ভারতে নদীকে (River) দেবী ও মাতৃরূপে পুজো করা হয়। প্রাচীন কাল থেকেই নদীর ধারেকাছে শহর, নগর গড়ে উঠতে শুরু করেছে। ভারতের (India) মতো দেশে ছোটবড় মিলিয়ে মোট ২০০টি নদী রয়েছে। এঁদের মধ্যে গঙ্গা, যমুনা, কাবেরী, ব্রহ্মপুত্র, নর্মদা, শতদ্রু, ভাগিরথী পরিচিত। কিন্তু ভারতে এই পবিত্র নদীর পাশাপাশি এদেশে এমন একটি নদীও আছে যেখান থেকে মানুষ সবসময় দূরে থাকতে চায়। কোনও প্রাণীও এই জলে বাস করে না! বলা হয়, এই অভিশপ্ত নদীর জল স্পর্শ করলে জীবনে সমস্যা ঘিরে ধরতে পারে।
অভিশপ্ত এই নদীর নাম কর্মনাশা। এটি উত্তর প্রদেশ ও বিহারে প্রবাহিত হয়। এর নাম অনুসারে, এই নদী আপনার কর্মকে ধ্বংস করে। উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র, চন্দৌলি, বারাণসী এবং গাজিপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটি বক্সারের পৌঁছে গঙ্গায় মিলিত হয়েছে। কিন্তু দুই রাজ্যের মানুষ এই নদীর জল ব্যবহার করতে ভয় পায়। শুভ কাজ করতে গেলে এই নদীর পাড় দিয়েও কেউ যায় না।
কেন এই নদী অভিশপ্ত?
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, একবার রাজা হরিশচন্দ্রের পিতা সত্যব্রত তাঁর গুরু বশিষ্ঠের কাছে দেহ নিয়ে স্বর্গে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। গুরু তার ইচ্ছা পূরণ করতে অস্বীকার করেন এবং তারপর রাজা সত্যব্রত গুরু বিশ্বামিত্রকে অনুরোধ করেন। বশিষ্ঠের সঙ্গে বিশ্বামিত্রের শত্রুতা ছিল, এই কারণে তিনি সত্যব্রতকে তাঁর তপস্যার জোরে তাঁকে স্বর্গে পাঠিয়েছিলেন। এই দেখে ইন্দ্রদেব রেগে গেলেন এবং রাজার মস্তক মাটিতে ভূলুন্ঠিত।
আরও পড়ুন:Shibpur | Teaser | গ্যাংস অফ ‘শিবপুর’
এর পর বিশ্বামিত্র তাঁর তপস্যায় রাজাকে স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে থামিয়ে দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। রাজা সত্যব্রত আকাশে উল্টো ছিলেন। যে কারণে তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরতে থাকে। মনে করা হয় সেই মুখ নিঃসৃত কারণে নদীটি তৈরি হয়েছিল। তখন গুরু বশিষ্ঠ রাজা সত্যব্রতকে চন্ডাল হওয়ার অভিশাপ দেন। রাজার লালা নদীতে পরিণত হওয়ায় এবং অভিশাপ পেয়ে এই নদীও অভিশপ্ত হয়েছে বলে এখন মানুষ বিশ্বাস করে।