নয়াদিল্লি: এ যেন উলটপুরাণ৷ পাকিস্তান থেকে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া শতাধিক হিন্দু ফিরে গিয়েছেন প্রতিবেশী দেশে৷ নাগরিকত্ব না পেয়ে ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছেন তাঁরা৷ শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা ‘সীমান্ত লোক সংগঠন’ নামে একটি সংস্থার দাবি, ২০২১ সালে রাজস্থান থেকে অন্তত ৮০০ হিন্দু পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন৷ এজন্য ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার অনলাইন ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করা হয়েছে৷ নাগরিকত্বের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন ওই শরণার্থীরা৷ কিন্তু তাতে কোনও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁরা পাকিস্তান ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷
নাগরিকত্ব পেতে ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অনলাইনে আবেদনের প্রক্রিয়া চালু করে৷ বলা হয়েছিল, সাতটি রাজ্যের ১৬ জন জেলাশাসক ওই আবেদনপত্রগুলি খতিয়ে দেখে তিন প্রতিবেশী দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব প্রদান করবে৷ পরে ২০২১ সালে সরকার আরও পাঁচটি রাজ্যের ১৩ জন জেলাশাসককে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে৷
পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে করা হয়৷ কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট পোর্টালটি গ্রহণ করে না৷ তার জন্য শরণার্থীদের দিল্লির পাক হাইকমিশনে গিয়ে পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণ করাতে হয়৷ এটা খরচসাধ্য ব্যাপার৷ ধরা যাক, ১০ জনের পরিবারের পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণ করতে অন্তত এক লক্ষ টাকা খরচ হবে৷ আর্থিক কষ্টে জর্জরিত শরণার্থীদের পক্ষে অত টাকা খরচ করা মুশকিল৷ সমস্যা আরও আছে৷ বিভিন্ন ডকুমেন্ট জমা করার জন্য শরণার্থীদের সশরীরে জেলাশাসকের কাছে হাজিরা দিতে হয়৷ এত সব ঝক্কি পোহাতে হয় বলে বাধ্য হয়ে ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছেন ওই হিন্দুরা৷
আরও পড়ুন: Sri Lanka Crisis: তীব্র জনরোষ, রাজাপক্ষেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল শ্রীলঙ্কার নৌঘাঁটিতে
শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ধরা পড়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পরিসংখ্যানেও৷ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছিল, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১০ হাজার ৬৩৫টি৷ এর মধ্যে শুধু পাকিস্তানের আবেদনকারীর সংখ্যা ৭ হাজার ৩০৬৷ ‘সীমান্ত লোক সংগঠন’-এর দাবি, শুধু রাজস্থানেই ২৫ হাজার পাকিস্তানি হিন্দু নাগরিকত্ব পাওয়ার অপেক্ষায়৷ কেউ অপেক্ষা করছেন দু’দশক ধরে৷ অনেকেই অফলাইনে আবেদন করেও বসে আছেন৷