সিউড়ি: দেউচা পাচামিতে (Deocha Pachami) প্রস্তাবিত কয়লা খনির (Coal Block) ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজ্যের প্রতিনিধি দল৷ আদিবাসীরা ওই প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন, তাঁরা কেউ এই প্রকল্পের বিরোধী নয়৷ কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন প্যাকেজে কিছু ক্রুটি রয়েছে৷ সেই ভুল-ক্রুটি সংশোধন করে তবেই জমি অধিগ্রহণের (Land Acquisition) কাজ শুরু হোক৷
বীরভূমের মহম্মদবাজারের দেউচা-পাচামি, দেওয়ানগঞ্জ-হরিনসিংগাতে কয়লা খনি তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রাজ্য৷ ওখানে কয়লা খনি গড়ে উঠলে সেটাই হবে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি৷ রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান হবে৷ আনুষঙ্গীক শিল্প গড়ে উঠবে৷ প্রচুর মানুষ উপকৃত হবেন৷ এদিকে, কয়লা খনির তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন৷ তবে সিঙ্গুরের মত জমি অধিগ্রহণ হবে না বলে আগেই জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জমিদাতাদের সব স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ তৈরি এবং ঘোষণা করে সরকার৷ সেখানে জমিদাতা থেকে বাস্তুচ্যুতরা- কে কতটা জমির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ কী কী পাবে সব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ যদিও প্যাকেজের কিছু কিছু ঘোষণা আদিবাসী কয়েক জনের মনঃপুত হয়নি বলে জানা যায়৷
যেমন, প্যাকেজে বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমির জন্য এত পরিমাণ টাকা পাওয়া যাবে৷ আদিবাসীদের বক্তব্য, যে পরিমাণ টাকা দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে অন্য জায়গা কিনতে গেলে বেশি পরিমাণ টাকা লাগবে৷ আবার পরিবারের কোন সদস্য চাকরি পাবে সেটাও ঠিক করে বলা নেই৷ টিউবওয়েলের জন্য পাঁচ হাজার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে৷ যা নিতান্তই কম৷ তাই ঘোষণার পর প্যাকেজকে ঘিরে জমিদাতাদের মধ্যে খানিকটা অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছিল৷ কিন্তু প্রশাসন চায় আলোচনার ভিত্তিতে প্যাকেজ নিয়ে সহমতে পৌঁছে তার পর জমি অধিগ্রহণে এগোতে৷ সে জন্য রাজ্য সরকার ন’জনকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে৷ ওই কমিটির সদস্যরা রবিবার প্রকল্প এলাকায় যান৷ সেখানে গিয়ে তাঁরা কথা বলেন আদিবাসীদের সঙ্গে৷ তার পর তাঁরা বৈঠক করেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের সঙ্গেও৷
আরও পড়ুন: বিজেপি নেতাকে দেখেই গো-ব্যাক স্লোগান, দেউচা-পাঁচামির বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে রাজু ব্যানার্জি
পরিদর্শনের পর এই কমিটির সদস্য তন্ময় ঘোষ জানান, তাঁরা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে পুরো বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করেন৷ আদিবাসীদের কথা প্রশাসনের সর্বোচ্চস্তরে তাঁরা পৌঁছে দেবেন বলে আশ্বাস দেন৷ তন্ময়বাবুর দাবি, অধিকাংশ মানুষের মনোভাব প্রকল্পের পক্ষে। তবে কেউ কেউ কিছু দাবি-দাওয়ার কথা জানান৷ এর পরই সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরে বিধান রায়ের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটির সদস্যরা৷