Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: সংসদ…সংসদীয় গণতন্ত্র
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১, ০৮:৩৬:৫২ পিএম
  • / ৫৫৮ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

আধুনিক পৃথিবীর কোনও সমস্যার সমাধান যুদ্ধের ময়দান থেকে আসেনি৷ এসেছে আলোচনার টেবিলে৷ দেশে দেশে স্বৈরাচারীর পতন, অগণতান্ত্রিক শক্তির পিছু হটার পেছনে মানুষের আন্দোলন ছিল৷ কিন্তু শেষমেষ সেও আলোচনার টেবিলেই এসে মিটেছে৷ হাত থাকতে মুখে কেন গোছের পাশবিক কথা বর্বরদেরই মানায়৷ মানুষ নিজের কথা বলে, অন্যের কথা শুনে, এক মীমাংসায় আসার চেষ্টা করে। এটাই প্রাথমিক পদ্ধতি।

তার পরে কী হয়? কী হতে পারে? তা নিয়ে আলোচনা করব, এখন নয়। আপাতত আলোচনা ওই আলোচনার টেবিল নিয়ে। ধরুন সংসদীয় গণতন্ত্র, যদি এমনটাই হত যে, নির্বাচনে যাঁরা জিতবেন, তাঁরাই আগামী পাঁচ বছর ধরে দেশের আইন প্রণয়ন করবেন, কারণ তাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, কারণ তাঁদের সংসদের দুই সভায় বিল পাশ করানোর মত সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তাহলে ওই বিশাল সংসদ ভবনের কোনও দরকার ছিল কী? তাহলে গত ১০ ডিসেম্বর দেশের চা-ওয়ালা কাম চৌকিদার কিসের জন্য জনগণের পয়সায়, ৯৭১ কোটি টাকা খরচ করে, নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর পাতলেন কেন? টাটাবাবুকে বরাত দেবার জন্য? নির্বাচিত এমপিদের এসি রুমে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর জন্য? না দেশ বিদেশের রাষ্ট্রনেতা আর মানুষদের দেখানোর জন্য, যে দ্যাখো দ্যাখো আমাদের কত্তবড় সংসদ ভবন আছে? সংসদের উভয় কক্ষে যত বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকুক না কেন, যদি একজনও বিরোধী না থাকে, তাহলেও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি হল, সরকার আইন তৈরি করার জন্য বিল আনবেন, সব্বাই আলোচনা করবেন, বেশ কিছু বিল আরও খতিয়ে দেখতে, এক্সপার্টদের মতামত নিতে বিলকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হবে, প্রতিটা ধারা দেখে দেখে আলোচনা হবে, কোথায় মানুষের স্বার্থে আঘাত লাগছে, কোথায় তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে যাকে বলে থ্রেড বেয়ার আলোচনা হবে, তার পর সংশোধনী আসলে তা নিয়েও আলোচনা হবে৷ তার পর সেই বিল পাশ হবে৷ সংসদের অন্য কক্ষে যাবে৷ সেখানেও আলোচনা হবে৷ তার পর সেই বিল পাশ হবে৷ রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে৷ রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পরে তা আইন হবে।

কি ভাবছেন? এখানেই শেষ? না এখানেই শেষ নয়, এরপর কাজ আমলাদের, প্রশাসনের৷ তাঁরা আইনের রুলস, ধারাগুলো লিপিবদ্ধ করবেন৷ তার পর তার প্রয়োগ হবে, তার আগে নয়। এই আইন তৈরির একটা ফাঁক আমাদের সংবিধানে আছে৷ সাধারণভাবে সংসদের তিনটে অধিবেশন হয়৷ বাজেট, বর্ষা আর শীতকালীন অধিবেশন। বাজেট অধিবেশন সবচেয়ে বড়৷ শীতকালীন অধিবেশন সবচেয়ে ছোট৷ এবার দুই অধিবেশনের ফাঁকে, হয়ত সরকারের মনে হল, একটা আইন বড্ড জরুরি, তাহলে তারা অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারে৷ মন্ত্রক থেকে অর্ডিন্যান্স জারি করা হল৷ রাষ্ট্রপতি সই করলেন৷ আপাতত সেটাই আইন৷ কিন্তু পরের অধিবেশনে সেই অর্ডিন্যান্স নিয়ে আবার বিল আনতে হবে৷ তার পর তাকে পাস করাতে হবে৷ আবার আগের সব নিয়ম মেনে৷ এটাও সংবিধানেই আছে।

এমন নয় যে ৪৭ সাল থেকে এ সব মেনেই সব সরকার চলেছে৷ মানলে তো জরুরি অবস্থা জারিই করা যেত না৷ মাঝরাতে অর্ডিন্যান্স জারি করে, রাষ্ট্রপতিকে ঘুম থেকে তুলে সই করিয়ে, জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল৷ ৬ মাসের মধ্যে তা সংসদে পাশ করানোর কথা৷ পাশ হয়েও ছিল৷ প্রায় বিনা আলোচনায়। তার আগেও হয়েছে, তার পরেও হয়েছে৷ এসমার মতো কালা আইন প্রথমে অর্ডিন্যান্স হয়েছিল, তার পর আইন৷ এ সব হয়েছে৷ কিন্তু সে সব সীমা এই আর এস এস – বিজেপির সরকার কবেই পার করে গেছে৷ ওনারা সংসদকে নারায়ণ শিলার মতো সামনে রেখে যা খুশি তাই করে চলেছেন৷

২০১৪ থেকে সংসদকে এড়িয়ে চলার এই প্রবণতা সারা পৃথিবীর চোখে পড়েছে৷ হ্যাঁ ঠিক এই কারণেই আমরা ডেমোক্র্যাসি ইনডেক্সে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি৷ একবার সেই হিসেবের দিকে চোখ রাখা যাক৷ দ্য ট্রাইবুনাল রিফর্মস বিল, আমাদের বিচারব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করার জন্য, বা আরও কুক্ষিগত করে রাখার জন্য একটা বিল এল, লোকসভায় সেই বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে, ৯ মিনিট। লোকসভার সদস্য কতজন? ৫৪৩ জন। আর রাজ্যসভায় সেই বিল পাশ করাতে সময় লেগেছে ৬২ মিনিট, মানে ঘন্টাখানেক। এর পর এসেন্সিয়াল ডিফেন্স সার্ভিস বিল৷ লোকসভায় ১২ মিনিট, রাজ্যসভায় ৪৬ মিনিট। দ্য ইনসলভ্যান্সি অ্যান্ড ব্যাঙ্কারাপ্সি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল, লোকসভায় ৫ মিনিটে বিল পাশ হয়েছে, রাজ্যসভায় লেগেছে ৩৭ মিনিট। দ্য ইনল্যান্ড ভেসেলস বিল, লোকসভায় ৬ মিনিট, রাজ্যসভায় ৩৩ মিনিট। দ্য ট্যাক্সেসন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল পাশ করাতে লোকসভায় সময় লেগেছে ৬ মিনিট, রাজ্যসভায় ৩২ মিনিট। দ্য লিমিটেড লায়াবিলিটি পার্টনারশিপ বিল, লোকসভায় ৫ মিনিট আর রাজ্যসভাতে ২৩ মিনিটে পাশ হয়েছে, এরপর মাথায় রাখুন, একের পর এক এয়ারপোর্ট বেচে দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ বিল, দ্য এয়ারপোর্ট ইকোনমিক রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল লোকসভায় পাশ হল ১৪ মিনিটে, রাজ্যসভায় ১৭ মিনিটে। মানে আইন আনো আর তাকে পাশ করিয়ে নাও, আলোচনার কোনও অবকাশ নেই। আগে এক অধিবেশনে বিল আসত, পরের বা তারও পরের অধিবেশনে তা পাশ হত, কেন? কারণ আলোচনা হত, বিল সিলেক্ট কমিটিতে যেত, সময় লাগত, এখন সে সবের বালাই নেই। তথ্য বলছে, ১৫ তম লোকসভায়, মানে শেষ মনমোহন সিংহ যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন মাত্র ১৮ % বিল একই অধিবেশনে পাশ হয়ে যেত৷ ২০১৪ তে চৌকিদার এলেন, ১৬ তম লোকসভায় ৩৩% আর ১৭ তম লোকসভায় ৭০% বিল একই অধিবেশনে পাশ হয়ে গেছে বা করিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ মানে বিজেপি বা মোদি সরকার যখন ৩০৩, তখন তাঁরা আর আলোচনার দরকার আছে বলে মনেই করছেন না, বিল আনছেন পাশ করাচ্ছেন। আলোচনা কিস চিড়িয়া কা নাম হ্যায়?

প্রথম ইউপিএ সরকার, ১৪ তম লোকসভায় ৬০% বিলকে সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠিয়েছেন, দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার, ১৫ তম লোকসভায় ৭১% বিলকে পাঠিয়েছেন সিলেক্ট কমিটির কাছে, যাতে বিল নিয়ে আরও আলোচনা করা যায়, আবার মোদি সরকার প্রথম দফায়, মানে ১৬ তম লোকসভায় মাত্র ২৭% বিলকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠিয়েছেন, আর ১৭ তম লোকসভায়, যখন বিজেপি একাই ৩০৩, তখন সিলেক্ট কমিটিতে গেছে মাত্র ১২% বিল। মানে সংসদ ভবন এখন নারায়ণ শিলা, কেবল সামনে রাখা হবে, তাকে আরও বিরাট আরও আরামদায়ক করে তৈরি করার জন্য, মানুষের পকেটের ট্যাক্সের পয়সা খরচ হবে, এবং সেই সংসদকে এড়িয়ে তাঁরা বিল পাশ করবেন।

মোদি সরকারের এই সব পদক্ষেপের ফল কী? নাগরিকত্ব আইন পাশ হল, আইন হল, দেশজোড়া প্রতিবাদের মুখে তার প্রয়োগ বন্ধ৷ তিন কৃষিবিল কোনও আলোচনা ছাড়াই পাশ হয়ে গেল৷ এক বছর ধরে আন্দোলন চলার পরে তা ফেরত নিতে বাধ্য হল মোদি সরকার৷ ত্যাগ তপস্যা ইত্যাদি ঢপবাজি করেও আটকানো গেল না৷ এবং মজার কথা হল, বিল আনার সময় আলোচনা হয়নি, বিল প্রত্যাহারের সময়েও কোনও আলোচনা হল না৷ বলা হল না ওই যে ত্যাগ তপস্যা ইত্যাদি মিথ্যে, নির্জলা মিথ্যে বলার পিছনে আসল রহস্যটা কী? বিল এনেছিলেন ঢাক বাজিয়ে, আজ চুপচাপ ফেরত নিলে হবে? কেন ফেরত নিচ্ছেন, তা বলতে বাধাটা কোথায়? লজ্জা করছে? অহংকারে লাগছে, মাথা হেঁট করতে অসুবিধে হচ্ছে? কেন ফেরত নিলেন কৃষি বিল, মানুষ জানতে চাইবে না?

আমাদের দেশের সুপ্রিম কোর্টের চিফ জাস্টিস কী বলছেন, সেটা শুনে নেওয়া যাক৷ জাস্টিস রামানা বিচারপতি এবং বিশিষ্ট উকিল, ব্যারিস্টারদের এক সভায় বললেন, “Then the debates and discussions in the House were constructive. They could elaborately discuss the legislation taking place… Laws used to be discussed and deliberated… Unfortunately, over a period of time… you know what is happening in the House. In the absence of quality debate, courts are unable to fathom the intent and object of the new laws,” ৷ আগে সংসদে আইন আনার সময়ে তা নিয়ে আলোচনা হত৷ তাঁদের বিস্তৃত আলোচনার পরেই আইনের রূপরেখাটি তৈরি হত৷ এখন বেশ কিছু দিন ধরে সেই আলোচনার পাট উঠে গেছে৷ যার ফলে সেই আইনের ব্যাখ্যা বিচারবিভাগ অনুধাবন করতে পারছে না৷ এবং আইনগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারবিভাগের সামনে আনা হচ্ছে, বিচারবিভাগের ওপর চাপ বাড়ছে। স্বাভাবিক, সংসদকে এড়িয়ে বিলকে আইন করলে এমনটাই হবার কথা, তাই হচ্ছে।

আসলে দেশের সংসদীয় ব্যবস্থার ওপরে, বিজেপি বা আরএসএসের এতটুকুও শ্রদ্ধা নেই৷ তাঁরা সংবিধানেও বিশ্বাস করে না৷ সেই সংবিধান বিরোধী, দেশ বিরোধী শক্তি যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন মানুষকে পথে নেমেই এই শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। কৃষি বিল ফেরত নিয়েছেন৷ এবার সিএএ ফেরত নেবার আন্দোলন নতুন করে শুরু হোক, হাতে থাকুক সংবিধান আর ফ্যাসিস্ট রাজের ওপর ঘৃণাই হোক আমাদের শক্তি।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬
১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩
২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮২৯ ৩০
৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বিহারে ইন্ডিয়া জোটের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
মেয়েকে ২৫০ কোটির উপহার আলিয়া-রণবীরের!
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
তরুণীর হাতে হাত, তৃণমূল নেতার চটুল নাচের ভিডিও ভাইরাল
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
সন্দেশখালির প্রতিবাদীরা পা মেলালেন তৃণমূলের মিছিলে
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষের সামনে ক্ষোভ উগরে দিলেন মহিলারা
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
RCB vs KKR ম্যাচ কখন কোথায় দেখবেন?  
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
ঘরের মধ্য়েই মা ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু বীরভূমে
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
আজ আরসিবির বিরুদ্ধে কী হতে পারে কেকেআর একাদশ  
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
রোজ ভ্যালির আমানতকারীদের টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু গ্যাংস্টার-রাজনীতিক মুখতার আনসারির
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
ভ্যাপসা গরম থেকে স্বস্তি, সপ্তাহান্তে বৃষ্টির পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দু’লক্ষের বেশি ভোটে হারাব, একি বললেন বিজেপি নেতা?
শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
বিজেপির প্রার্থী রেখা স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা নিচ্ছেন, তথ্য প্রকাশ তৃণমূলের
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
তৃণমূল-বিজেপি প্রার্থী একযোগে বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ জানাল কমিশনে
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
প্রতারণা চক্রের ফাঁস, পাণ্ডা সহ মোট ৯ জনকে গ্রেফতার
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team