কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ত্রিশঙ্কু ঝালদা (Jhalda) পুরবোর্ড দখল করতেই কি কংগ্রেস কাউন্সিলর (Jhalda Congress Councillor Murder) খুন ? এই প্রশ্নই এখন লোকের মুখে ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে এলাকায়। পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী কংগ্রেস প্রার্থী তপন কান্দুকে কেন খুন করা হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দোষারোপের পালা। এই ঘটনায় পুলিস দুজনকে আটক করেছে। তাঁদের একজন নিহত তপন কান্দুর ভাই তথা এলাকার তৃণমূল কর্মী নরেন কান্দু। অন্যজন হল সদ্য সমাপ্ত পুরভোটে তপন কান্দুর কাছে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী নরেন কান্দুর ছেলে দীপক কান্দু। দু-নম্বর ওয়ার্ডেই ভোটে মুখোমুখি লড়াই হয়েছিল জেঠা- ভাইপোর। কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় দুই আত্মীয় তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও আটক নরেন কান্দুর স্ত্রী ববি কান্দুর দাবি তাঁদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক।
ঝালদা পুরসভায় মোট আসন ১২। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয় ৫টি তে, কংগ্রেস যেতে ৫টি তে। নির্দলরা পায় ২টি। সেই হিসেবে এখনও বোর্ড গঠনের অবস্থায় নেই তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস কাউন্সিলরের মৃত্যুতে একটি ওয়ার্ড শূন্য হল। দুই নির্দলের মধ্যে আরেকজন তৃণমূলকে সমর্থন জানিয়েছেন। ফল প্রকাশের কিছুক্ষণ পরেই তিন নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী শীলা চট্টোপাধ্যায় বাঘমুণ্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তা হলেও তৃণমূলের পক্ষে রইল ৬ জন। অর্থাৎ, গরিষ্ঠতা অর্জনে ম্যাজিক ফিগারের থেকে একজন কম তৃণমূলের দিকে। তপন কান্দুর মৃত্যুতে কংগ্রেসের জেতা ওয়ার্ড সংখ্যা দাঁড়াল ৪ এ। সেই কারণেই পুরবোর্ড দখলের তত্ত্বটি সামনে উঠে এসেছে।
যদিও এই তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল ঝালদা শহর সভাপতি দেবাশিস সেন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরাও চাই পুলিস প্রকৃত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করুক। তদন্তের স্বার্থে পুলিস যেকোনও ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তারা তাঁদের কাজ করছে। আমাদের কিছু বলার নেই। তবে তিনি বোর্ড গঠনের সঙ্গে এই খুনের ঘটনা যুক্ত বলে দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তৃণমূল বোর্ড গঠন করার জায়গায় রয়েছে। অবশ্য তৃণমূলের দাবি নস্যাৎ করে কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, এক জয়ী কাউন্সিলরকে খুন করে অনৈতিকভাবে বোর্ড দখলের চেষ্টা করছে শাসকদল। পুলিস যাদের আটক করেছে তারা তৃনমূলেরই কর্মী ও ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে কারা এই খুনের নেপথ্যে রয়েছে তা দিনের আলোর মতই পরিষ্কার। এই ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ আনতে ঝালদা যাচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো।
কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমও তীব্র নিন্দা করেছেন দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এলাকাটি এক সময় মাওবাদীদের দাপটে ছিল। এই সব এলাকায় ঝাড়খণ্ড থেকে ভাড়াটে খুনিরা এসে খুন করে দিয়ে চলে যায়। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা পুলিসকে দেখতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন Russia-Ukraine war: চীনের থেকে সামরিক সাহায্য চেয়ে পাঠাল রাশিয়া, দাবি মার্কিন মিডিয়ার