Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: সাইকেল, সাইকেল
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১০:৫৪:০৯ পিএম
  • / ৪৫৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:
১৯৬৩ সালের জানুয়ারি৷ দেশের কেবল নয়, পৃথিবীর মহাকাশ বিজ্ঞান ও গবেষণার এক অন্যতম নাম, বিক্রম সারাভাই৷ তিনি এবং তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন বৈজ্ঞানিক, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হওয়া এপিজে কালাম, তাঁরা মিলে গভীর আলোচনায় মগ্ন। দেশীয় প্রযুক্তিতে, দেশের প্রথম রকেট তো তৈরি হল, কিন্তু তাকে মহাকাশে পাঠানো হবে কোনখান থেকে? প্রথমত জনবহুল এলাকা থেকে তো সম্ভব নয়৷ দ্বিতীয়ত এরজন্য দরকার পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ইকুয়েটরের ওপর কোনও জায়গা৷ কোথায় সেটা করা সম্ভব? তাঁরা বেশ কিছু জায়গা দেখছেন, এবং তা নাকচ হচ্ছে। শেষপর্যন্ত একটা জায়গা পাওয়া গেল৷ কেরলের তটভূমিতে এক জেলে বস্তি থুম্বা, যা নাকি পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ইকুয়েটরের ওপর অবস্থিত, এবং ওই এক জেলে বস্তি ছাড়া, তাদের নারকেল পাতায় ছাওয়া কুটির ছাড়া আর কিছুই নেই।
ওঁরা গেলেন থুম্বায়৷ গিয়ে দেখলেন সেখানে আছে এক চার্চ, সেন্ট মেরী ম্যাগডালেন চার্চ৷ যার মাথায় ত্রিবান্দাম এর বিসপ রেভারেন্ড পীটার বার্নার্ড পেরেইরা৷ কথা হল ওনার সঙ্গে৷ উনি বললেন, উনি একলা সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষম, আপনারা বরং সানডে মাসে আসুন৷ সেখানেই সবার সঙ্গে কথা হবে। বিক্রম সারাভাই, এপিজে আবদুল কালাম সমেত আরও কয়েকজন বিজ্ঞানী গেলেন, রেভারেন্ড পেরেইরা সমবেত ভক্তদের বোঝালেন, এ এক বিরাট কাজ হতে চলেছে, আমাদের পাশে থাকতেই হবে। থুম্বার নাম তখন কেউ শোনেনি৷ কিন্তু থুম্বার জেলে বস্তির লোকজন হাসিমুখে ছেড়ে দিল তাদের জায়গা৷ কিছুটা দূরে তৈরি করে দেওয়া হল তাদের বস্তি, তাদের জন্য নতুন চার্চ, পুরনো চার্চ হল মহাকাশ বিজ্ঞানের অফিস। এবার সমস্যা, রাস্তা নেই, কি করে আসবে রকেটের সমস্ত পার্টস? লঞ্চিং প্যাডের সরঞ্জাম? কালাম বলেছিলেন, কেন? সাইকেল তো আছে৷ আমরা সাইকেলেই নিয়ে আসব। সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে আসা হল সেই সরঞ্জাম৷ ২১-এ নভেম্বর, ১৯৬৩৷ থুম্বা থেকে ভারতবর্ষের প্রথম রকেট উড়ে গেল মহাকাশে৷ বিক্রম সারাভাই, আবদুল কালামের চোখে জল চিক চিক, সেদিন কালাম ওখান থেকে সাইকেল চেপে ফিরেছিলেন, অন্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। থুম্বা ইকুইটরিয়াল রকেট লঞ্চ স্টেশন, সেদিন থেকে চালু হল, পরে যার নাম হল বিক্রম সারাভাই স্পেশ সেন্টার৷ এক ইতিহাস। আচ্ছা আজ এতদিন পর এই গল্প বলছি কেন? বলছি বলছি কারণটাও বলছি, তার আগে আরেকটা গল্প, আরেকজন মানুষের গল্প।
আমাদের দেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন, শুরু হয়েছিল মোটামুটি ১৯২৫ সালে৷ উত্তরপ্রদেশের কানপুরে প্রথম সম্মেলনের পর তাদের যাত্রা শুরু হয়৷ কিন্তু এ দেশের একদল নেতা মার্কসবাদের ভিত্তিতে সমাজতন্ত্র, সোভিয়েত ধাঁচের সমাজতন্ত্রকে মেনে নিতে পারেননি৷ তাঁরাও এক সমাজতন্ত্রের কথা বলতেন, যা ছিল খেটে খাওয়া কৃষক, শ্রমিকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভিত্তিতে গড়ে উঠবে৷ বামপন্থার সেই ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন রাম মনোহর লোহিয়া, উত্তরভারতে তাঁর আদর্শে সমাজবাদী দল তৈরি হয়৷ প্রথমে কংগ্রেস সোশ্যালিস্ট পার্টি, পরে কিসান মজদুর প্রজা পার্টি, তারপর প্রজা সোশ্যালিস্ট পার্টি, শেষে সোশ্যালিস্ট পার্টি লোহিয়া গ্রুপ তৈরি হয়৷ বেশ কিছু কৃষক শ্রমিক নেতারা তাঁর কাছাকাছি আসেন৷ উত্তর ভারতের বিভিন্ন অংশে তাঁরা কাজ করতে থাকেন৷ বাহন ছিল সাইকেল।
স্বাভাবিক, সে সময়ে আর মোটর কার কোথায়? কিন্তু একজনের কাছে সেই সাইকেলও ছিল না, সে স্বপ্ন দেখত একটা সাইকেলের৷ ভোর হতেই আরেকজনের সাইকেলের পেছনে চেপে দুর দুরান্তে গ্রামে প্রচারে যেতেন৷ সেরকমই এক প্রচারের সময়, দুপুরবেলা এক গ্রামে যান, সেখানে গাঁও বুড়োরা বটগাছের তলায় চৌপালে বসে তাস খেলছিলেন৷ তো কথা কিভাবে শুরু করা যায়?  তিনি তাদের সঙ্গে তাস খেলতে বসে গেলেন, মাঝে মধ্যে টুকরো টাকরা কথা, এরমধ্যে ওই গ্রামের এক প্রবীণ বললে আজ যিনি জিতবেন, তাঁকে একটা সাইকেল দেওয়া হবে৷ রবিনহুড ব্রান্ডের সাইকেল৷ ছেলেটি আলোচনা ছেড়ে এবার মন দিয়ে খেলতে বসলেন সাইকেলটা তাঁর চাই৷ তিনি জিতলেন এবং পেলেন তাঁর জীবনের প্রথম সাইকেল৷ রবিনহুড ব্রান্ডের একটা ঝকঝকে নতুন সাইকেল৷ এরপর তাঁকে পেছন ফিরে দেখতে হয়নি৷ ১৯৬৭-তে সেই যুবক উত্তরপ্রদেশের যশবন্ত নগর থেকে, এমএলএ হিসেবে নির্বাচিত হলেন৷ তারপর আরও ৯ বার, তিনি হলেন মুলায়ম সিং যাদব৷ সমাজবাদী দলের নেতা৷ অবশ্য সেদিন তাঁর নির্বাচনী চিহ্ন ছিল সংযুক্ত সোশ্যালিস্ট দলের বটগাছ৷ এরপর জনতা দলের গরু গাড়ির চাকা চিহ্ন নিয়ে লড়ে, মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন৷ এরপর জনতা পার্টির সিম্বলে লড়লেন কৃষকের কাঁধে হাল৷ এরপর ৯৩ সালে নিজের দল, সমাজবাদী দলের নির্বাচনী চিহ্ন বেছে নিতে, এক মিনিট ও খরচ করেননি৷ দলের নির্বাচনী চিহ্ন হল সাইকেল। এবার বলি এতক্ষণ এই সাইকেল এর কথা বলছি কেন?  কারণ যেবার মুলায়ম সিং যাদব প্রথম বিধায়ক হলেন, সেই ১৯৬৭-তে নরেন্দ্র মোদীর বয়স ছিল ৭ বছর৷ পুকুর থেকে মগরমচ্ছ, কুমীর ধরছিলেন, সেই মুলায়ম সিং যাদবের দল সমাজবাদী দলের চিহ্ন নিয়ে তিনি যা বলেছেন, আসুন তাই নিয়ে, একটু আলোচনা করা যাক।
প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ বাড়ছে, এটা পরিষ্কার৷ উনি উল্টোপাল্টা বকছেন। অবশ্য এমনও নয় যে উনি খুব মননশীল কথা বলে থাকেন৷ তাঁর কথার মণি মুক্তো তো ছড়িয়ে আছে সর্বত্র৷ তার অনেকটা মিথ্যে, কিছুটা অজ্ঞতা, কিছুটা অবশ্যই জুমলা৷ উনি মাঝে মধ্যেই এমন সব কথা বলেন, বলে থাকেন, যা শুনলে ভারতীয় হিসেবে মাথা হেঁট হয়ে যায়৷ আহা এমন প্রধানমন্ত্রী আমার দেশের। ছোট্ট বেলায়, গ্রামে স্কুল থেকে ফেরত আসার সময় তিনি পুকুর থেকে মগরমচ্ছ, মানে কুমীর ধরেছিলেন, জি মেল আবিস্কার হবার বহু আগে, তিনি ফোটোগ্রাফ মেল করেছিলেন, তিনি জানেন যে আকাশে মেঘ থাকলে প্লেন রাডারকে এড়িয়েই উড়ে যেতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি। তো সেই তিনি, একে উল্টোপাল্টা বকার অভ্যেস, তার ওপর উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের চাপে পড়ে নির্বাচনী জনসভায় বললেন, আমেদাবাদে যে জঙ্গিরা বোমা ফাটিয়েছিল, তারা তাদের বোমা রেখেছিল সাইকেলে৷ আর সেই সাইকেল আজ সমাজবাদী দলের চিহ্ন, এই কথা বললেন হরদোই এর জনসভায়।
এক রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রতীককে, অনায়াসে জুড়ে দিলেন আমেদাবাদ বম্ব ব্লাস্টের সঙ্গে৷ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে৷ যে দলের নেতা দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন, যে দল উত্তরপ্রদেশে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল, যে দলের ৫ জন সাংসদ রয়েছে লোকসভায়, সেই দলের নির্বাচনী চিহ্নকে জুড়ে দিলেন সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে৷ নির্বাচন কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ, একটা কথাও বলল না। পাঁড়ার পেঁচো মাস্তানের ভাষা শোনা গেল এক সাংবিধানিক প্রধানের গলায়৷ মজার কথা হল, ২০১৪ তে, ২০১৭ তে, ২০১৯ এ কিন্তু এই কথা শোনা যায়নি৷ আজ যখন গদি টলমল, তখন তিনি এ কথা বললেন। দেশের বিকাশের কথা নয়, স্কুল, শিক্ষা স্বাস্থের কথা নয়, বেরোজগারির কথা নয়, মূল্যবৃদ্ধির কথা নয়, বিরোধী দলের নির্বাচনী চিহ্নকে জুড়ে দিলেন সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে৷ এবং ফল সঙ্গে সঙ্গেই, রাজ্যজুড়ে বিজেপি নেতারা বলতে শুরু করে দিলেন, আমেদাবাদ ব্লাস্টের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে সমাজবাদী দলের৷
প্রমাণ? প্রমাণ দিতে বয়েই গিয়েছে৷ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলছেন, প্রমাণের দরকারটা কোথায়? গণতন্ত্রকে, গণতান্ত্রিক সমস্ত ধ্যান ধারণা, রীতি নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক দল আর তার মিথ্যেবাদী নেতা, প্রকাশ্য জনসভায় অসত্য ভাষণ দিচ্ছেন৷ কেন? তাঁকে, তাঁদেরকে জিততে হবে, যে কোনও মুল্যে জিততে হবে? নরেন্দ্র মোদির ওই ভাষণের পর সমাজবাদী দলের নেতা অসম্ভব ভালো একটা টুইট করেছেন, তিনি লিখেছেন, खेत और किसान को जोड़ कर उसकी समृद्धि की नींव रखती है, हमारी साइकल,
सामाजिक बंधनों को तोड़ बिटिया को स्कूल छोड़ती है, हमारी साइकल
महंगाई का उसपर असर नहीं, वो सरपट दौड़ती है, हमारी साइकल,
साइकल आम जनों का विमान है, ग्रामीण भारत का अभिमान है, साइकल का अपमान, पूरे देश का अपमान है। পরিশ্রমী কৃষক আর ক্ষেত কে একসূত্রে জুড়ে দেয় সাইকেল, সাইকেলেই এক পিতা তার আত্মজাকে স্কুলে দিয়ে আসে, প্রতিদিন বেড়ে চলা পেট্রল ডিজেলের দাম নিয়ে ভাবতে হয় না, সাইকেল চলতে থাকে প্যাডলের চাপে, সাইকেল আম জনতার বাহন, সাইকেলের অপমান, দেশের মানুষের অপমান, দেশের অপমান।
সাইকেল বৃত্যান্ত শেষ করার আগে, একজনের কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন আইনস্টাইন, তিনি বলেছিলেন, ‘Life is like riding a bicycle. To keep your, balance you must keep moving.’ মোদিজী কি ব্যালেন্স হারিয়েছেন? মাত্র ক বছর আগে শান্তিনিকেতনে এক মানুষ কে দেখেছিলাম, নিজের মনে সাইকেল নিয়ে চলছেন, পাশে রবিঠাকুরের সেই উপাসনাগৃহ, অপলক দৃষ্টি তে সেই সাইকেল আরোহী কে দেখছিল রামকিঙ্কর বেইজের সাঁওতাল পরিবার, সাইকেল চালাচ্ছিলেন অমর্ত সেন। আমাদের এন্টায়ার পলিটিকাল সায়েন্স এর ডিগ্রি নেওয়া প্রধান সেবক, নরেন্দর ভাই দামোদর দাস মোদী কে এসব বোঝাবে কে? আরও বড় প্রশ্ন, তিনি কি বুঝতেও পারবেন? সাইকেল দেখলেই তাঁর মাথায় আসে উগ্রপন্থা, সাইকেল আরোহী কে দেখলেই তিনি বুঝে জান, সেই আরোহী উগ্রপন্থী।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

প্রথম স্থানাধিকারী চন্দ্রচূড় চিকিৎসক হতে চায়
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
কোচবিহার থেকে মাধ্যমিকে প্রথম চন্দ্রচূড় সেন
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার পাশের হার ৮৬.১৩ শতাংশ
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান না হলে তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে না, মন্তব্য দেবের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
মে মাসে কেরিয়ারে বড় উন্নতি হবে ৫ রাশির জাতকের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আচমটাই ঝড়-বৃষ্টি মেদিনীপুর জুড়ে, বাকি জেলায় কবে?
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসুস্থ অভিনেতা সোহম, ভর্তি হাসপাতালে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বিশ্বকাপে খেলতে পারেন রিঙ্কু, আছে আইসিসির এই নিয়ম
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
খড়গ্রামের ঘটনায় গ্রেফতার ৭, এখনও অধরা অনেকে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কুণাল কি বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন, জল্পনা তুঙ্গে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কাল, বৃহস্পতিবার সকালে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
ভোটদানের হার বাড়ল কী করে? প্রশ্ন মমতার
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
আমাকে কি অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে, প্রশ্ন কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের পদ খুইয়ে বিস্ফোরক কুণাল
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team