নয়াদিল্লি: সংসদে বাজেট অধিবেশনের আগে ফের ‘পেগাসাস’ বোমা ফাটিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছে
নিউ ইয়র্ক টাইমস। এই ইস্যুতে বিরোধীদের চাপের মুখে দুই সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ দাবি করেন (Cyber experts), ফোনে আড়িপাততে (Pegasus use on phones) ম্যালওয়্যার যে ব্যবহার হয়েছে, তার যথেষ্ট প্রমাণ তাঁদের কাছে রয়েছে। পেগাসাস স্পাইওয়্যার (Pegasus spyware) নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি ইতিমধ্যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। সেই তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হয়ে তাঁরা নিজেদের পর্যবেক্ষণও জানিয়ে এসেছেন।
পেগাসাস বিতর্কে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আবেদনকারীদের মধ্য থেকেই কয়েক জন নিজস্ব
উদ্যোগে সাইবার নিরাপত্তা গবেষকদের দ্বারস্থ হন। স্পাইওয়্যারে ফোনে আড়িপাতা হয়েছে কি না, সেই সন্দেহ দূর করতেই
তাঁরা সাইবার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করান। কয়েক জন পিটিশনারের ডিভাইসের ফরেন্সিক অ্যানালিসিস করে সাইবার
নিরাপত্তা গবেষকরা নিঃসংশয়াতীত ভাবে জানান, ম্যালওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্যানেল কমিটির কাছে তাঁরা
এই সংক্রান্ত কিছু তথ্যও দিয়েছেন।
मोदी सरकार ने हमारे लोकतंत्र की प्राथमिक संस्थाओं, राज नेताओं व जनता की जासूसी करने के लिए पेगासस ख़रीदा था। फ़ोन टैप करके सत्ता पक्ष, विपक्ष, सेना, न्यायपालिका सब को निशाना बनाया है। ये देशद्रोह है।
मोदी सरकार ने देशद्रोह किया है। pic.twitter.com/OnZI9KU1gp
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) January 29, 2022
দুই সাইবার বিশেষজ্ঞের একজন জানিয়েছেন, তিনি সাত জনের আইফোন পরীক্ষা করে পেগাসাস ম্যালওয়্যারের প্রমাণ পেয়েছেন।
এই দুই সাইবার বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের প্যানেল শুধু নয়, শীর্ষ আদালতেও এ বিষয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষণ হলফনামা আকারে
জমা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Pegasus Controversy: কংগ্রেসের পর পেগাসাস নিয়ে এবার স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস তৃণমূলের
দুটো ফোনের ডেটা ফরেন্সিক যন্ত্রে কাটাছেঁড়া করে তাঁরা দেখেছেন, একটিতে পেগাসাস ম্যালওয়্যারে আড়িপাতা হয়েছিল ২০১৮
সালে। অন্য ফোনটিতে একবার নয়, ২০২১-এর জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে একাধিক বার আড়িপাতা হয়েছিল।
আর এক সাইবার বিশেষজ্ঞ পিটিশনারদের অ্যানড্রেয়েড ফোনগুলি পরীক্ষা করেন। ৬জন পিটিশনারের ফোনে তিনি পরীক্ষা
করেছেন। তার মধ্যে চার জনের ফোনে বিতর্কিত ম্যালওয়্যারের স্বতন্ত্র সংস্করণের খোঁজ পেয়েছেন। বাকি দুটো ফোনে মেলে
অরিজিন্যাল ভার্সন। এই প্রথম সাইবার বিশেষজ্ঞরা হলফনামা দিয়ে ম্যালওয়্যারে ফোনে আড়িপাতার কথা জানালেন।
পেগাসাস নিয়ে তদন্তে গত বছরের ২৭ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দেয়। এই কমিটির নেতৃত্বে
রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রন। তিন সদস্যের পৃথক একটি টেকনিক্যাল কমিটিও গড়া হয়।
ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির ডিন ড. নবীন কুমার চৌধুরি ছাড়াও রয়েছেন কেরালার অমৃত বিশ্ব বিদ্যাপীঠমের
অধ্যাপক ড. প্রবর্ধন পি এবং মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. অশ্বিন অনিল
গুমস্তে।
২ জানুয়ারি এই কমিটি বিজ্ঞাপন দিয়ে জানায়, যাঁরা মনে করছেন তাঁদের ফোন স্পাইওয়্যারে সংক্রমিত, ৭ জানুয়ারি বেলা
১২টার মধ্যে যোগাযোগ করুন। ডিভাইসটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য হস্তান্তর করতেও বলা হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর
ডিভাইসটি আবার ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন উত্তাল হয়েছিল। বাজেট অধিবেশনের আগেও পেগাসাস ইস্যুতে বিড়ম্বনায় কেন্দ্র। নরেন্দ্র মোদি সরকার ফোনে আড়িপাতার কথা কখনোই স্বীকার করেনি। পেগাসাস বিতর্কের জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এর মধ্যেই হাটে হাঁড়ি ভাঙে নিউ ইয়র্ক টাইমস। দাবি করা হয়, ২০১৭ সালে ভারত এই ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার কেনে। ইসরায়েলের কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে ২০০ কোটির টাকার চুক্তি করেছিল ভারত। সেই চুক্তির মধ্যেই ছিল পেগাসাস স্পাইওয়্যার।