করোনা মহামারী নিজের প্রভাব বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গেই বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এই মহামারীকে রোখার জন্য টিকা। যে দিন থেকে বিশ্বে করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে, তার থেকে জনসাধারণকে বাঁচাতে দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে , বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছিল টিকা নিয়ে গবেষণা। পিছিয়ে ছিল না ভারতও। দেশের একাধিক সংস্থা নিজেরাই, আবার কিছু দেশীয় সংস্থা বিদেশী কোম্পানির সঙ্গে যৌথ ভাবে তৈরি করেছে টিকা। কারণ এই করোনা সংক্রমণের গতি রোধ করতে গেলে প্রয়োজন ছিল দ্রুত টিকাকরণের। সেই মত বেশ কিছু দেশ তৈরি করে ফেলে টিকা।
দেশ বিদেশের তৈরি এই সব টিকার মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে স্পুটনিক ভি, ফাইজার, কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিন। এর মধ্যে ভারতে তৈরি দুই ভ্যাকসিন হল সেরামের তৈরি কোভিশিল্ড এবগ ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এই দুই ভ্যাক্সিনকে মান্যতা দিলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয় করোনার টিকাকরণ। সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ভারতের ৬টি শহরের ওপর একটি সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষার বিষয়বস্তু ছিল এখনও পর্যন্ত এই ৬টি শহরে কোথায় কত পরিমাণ টিকাকরণ হয়েছে এবং কত শতাংশ মানুষ প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে।
আরও পড়ুন : কেন্দ্র দিচ্ছে না, কলকাতায় বন্ধ কোভ্যাক্সিনের টিকা
সমীক্ষায় দেখা গেছে, কলকাতায় প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৬১.৮% মানুষ। সেই তুলনায় দ্বিতীয় ডোজের পরিমাণ কম, মাত্র ২১% মানুষ পেয়েছেন দ্বিতীয় ডোজ। এর পরের স্থানেই আছে ব্যাঙ্গালুরু। সেখানে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫৭.৮% এবং টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন মাত্র ১৪%। হায়দরাবাদের ৫৩.৭% মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছেন এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১৩.৪% মানুষ। চেন্নাইতে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫১.৬ % মানুষ এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১৭.৯ % মানুষ। মুম্বইতে এই সংখ্যাটা আরও কম। সেখানে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫১.১ % মানুষ এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ১৫.৭ শতাংশ মানুষ। সবথেকে কম টিকাকরণ হয়েছে দিল্লিতে। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, রাজধানীতে এখনও পর্যন্ত প্রথম ডোজ পেয়েছেন মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩৫.১ % মানুষ এবং দ্বিতীয় ডোজ সম্পূর্ণ হয়েছে ১১.১ % মানুষের।
আরও পড়ুন : প্রতারণার তথ্য ছিল না, ভ্যাকসিন কাণ্ডে বললেন ফিরহাদ
এই সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে আজ শুক্রবার কলকাতা পুরসভায় একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, রাজ্য যদি সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন পেত, তাহলে এত দিনে ১০০ % মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হত এবং কলকাতাবাসীর প্রায় প্রত্যেকেরই করোনার প্রথম ডোজ নেওয়া হয়ে যেত।