আগরতলা: বিধানসভা ভোটের ঠিক আট মাস আগে ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন বিপ্লবকুমার দেব৷ শনিবার তিনি ইস্তফা দেন৷ তাঁর পদত্যাগকে সরকারের ব্যর্থতা বলে মনে করছে ত্রিপুরা সিপিএম৷ জানিয়েছে, ব্যর্থতার কারণেই মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন এটা প্রমাণিত হল৷
বিপ্লব দেবের পদত্যাগে রাজ্যের মানুষ খুশি বলে মন্তব্য ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পবিত্র করের৷ তিনি জানান, বিজেপি কী করবে সেটা তারা ঠিক করবে৷ এটা তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার৷ কিন্তু এটা প্রমাণিত হল ১৯৭৮-এর পর থেকে বামপন্থীরা ছাড়া কেউ পূর্ণ সময়ের সরকার দিতে পারেনি৷ তাঁর মতে, বিপ্লব দেবের সরকার মানুষকে সুশাসন দিতে ব্যর্থ৷ তিনি বলেন, ‘মানুষের কোনও কাজ নেই৷ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই৷ নারীদের নিরাপত্তা নেই৷ গাঁজা-ফেন্সিডিল পাচারের করিডর হয়ে গিয়েছে ত্রিপুরা৷ এই সমস্ত কারণে মানুষের আস্থা হারিয়েছে বিজেপি৷ তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে পাঠায় এবং পদত্যাগ করতে বলে৷’
একই বক্তব্য তৃণমূলের৷ ত্রিপুরায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিপ্লবের আমলে ত্রিপুরায় কী অবস্থা তা মানুষ বুঝতে পেরেছেন৷ উনার জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে৷ রাজ্যে শিক্ষা নেই৷ আইনের শাসন নেই৷ দলেও জনপ্রিয়তা হারিয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে বিপ্লবকে সরিয়ে বিজেপি নিজেদের মুখ বাঁচানোর চেষ্টা করছে৷’ বিপ্লবের পদত্যাগ বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের ফসল বলেই মনে করে তৃণমূল৷
এটা ঠিক মেয়াদ শেষের মাত্র ১০ মাস আগে ইস্তফা দিয়ে জল্পনা তৈরি করেছেন বিপ্লব দেব৷ যদিও তিনি জানিয়েছেন, আগে দল, তারপর সরকার৷ দল থাকলে তবে সরকার গঠন করা যাবে৷ তাই বিধানসভা ভোটের আগে দলের সংগঠনে জোর দিতে চান৷ কিন্তু সে কাজটা তিনি ত্রিপুরার মতো ছোট একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে থেকেও করতে পারতেন৷ ত্রিপুরার থেকেও আয়তনে বড় অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পদে থেকে সংগঠন সামলেছেন এবং দলকে নির্বাচনে জিতিয়েছেন৷ তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাহলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর কাজে খুশি নয় বলেই সরে দাঁড়াতে হল বিপ্লবকে? উঠছে প্রশ্ন৷