Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: টাইপরাইটার, ন্যানো আর অ্যাম্বাসাডর কোনওদিনও ফিরে আসবে না 
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ মে, ২০২২, ০৬:০০:২৪ এম
  • / ৪০১ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

অনেক কিছুই ইতিহাস হয়ে যায়, অনেক কিছুই বিলীন হয়ে যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যায়৷ ইনকা সভ্যতা, মহেঞ্জোদারো সভ্যতা, মেসোপটেমিয়া থেকে রোমান সাম্রাজ্য, যারা এক সময় দাঁড়িয়ে ভাবতেই পারেনি, তারা মুছে যাবে, তারা মুছে গিয়েছে৷ তাদের নিয়ে ভাবারও কেউ নেই। কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধনমান৷ কবেই বলে গিয়েছেন আমাদের ঠাকুর। কোথাও প্রকৃতি, কোথাও আকাল, মারি ও মড়ক, কোথাও যুদ্ধ বিগ্রহ ইত্যাদির ফলে এমনটা হয়েছে, হবেও। কিন্তু একটা সময় সীমার মধ্যে কিছু জিনিস হারিয়ে যায়, অকাজের হয়ে যায়৷ তাদের চাহিদা কমতে কমতে শূন্যতে চলে যায়৷ এমনটা হওয়ার কারণ কিন্তু সেই জিনিস, সেই বস্তুর কার্যকারিতার ওপরেই নির্ভর করে৷ মানে, বলতে চাইছি, দারুণ ভালো, কার্যকরী, সম্পদশালী ইনকা সভ্যতা মুছে গেল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে, হতেই পারে। কিন্তু টাইপ রাইটার? ধর্মতলার মোর থেকে রাইটারস বিল্ডিংয়ের ধার ঘেঁসে রাস্তায়, আলিপুর বা ব্যঙ্কশাল কোর্টে, কলকাতা হাইকোর্টের সেরেস্তাগুলোতে সারি সারি টাইপরাইটার, এই ক’বছর আগেও ছিল৷ আই বেগ টু স্টেট দ্যাট, ঝড়ের বেগে টাইপ করতেন বৃদ্ধ এক মানুষ৷ চোখে ইয়া মোটা কাঁচের চশমা, খোঁচা খোঁচা দাড়ি, আমিও দেখেছি, সত্যজিৎ রায়, জন অরণ্য। কোথায় গেল সেই টাইপ রাইটার? তার খটাখট আওয়াজ? কমপিউটার এলো, সিটিআর এলো সি, সিটি আর এল ভি, কপি পেস্ট, কাজ সোজা, মোছার ঝামেলা নেই, বানান ভুলের সুযোগ নেই, এল এবং ভিনি ভিডি ভিসি, টাইপরাইটার তবুও কিছুদিন লড়লো, তারপর উবে গেল৷ টাইপরাইটার কোম্পানিও বন্ধ হল।

অ্যাম্বাসাডর কার, গাড়ি পাবার জন্য লাইন দিতে হত। পুলিশ, মানে এসপি, ডিএসপি আসত কালো অ্যাম্বাসাডরে৷ ডি এম, সরকারি বড় অফিসার আসতো সাদা অ্যাম্বাসাডরে৷ কী রোয়াব। কারও আবার কালো কাঁচ। সে অ্যাম্বাসাডরের গ্রান্ড মডেলে পাখা থাকত৷ এসি ও এসেছিল, বহু পরে৷ রাস্তায় তাকালে দেখা যেত অ্যাম্বাসাডর আর কয়েকটা প্রিমিয়ার পদ্মিনী, ব্যস। চায়ের দোকানের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল গ্যারাজ, খারাপ হলেই কেল্টো দা, বল্টে দা রা হাজির হত, রেঞ্জ হাতে নিয়ে, অবলীলায় সারিয়ে দিত। এরই মধ্যে মারুতি এলো, তার নানান মডেল এলো, অ্যাম্বাসাডর অ্যাম্বাসাডর হয়েই থেকে গেল৷ তার কোনও পরিবর্তন নেই৷ সে জ্যাঠামশাই এর মতো রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে, সুমো, বোলেরো, ডাস্টার, মারুতির হাজারটা মডেল, ফক্সওয়াগন থেকে ওয়াগনার, স্যান্ট্রো থেকে মাহিন্দ্রা এসে গেল বাজারে৷ তখন রাস্তায় সেই বৃদ্ধ ক্রুদ্ধ হর্ন দিতে দিতে চলেছেন, বিক্রি কমে গিয়েছে, চাহিদা তলানিতে, কিন্তু তিনি আছেন তেনার মতই৷

তারপর একদিন ঝাঁপ পড়ল, বন্ধ হয়ে গেল প্রোডাকশন৷ রাস্তায় যাদের দেখা যায় এখনও, তারা সবাই বাপে খ্যাদানো, মায়ে খ্যাদানো অনাথ বাচ্চাদের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ সময়ের সঙ্গে তাল না মেলাতে পারলে এমটাই তো স্বাভাবিক৷ হয় আপনাকে ধীরে ধীরে পাল্টাতে হবে, নাহলে বিপদ বুঝলে এক ঝটকায়, কিন্তু আপনি যদি পাল্টাতে না চান, তাহলে বিশ্বম্ভর রায়, জলসা ঘরের জমিদার হয়ে যেতে হবে। অন্য সমস্যা ন্যানোর, তার কার্যকারিতাই নেই, সে এক অসমাপ্ত গঠন, তার চাহিদাই তৈরি হল না৷ দু’চাকার খদ্দেররা দু চাকা কিনলো, চার চাকার খদ্দেররা চার চাকা, ধার নিয়েও কিনলো৷ যেটা তাদের ইচ্ছে সেটা, দু চাকার বদলে একটু বেশি টাকা দিয়ে ন্যানো কেউ কিনলো না৷ কেনার কথা ভাবলও না৷ কাজেই যা হবার তাই হলো৷ ফ্যাক্টরি থেকে বেরিয়েই মুখ থুবড়ে পড়লো৷ রবীন দেব ভাঙা গলায় তার ক্যানভাসিং করার পরে আরও বিশ্বাসযোগ্যতা কমে গেল৷ এমনকি নরেন্দ্র মোদির সম্পূর্ণ সাহায্যের পরেও কারখানায় তালা বন্ধ হলো৷ কারণ ভুল সিদ্ধান্ত৷ অমন এক বস্তু কেউ কিনবে না৷ কেনার সঙ্গে অক্ষমতার গন্ধ বহন করার ইচ্ছে কারোর নেই৷ ন্যানো কিনেছো কেন? কারণ দু’চাকার বাজেট ছিল, চার চাকার তো বাজেট ছিল না, তাই ন্যানো।

এই অক্ষমতার কথা কেউ মনে করিয়ে দেয়? টাটাবাবু করিয়েছিলেন, হাতে নাতে ফল ও পেয়েছেন। উপসংহার টা হল, নিজেকে কার্যকরি করে তুলতে হবে, নিজেকে প্রয়োজন মত বদলে নিতে হবে, প্রয়োজন মতো পরিবর্তন দরকার, আবার কোর ভ্যালুও ছাড়া চলবে না, আপনার চাহিদা হতে হবে পজিটিভ। ডাভ নেই, তাই লাক্স নিয়ে যান, এটা চলবে না, ডাভ রাখি কারণ ওটাই বেস্ট, ওটাই নিয়ে যান, এটাই পদ্ধতি। এতগুলো কথা শোনার পরে, আপনারা পরিস্কার বুঝে ফেলেছেন আমি কংগ্রেস দলের কথা বলছি, গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির চিন্তন শিবির যে এক অশ্বডিম্ব প্রসব করেছে, সেটা বুঝতে একদিনও সময় লাগলো না৷ যা যা জানতে পারলাম, তা জানালেন সেই রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা, যিনি গত ১০ বছর ধরে দলের মুখপাত্র, তিনিই জানালেন যে দলের কমিউনিকেশন প্রশেসের নাকি খোল নলচে বদলানো হবে৷ তিনি খোল না নলচে, সেটা অবশ্য জানাননি। জানা গেল চিন্তন শিবিরে সোনিয়া গান্ধী অনেক কথা বলেছেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে, রাহুল গান্ধী আবার সভাপতিত্ব ফিরে পাচ্ছেন। জানা গেল ৫০% নেতৃত্ব পাবেন ৫০ বছরের কম বয়সী নেতারা৷ জানা গেল না শচীন পাইলটের কী হবে! এবং বিজেপির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির স্ট্রাইক রেট ৮, হ্যাঁ মাত্র ৮, সেই দল বললো, বিজেপির বিরুদ্ধে কার্যকরী লড়াই করতে পারে একমাত্র কংগ্রেস৷ তাই কংগ্রেসকে সমর্থন করুন, ভাবা যায়। এবং রাহুল গান্ধী সাফ জানিয়ে দিলেন, আঞ্চলিক দলের তো কোনও আদর্শ নেই, তাই বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস ছাড়া লড়াই করার আর কেই বা আছে?

অতীতের এক কংগ্রেস নেতা নিজলিঙ্গাপ্পার নাম মনে পড়ে গেল৷ কেন? কে জানে? বাংলায় মমতা, ঝাড়খন্ডে হেমন্ত সোরেন, তামিলনাডুর এম কে স্তালিন, অন্ধ্রপ্রদেশের জগন রেড্ডি, তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও এরা সবাই আদর্শহীন, আর মন্দিরে গিয়ে পৈতে বার করে জনেউধারি ব্রাহ্মণ বলে ঘোষণা করা, রাহুল গান্ধী হলেন আদর্শবান৷ দেশের নবরত্ন কোম্পানি বেচে দেওয়ার প্রথম পরিকল্পনা যে দলের মাথা থেকে বের হল, সে কংগ্রেস আদর্শবান? যারা নন অ্যালায়েনমেন্ট, নির্জোট রাজনীতির থেকে বেরিয়ে আমেরিকার সঙ্গে একতরফা পরমাণু চুক্তিতে চলে গেল, তারা আদর্শবান? যে দলের মন্ত্রিসভার সায় নিয়ে তৈরি হল ইউএপিএ নামক দানবীয় আইন, তারা হলেন আদর্শবান৷ আর আঞ্চলিক দলেরা আদর্শহীন৷ তারা নাকি লড়তে পারবেন না বিজেপির সঙ্গে৷ রাহুল গান্ধী বললেন এই কথা৷ কথা বললেই ছড়ান, আবার ছড়ালেন, এটা হারিকিরি বললেও কম বলা হবে৷ দেশের রাজনীতি নিয়ে যারা সামান্য চর্চাও করেন, তাঁরাও জানেন যে আজকের ভারতবর্ষে বিজেপিকে হারানো দুরস্থান, বিজেপিকে একটা লড়াই দিতে গেলেও আঞ্চলিক দল তৃণমূল, আপ, ঝাড়খন্ড পার্টি, ডি এম কে, টি আর এস, ওয়াইএস আর কংগ্রেস, শিবসেনা ইত্যাদিকে প্রয়োজন৷ রাহুল গান্ধী জানেন না, এমনও নয়৷ কিন্তু তিনি ওই অ্যাম্বাসাডর, তিনি ওই টাইপ রাইটার, তিনি ওই ন্যানো, তিনি ওই জলসাঘরের জমিদার বিশ্বম্ভর রায়, যিনি নিজেকে বদলাবেন না৷ নিজেকে রি-ইনভেন্ট করবেন না৷ দলের রিপজিশনিং যাঁর কছে বিবেচ্য নয়, যিনি এখনও মনে করেন, এমনি এমনিই ভারতবর্ষের মানুষ বিজেপির ওপরে রেগে গিয়ে, তাদের ওপরে ভরসা হারিয়ে কংগ্রেসের ওপরেই ভরসা রাখবে৷ তাঁদের আবার মসনদে বসাবেন৷ তিনি তখন কত ভালো ভালো কাজ করবেন, সে সব কথাই কেবল আওড়ে চলেছেন৷

২০২৪ এর আর কতদিন বাকি? কোথা থেকে কটা আসন পাবেন? সব মিলিয়ে ২৪/২৫ টা হবে? উত্তর পূর্বাঞ্চলে শূন্য, অসম বাংলা বিহারে শূন্য, ওডিশায় একটা, যদি তামিলনাড়ুতে জোট হয়, তাহলে ১ টা কি দুটো, কেরালায় খুব ভালো করলে ৩/৪, মহারাষ্ট্র ১ কি ২, ছত্তীশগড় ২, রাজস্থান শূন্যও হতে পারে, সচিন পাইলট আর গেহেলৌতের আকচা আকচিতে পঞ্জাবের মতো হাত ছাড়া হতেই পারে রাজস্থান, এই তো হাল। ২৫ পার হলে বিরাট ব্যাপার হবে, সেই দলের নেতা অবিবেচকের মত সাত সকালে উঠে ন্যায়, নীতি, মূল্যবোধের জ্ঞান দেবেন, এটাও তো মেনে নেওয়া যায় না, আমরা আশা করেছিলাম, চিন্তন শিবিরে কংগ্রেস নেতারা আর কিচ্ছু না হোক, নাই বা পেলেন ভবিষ্যতের দিশা, অন্ততঃ নিজেদের অ্যাসেসমেন্টটা ঠিক করে করবে, এখন দেখা যাচ্ছে সেটাও ঠিক করে হিসেব করেন নি,কংগ্রেস বদলাবে না, কংগ্রেস এখনও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করবে না, স্বাভাবিকভাবেই আমার প্রশ্ন, অ্যামবাসাডর, ন্যানো, টাইপরাইটারের সঙ্গে কি তাহলে কংগ্রেসের নামটাও জুড়ে যাবে?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

দেশ ছাড়লেন ভাইজান, কোথায় গেলেন?
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
বেঙ্গল কেমিক্যালের সামনে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা, আহত ৩
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ ঘরছাড়াদের
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
ভোটের মুখে দল ছাড়লেন মেদিনীপুরের বিজেপির প্রথম সারির নেতা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
ভোটের দিনে বালুরঘাটে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
১২ লক্ষ টাকা জরিমানা হল হার্দিক পান্ডিয়ার
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট দিলেন ঝড়ে বিধ্বস্ত ময়নাগুড়ির মানুষেরা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
১৪৪ ধারা জারিতে শর্ত আরোপ সুপ্রিম কোর্টের
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
গুলি চলল অরুণাচল প্রদেশে, আহত ২০
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট দিতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা বিজয়ের
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
৭ ঘণ্টায় ৪৬৮টি অভিযোগ পেল নির্বাচন কমিশন
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট দিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মহিলা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
স্কুল চলাকালীন নাবালিকা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
অতিরিক্ত তথ্য যুক্ত করার স্বার্থে মানিক ভট্টাচার্যকে সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
আইএসএল সুপার সিক্স শুরু আজ, মোহনবাগান কবে খেলবে?
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team