কলকাতা: বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগদান নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে লোভী বাবুল। সেই কারণেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, তৃণমূলের সঙ্গে ‘ঝালমুড়ি রফা’ হয়েছে বাবুলের। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকবছর আগে ২০১৫ সালে নজরুল মঞ্চ থেকে একই গাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফিরছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। সেই সময় কেন্দ্রের নগরান্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কেন্দ্র সরকারের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাবুল। গাড়িতে ফেরার সময় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন বাবুল। শুধু তাই নয় সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশংসার সুরও শোনা গিয়েছিল বাবুলের গলাতে। আর সেই ঘটনায় ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় রাজ্য রাজনীতিতে। মমতা-বাবুলের এই সৌহার্দ যা ‘ঝালমুড়ি কূটনীতি’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে রাজনৈতিকমহলে।
ঝালমুড়ি কাণ্ডে সেই সময় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিতে পিছুপা হয়নি বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যে তদকালীন বিজেপি পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিং থেকে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় কটাক্ষ করেছিলেন বাবুলকে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করলেও রাজ্যের বিজেপি কর্মীদের দুর্দশার কথা মনে রাখা উচিত বাবুলের। এই ভাষাতেই কটাক্ষ করেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: দিদির সঙ্গে দেখা করেই সাংসদ পদ ছাড়বেন আসানসোলের বাবুল
পিঠ বাঁচাতে সেদিন ঝালমুড়ি-কূটনীতি স্রেফ ‘সৌজন্য’ এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও লাভ হবে না বলে দাবি করেছিল রাজ্য বিজেপি।
তারপর পেরিয়ে গেছে প্রায় ৬ বছর। ২০২১ বিপুল ভোটে জিতে নবান্নে ফের পা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে বিজেপি ছেড়ে একাধিক নেতা ভিড় জমিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। শুক্রবার তার সর্বশেষ সংযোজন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
আরও পড়ুন: পদ্ম ছেড়ে দেড় মাসেই চুপচাপ ফুলে ছাপ বাবুলের
গত জুলাই থেকেই রাজনীতি থেকে ইস্তফা দেওয়া নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বাবুল। সেই থেকেই শুরু হয় জল্পনা। বাবুলের মান ভাঙাতে আসরে নামেন জেপি নাড্ডাও। কিন্তু সাত বছর মন্ত্রীত্বে থাকার পর সাম্প্রতিক মোদি ক্যাবিনেটের রদবদলে ঠাঁই পাননি আসানসোলের সাংসদ। তারপর থেকেই তাঁর দলবদল নিয়ে জল্পনা আরও ঘনীভুত হয়। ‘ঝালমুড়ির স্বাদ’ ফিরে পেতেই কি তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হলেন তিনি? অনুপমের ‘ঝালমুড়ি রফা’ ইঙ্গিতে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিকমহলে।