে স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল ছড়িয়ে পড়ে৷ শুরু হয়ে যায় মুখরোচক আলোচনা৷ আর এদিকে সেক্স টয় কেনার চক্করে লক্ষ লক্ষ টাকা হারিয়ে কপাল চাপড়াচ্ছেন ওই ব্যক্তি৷
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার অন্তর্গত বেলাকপবা এলাকায় বাড়ি প্রাইমারি স্কুলের ওই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের৷ পুলিসের কাছে অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, সেক্স টয়ের খোঁজে ২০২০ সালে শিলিগুড়ির হংকং মার্কেটের একটি দোকানে গিয়েছিলেন৷ দোকানদার তাঁকে জানিয়েছিল, এই ধরনের পুতুলের দাম অনেক৷ বিদেশ থেকে আনাতে হয়৷ অগ্রিম ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে৷ দোকানদারের কথা শুনে টাকা দিতে রাজি হয়ে যান তিনি৷ কিছুদিন পর ওই দোকানদার তাঁকে জানান, সেক্স টয়টি যিনি নিয়ে আসছিলেন তাঁকে পুলিস ধরে ফেলেছে৷ জেরায় সে খদ্দেরের নাম বলে ফেলেছে৷ এবার পুলিসকে টাকা দিতে হবে৷ নইলে পুলিস তাঁকে গ্রেফতার করবে বলে ভয় দেখায় ওই দোকানদার৷
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তখনও বোঝেননি প্রতারকদের খপ্পড়ে পড়েছেন তিনি৷ তাই দাবি মতো ওদের টাকা দিতে থাকেন৷ দফায় দফায় মোট ৩৫ লক্ষ টাকা দেন৷ পুলিসকে তিনি জানিয়েছেন, এ জন্য তাঁকে জমিও বিক্রি করতে হয়েছে৷ আর টাকা দিতে না পেরে শেষপর্যন্ত রাজগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ জানান৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পবন দাস নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিস৷ অভিযুক্তের দাবি, তিনি কিছুই জানেন না৷ তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে ৫ লক্ষ টাকা জমা পড়ে৷ অভিযুক্তকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন৷ জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার দেবর্ষি দত্ত ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে প্রতারক জানিয়েছিল, তাঁকে একটি বিশেষ চাইনিজ পুতুল এনে দেওয়া হবে৷ যেটি তাঁর অনেক কাজে লাগবে৷ পুতুলটি কেনার জন্য প্রতারককে ৩৫ লক্ষ টাকা দেন ওই ব্যক্তি৷ পরে তিনি বুঝতে পারেন তাঁকে ঠকানো হয়েছে৷ থানায় অভিযোগ জানান৷ অভিযুক্ত ধরা পড়েছে৷’
জলপাইগুড়ি কোর্টে পেশ করা হয় অভিযুক্তকে৷ শনিবার৷ নিজস্ব চিত্র৷