কলকাতা: ভারত (India) নদীমাতৃক দেশ। এই দেশের বুক চিরে অজস্র নদী (River) বয়ে গিয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, ভারতের অনেক নদীকে পবিত্র হিসাবে গণ্য করা হয়। কিছু নদীকে পুজো করা হয় দেবী রূপে। যেমন, আমরা গঙ্গা থেকে সরস্বতী প্রত্যেক নদীকেই দেবী রূপে পুজো করি। কিন্তু, নদীকে দেবরূপে পূজিত হয়ার কথা কখনও শুনেছেন ? আজ্ঞে হ্যাঁ আমাদের দেশে একটি নদী রয়েছে যাকে পুরুষ নদী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। নদীটির নাম হল ব্রহ্মপুত্র। তবে নদী নয়, এটি নদ নামেই বিখ্যাত। এই নদীকেই ভারতবর্ষের একমাত্র পুরুষ নদী বলা হয়। কেন এটিকে একমাত্র পুরুষ নদী বলা হয়? এর রহস্যই বা কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
ভারতের একমাত্র ‘পুরুষ নদী’ যেটি ব্রহ্মপুত্র নদ নামে পরিচিত। ব্রহ্মপুত্রকে বলা হয় ভগবান ব্রহ্মার পুত্র। হিন্দু ধর্ম ছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদীকে জৈন ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্মের অনুগামীরাও পবিত্র মনে করেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস যে, ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে চ্যাং থাং মালভূমির এক বিশাল হ্রদ থেকে হয়েছে। অন্যদিকে সনাতন ধর্মের লোকেরা বিশ্বাস করেন যে, ব্রহ্মপুত্র নদ ব্রহ্মা এবং অমোঘ ঋষির পুত্র, এই কারণেই এই নদীর গুরুত্ব হিন্দুধর্মে অত্যন্ত বেশি।
আরও পড়ুন:Health | Tea | চা খেয়েই তবে কমিয়ে ফেলুন ওজন, জানুন কীভাবে
ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে হিমালয়ের উত্তরে তিব্বতের পুরং জেলার মানসরোবর হ্রদের কাছ থেকে। নদীটি যে শুধু ভারতের কিছু জায়গাতেই সীমাবদ্ধ তা নয়, অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে প্রবেশের পর নদীটি অসম উপত্যকায় প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বৌদ্ধ ধর্ম মতে, একটা সময় এই নদীটি অত্যন্ত বিশাল হ্রদ ছিল। কিন্তু করুণাময় বোধিসত্ত্ব মনে করেছিলেন যে, এই হ্রদের জলও হিমালয়ের পাদদেশে পৌঁছানো উচিত। যাতে মানুষের জলের চাহিদাও পূরণ করা যায়। তাই এই হ্রদ থেকে জল নিষ্কাশনের জন্য একটি চ্যানেল তৈরি করা হয়েছিল, এবং এর ফলেই নদীর জন্ম হয়। এবং এইভাবে ক্রমশ এটি ব্রহ্মপুত্র নদ নামে জনপ্রিয় হয়। ব্রহ্মপুত্র নদ ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। ভারতে এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭০০ কিলোমিটার।
তবে, পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, পুষ্করে ব্রহ্মা মন্দির দর্শনের পরে, ভক্তদের ব্রহ্মপুত্র নদীতে স্নান করা উচিত। এতে ব্যক্তির উপকার হয়। এতে ব্রহ্ম দোষ হয় না এবং শারীরিক রোগও দূর হয়।