নয়াদিল্লি: তৃণমূল কর্মীদের উপর ত্রিপুরা পুলিশ নৃশংস অত্যাচার করছে৷ মারধর করে কারও মাথা ফাটিয়ে রক্ত বের করে দিচ্ছে তো কাউকে স্লোগান দেওয়ার জন্য থানায় নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করছে৷ তাই বিপ্লব দেব সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে সোমবার সকালে দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূল সাংসদরা৷ কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি৷ অমিত শাহ সময় না দেওয়ায় শেষমেশ নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিসের সামনেই ধরনায় বসে পড়েন তৃণমূল সাংসদরা৷ এমন হাই সিকিউরিটি জোনে সাংসদরা ধরনায় বসে পড়ায় ছুটে যান পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা৷ তৃণমূল সাংসদদের বুঝিয়ে তাঁদের ধরনা তোলার আবেদন জানান৷ কিন্তু অমিত শাহের সঙ্গে দেখা না করে সেখান থেকে কেউ নড়বেন না বলে জানিয়ে দেন তৃণমূল সাংসদরা৷
আরও পড়ুন: ‘অনুমতি দিলেও পথসভা করব না’, আগরতলা পৌঁছেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিজেপিকে তুলোধনা অভিষেকের
সায়নী ঘোষের গ্রেফতার এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা বাতিলের পরই এই ইস্যু দু’টিকে জাতীয় স্তরে তুলে ধরতে দলের সাংসদদের নির্দেশ দেন তৃণমূল নেত্রী৷ তার পরই রবিবার রাতে দিল্লি পৌঁছন ১৫-১৬ জন সাংসদ৷ আজ সকালে ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইট করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার সময় চান৷ কিন্তু অমিত শাহ সময় দেননি৷ তৃণমূল সাংসদরা চেয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে৷ সেটা না হওয়ায় নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বাইরে ধরনায় বসে পড়েন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দোলা সেন, সুখেন্দু শেখর চৌধুরী, অপরূপা পোদ্দার, ডেরেক ও ব্রায়েন এবং সৌগত রায়রা৷ ওখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা তাঁদের ধরনা তুলে নেওয়ার আবেদন করেন৷ সাংসদদের জানান, বিনা অনুমতিতে এখানে বিক্ষোভ দেখানো যায় না৷ কিন্তু তৃণমূল সাংসদরা তাদের দাবিতে অনড় থাকে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করে তাঁরা যাবেন না বলেই জানিয়ে দেন৷
আরও পড়ুন: সায়নীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিজেপির সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ তৃণমূলের
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূলের পাখির চোখ এখন ত্রিপুরা৷ আগামী লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে ‘পূবে চলো’ নীতি নিয়েছে তৃণমূল৷ তাই সেখানে সংগঠন বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল৷ গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন দল ছেড়ে তৃণমূলে কর্মীদের যোগদান বেড়েই চলেছে৷ এমনকী বিজেপি ছেড়ে বিধায়করাও এসেছেন৷ ত্রিপুরায় বিরোধী শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে ঘন ঘন রাজ্য থেকে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা-নেত্রীরা সেখানে গিয়ে সরকারের নানা কাজকর্মের বিরোধিতা করছেন৷ এতে ত্রিপুরায় পায়ের তলার মাটি ক্রমশ শক্ত হচ্ছে তৃণমূলের৷ উত্তর-পূর্বের রাজ্যে ঘাসফুল শিবিরের উত্থানের পরই বারবার রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে বিপ্লব দেবের রাজ্য৷ তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের উত্থানে ভয় পেয়ে বিজেপি আশ্রিত গুন্ডারা দলীয় কর্মীদের উপর নিয়মিত হামলা করছে৷ পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে৷ তাই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করছে৷ বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে মহিলা নেত্রীকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয়৷ বিপ্লব দেবের তৃণমূল ভীতি বোঝাতে দলের এক নেতার কথায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যে ঢুকতে না দিয়ে এখানকার মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিচ্ছেন তারা তৃণমূলের উত্থানে ভীত৷