কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ‘শিব ঠাকুরের আপনদেশে, আইনকানুন সর্বনেশে’। শিব ঠাকুরের দেশে না হোক, কিম জং উনের(Kim Jong Un) দেশের আইন কানুন সত্যিই সর্বনেশে। সে দেশে কিমের কথাই শেষ কথা। উত্তর কোরিয়ার(North Korea) একনায়কতন্ত্রী শাসক কিম হাসতে বললে দেশের মানুষ হাসবে, কাঁদতে বললে কাঁদবে। অন্যথা করেছ কী মরেছ। প্যায়দা এসে কাকে কখন আঁকড়ে ধরবে কেউ জানে না। কিমের পেয়াদা তো আঁকড়ে ধরবে না, একেবারে মেরেই ফেলবে।
এবার দেশের মানুষের টানা ১০ দিন হাসতে বারণ। শুধু হাসা যাবে না তাই নয়, এই কদিন বন্ধ মদ্যপান। বন্ধ দোকানবাজার করা, বন্ধ কোনও পার্টিতে যাওয়া। সে জন্মদিনের পার্টি হোক বা শ্রাদ্ধের আসরই হোক। উপলক্ষটাও বিচিত্র। কিমের বাবা, উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন শাসক কিম জং ইল-এর দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের জন্য ছেলের এই বিচিত্র নিষেধাজ্ঞা। সরকারের ফতোয়া দিয়ে জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কড়া শাস্তি পেতে হবে দেশবাসীকে। ভুক্তভোগীরা জানেন, সে শাস্তি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। সবমিলিয়ে এই ১০ দিন হাসি আনন্দ বন্ধ করে গোমড়া মুখে ‘রামগরুড়ের ছানা’ হয়ে থাকতে হবে দেশের মানুষকে।
উত্তর কোরিয়ায় কিম মানেই বিতর্ক। তাঁর সব নির্দেশই বড়ই বিচিত্র। বছর কয়েক আগে তিনি ফতোয়া জারি করলেন, তাঁর চুলের স্টাইল একান্তই তাঁর নিজস্ব। আর কেউ তা নকল করতে পারবে না। তার মতো চুলের স্টাইল দেখলে পেতে হবে শাস্তি। কিমের দেশে মেয়েদের নাক ফোটানো নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ অবিবাহিত মেয়েদের লম্বা চুল রাখাও।
কিমের জারি করা ফতোয়ার আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্প্রতি সামনে এসেছে। আন্তর্জাতিক এক মানবাধিকার রক্ষা সংগঠনের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অন্তত ৭ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন কিম জং উন। কী ছিল সেই অপরাধ? জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত র্যাপ ‘কে-পপ’ শুনেছিলেন ওই ৭ জন। কিমের সাম্রাজ্যে ওই র্যাপ নিষিদ্ধ। তবুও লুকিয়ে চুরিয়ে সেই র্যাপ শোনার অপরাধেই এই শাস্তি। শুধু তাই নয়, পরিবারের সদস্যদের প্রিয়জনের সেই মৃত্যুদৃশ্য দেখতে বাধ্য করা হয়েছিল কিমের দেশে। কিম তাঁর নিজের কাকাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। এক সেনাকর্তাকেও তিনি নিজে ফাঁসিতে লটকেছিলেন বলে শোনা যায়।
এরকম কত কীর্তিই যে আছে কিমের, তা বলার নয়। তবে তাঁর কীর্তির কথা কতটাই বা বাইরে আসে? তবু ফাঁকফোকর দিয়ে যেটুকু প্রকাশ্যে আসে তাও হাড়হিম করা সব ঘটনা।