আগরপাড়া: ধরা পড়ল তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তের (TMC Councillor Murder) খুনী৷ রবিবার রাতে আগরপাড়া রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় পানিহাটি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে (TMC Councillor Anupam Dutta) গুলি করে খুন করা হয়৷ তার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই শম্ভুনাথ পন্ডিত ওরফে অমিত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে খড়দা থানার পুলিস (Khardah PS)৷ ধৃতের বাড়ি নদিয়ার হরিণঘাটা এলাকায়৷ থানার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের উদ্দেশ্যেই শম্ভুকে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছিল৷ তার সঙ্গে আরও তিনজন দুষ্কৃতী ছিল৷ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি সঙ্গীদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিস৷ কার হয়ে শম্ভু তৃণমূল নেতাকে খুন করেছে, তার নাম জানার চেষ্টাও করছেন থানার আধিকারিকরা৷
গতকাল হরিসভায় মিটিং করে বাড়ি ফিরেছিলেন অনুপম দত্ত৷ এরপর প্রতিদিনের অভ্যেস মতো সন্ধেয় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি৷ তারপরই গুলিবিদ্ধ হন৷ অনুপম দত্ত মাথায় ও কাঁধে গুরুতর চোট পান৷ তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে বেলঘড়িয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়৷ তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যুতে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়৷
এদিকে রাতে ওই কাণ্ডটি ঘটিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় শম্ভু৷ তবে বেশিদূর যেতে পারেনি৷ কিছুটা দূরে হোগলা বনে লুকিয়েছিল সে৷ এলাকার মানুষ শম্ভুকে ধরার জন্য হোগলা বনে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ ভয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে সে৷ এরপরই শম্ভুকে ধরে ফেলে উত্তম-মধ্যম পেটায় স্থানীয়রা৷ ততক্ষণে খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷ শম্ভুকে থানায় তুলে নিয়ে যায়৷ যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরকে গুলি করা হয়েছিল সেটিও অভিযুক্তের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করে পুলিস৷
নদিয়ার হরিণঘাটা থানার মোল্লাবেলিয়া মনসাতলার বাসিন্দা শম্ভুনাথ৷ কিন্তু এলাকার মানুষ তাকে অমিত নামে চেনে। পেশায় গাড়ির চালক। এর আগেও গত বছর ২৪ ডিসেম্বর এক পরিচিত বন্ধুকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে শম্ভুর বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই সে পলাতক ছিল। দিদিদের সঙ্গে থাকত কাউন্সিলর খুনে অভিযুক্ত। তবে বেশ কিছুদিন সে বাড়িতে আসেনি এমনটাই দাবি পরিবারের। অমিত মাঝে মাঝে গান-বাজনা করত। এলাকার ছেলে এই ঘটনায় জড়িত জানতে পেরে হতবাক পাড়া-প্রতিবেশী লোকজন।
আরও পড়ুন: Panihati Tmc Councillor died: পানিহাটিতে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যু
অনুপম দত্তের মৃত্যুর পর তৃণমূল নেতা পার্থ ভৌমিক জানান, একশো শতাংশ পরিকল্পিত খুন৷ বাইকে চেপে তিন দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে বলে জানতে পেরেছি৷ কিন্তু কী কারণে, কে বা কারা গুলি চালিয়েছে সে বিষয়ে জানি না৷ কী বলব বুঝে উঠতে পারছি না৷ পুলিস গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখছে৷ পুলিসকে জানিয়েছি৷ প্রশাসনের উপর বিশ্বাস-ভরসা আছে৷ কে বা কারা ঘটিয়েছে তা বলা সম্ভব নয়৷ তবে, অনুপম এলাকার বিজেপির বড় মাথাকে হারিয়ে ছিলেন৷