Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: অজগরের মতই বিজেপি গিলে খায়, সেটাই বিজেপির চরিত্র
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২, ১০:৪৫:১২ পিএম
  • / ৫৮৬ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

সালটা ছিল ১৯৮২৷ জর্জি মিহায়লোভিচ ডিমিট্রভের জন্মশতবার্ষিকী৷ ধানবাদের বাস্তাকোলায়, এক সেমিনারে ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন সমর মুখোপাধ্যায়৷ সিপিআইএমের সাংসদ, পলিটব্যুরোর সদস্য। বিষয় হল ইউনাইটেড ফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট এবংজর্জি ডিমিট্রভের শিক্ষা। হ্যাঁ জর্জি ডিমিট্রভ এই ইউনাইটেড ফ্রন্ট, তার কর্মপদ্ধতি, তার কৌশলগত দিক নিয়ে এক সুসংবদ্ধ তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন, ঐ ৭৭ এর জনতা সরকার, বামফ্রন্ট সরকার ইত্যাদি নিয়ে যেসব প্রশ্ন ছিল, তার প্রেক্ষিতেই ডিমিট্রভের থিওরি নিয়ে আলোচনা। গুছিয়ে বলেছিলেন, সমর মুখোপাধ্যায়, উদাহরণ এসেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের, একে অন্যের যাকে বলে আর্চ রাইভাল, ঘোষিত শত্রু রাশিয়া, ইংল্যান্ড, আমেরিকা হাত ধরেছিল ফাসিজমের বিরুদ্ধে, হিটলার, মুসোলিনি, তোজোর বিরুদ্ধে। তো সে সেমিনার শেষ হবার পরে এক অবোধ, সদ্য সিপিএম হওয়া কিশোরের প্রশ্ন ছিল, ফরোয়ার্ড ব্লক, সি পি আই, আর এস পি ইত্যাদিরা তো আমেরিকা বা ইংল্যান্ড নয়, তাদের সঙ্গে যুক্ত ফ্রন্ট গড়ে তোলার পরে তাদের কী হবে? দলের পরিভাষায় তারা তো কেউ বিপ্লবী দল নয়, তাদের একজন তো দক্ষিণপন্থী, অন্যরা তো কমিউনিস্ট পার্টিও নয়।

এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, কাজেই আবার আলোচনা হল, কমিউনিস্ট পার্টিতে প্রশ্ন উঠলে আলোচনা হয়, ওপর থেকে একজন নেতা আসেন, আমার মা সব জানেন, এরকম এক ভঙ্গিমায় তিনি নিদান হেঁকে চলে যান, এটাই রীতি। তো তিনি এলেন, বললেন, ওই সিপিআই, আরএসপি, ফব দের কিছুটা হলেও জনভিত্তি আছে, ভোট আছে, সমর্থক আছে, সেদিকেই নজর রাখতে হবে, সেই সব সমর্থন আমাদের দিকে আনতে হবে, যাতে করে আমাদের দল বড় হয়, ওদের দলের শক্তি কম হতে থাকে। বাস্তবে সেটাই হয়েছিল, কিছু দিনের মধ্যেই বামফ্রন্টের প্রত্যেক শরিকদলের ক্ষমতা কমেছে, মন্ত্রীদের গুরুত্ব কমেছে, ১৯৭৭ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বরানগরের বিধায়ক ছিলেন আরএসপি র মতীশ রায়, ওখানকার মানুষজন জানেন, বরানগর কনস্টিচুয়েন্সিতে আর এস পি একজুই ছিলেন, ঐ মতীশ রায়, বাকি সবাই সিপিএম, তবুও ঐ আসন আর এস পি কে দেওয়া ছিল, আসল ক্ষমতা ছিল, রাশটা ছিল সিপিএমের হাতে।

আজ যখন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় নেই, তখন সেই ছবি আরও পরিষ্কার৷ সিপিএমের তবু কিছু জনভিত্তি আছে, বাকিরা সাইনবোর্ড৷ কিন্তু একটা কথা মানতেই হবে, তাদের জনভিত্তি যতটাই কমে যাক, প্রকাশ্যে তাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, ব্রিগেডে সভা হলে প্রথম ভাষণ দিতেন বিপ্লবী বাংলা কংগ্রেসের কেউ একজন, বামফ্রন্টের মিটিং ডাকা হত নিয়ম করে, শরিকরা গোঁসা হলে বিমানবাবু মান ভাঙাতেন, এসব ছিল। তো সেই ডিমিট্রভের যুক্তফ্রন্টের তত্ত্ব কি কেবল কমিউনিস্টরা পড়েছেন? মোটেই না, কমিউনিস্টদের চেয়েও বেশি পড়েছে বিজেপি৷ আরও ভালো ভাবে সেই তত্ত্বকে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি৷ সেটাই আজকের আলোচনার বিষয়।

বিজেপির জন্মের আগে ছিল জনসংঘ৷ তো তাদের সঙ্গে ফ্রন্ট করেছে স্বতন্ত্র পার্টি, দর্শনের দিক থেকে খুব আলাদা কিছু নয়৷ জনসংঘ সেভাবে বাড়েনি, জাতীয় রাজনীতিতে তাদের উত্থান জরুরি অবস্থার সময় থেকে, আরএসএস – জনসংঘের নেতা কর্মীরা রাস্তায় ছিলেন কেবল নয়, হাত ধরেছিলেন প্রত্যেকের। সোশ্যালিস্ট জয়প্রকাশ নারায়ণের, কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আসা নেতাদের, এমনকি কমিউনিস্টদের নিয়েও তাদের কোনও আপত্তি ছিল না, এবং ওই প্রথম তারা দিল্লি সরকারের ভাগেদারি পেল৷ স্বাধীনতা সংগ্রামে যাদের কোনও অবদান নেই বরং যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, তারা এই প্রথম দিল্লির সরকারে মন্ত্রী হল, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। তাদের এজেন্ডায় তো সবই ছিল৷ রাম মন্দির থেকে ৩৭০ ধারা, গোহত্যা নিবারণ থেকে ইউনিফর্ম সিভিল কোড, তারা ভোলেনি একদিনের জন্যও৷ কিন্তু তা নিয়ে একটা কথাও খরচ করেনি, তাদের ক্ষমতা বেড়েছে, তারা আরও বন্ধু বাড়িয়েছে, একদা আগুনখেকো সোশ্যালিস্ট জর্জ ফার্নান্ডেজও তাদের হাত ধরেছে৷ এনডিএ তৈরি হয়েছে, যুক্ত ফ্রন্ট, ন্যাশনাল ডেমোক্রাটিক অ্যালায়েন্স, তার কত্ত শরিক, স্বাভাবিক শরিক শিবসেনা, আকালি দল, অস্বাভাবিক শরিক সোশ্যালিস্ট জে ডি ইউ, নাস্তিক ডিএমকে, আরও অনেক দল।

বাজপেয়ির সরকারের সময় শরিক দলের সংখ্যা ২১, কেরালার সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান পার্টিও ছিল, সিপিএম ছেড়ে আসা নটবর বাগদিও ছিল, তৃণমূল ছিল, তেলেগু দেশম ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণেই অটল সরকার আবার নির্বাচিত হয়নি৷ বিজেপি দু পা পিছিয়েছে, কিন্তু শরিক বেড়েছে, কিছু শরিক ছেড়ে গেলেও, অন্যান্য অনেক শরিক এসেছে। ২০১৪-তে ২৪ টা দল ছিল এনডিএ তে, হ্যাঁ ২৪ টা দল। কেউ কেউ ছেড়ে গিয়েছে বটে, কিন্তু তাদের বিকল্পও খুঁজে নিয়েছে বিজেপি, পারেনি এই বাংলায়। এবার একাই বিজেপি ২৬২, সাধারণ সংখ্যাগরিষ্টতা থেকে সামান্য কম কিন্তু সেটা কিছুই নয়, বড় দল বিজেপি।

ঠিক এইখান থেকে, এনডিএর বড় দলগুলোকে হয় ভাঙা, নয় গিলে খাওয়া শুরু করলো বিজেপি৷ প্রথমে পালা ছিল তেলেগু দেশমের৷ অটলবিহারির সময় এন চন্দ্রবাবু নাইডু ছিল একটা নাম, গোটা দেশে অন্ধ্র মডেলের চর্চা, চন্দ্রবাবুর চর্চা চলছিল, সে কি ব্যাপার৷ চন্দ্রবাবু কলকাতায় এলেন, সামনের সারিতে সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ, উঠে দাঁড়ালেন, প্রত্যেক মানুষ উঠে দাঁড়ালো, স্ট্যান্ডিং ওভেশন, সে এক ব্যাপার। কিন্তু অলক্ষে আরেকজনের ভুরু কুঁচকোচ্ছিল, কারণ তিনি গুজরাট মডেলকে সামনে আনতে চান৷ তো ২০১৪ তে ক্ষমতায় আসার পরেই তেলেগু দেশম বাদ কেবল নয়, সিবিআই মাঠে নামল, এরপর থেকে লাগাতার বিভিন্ন সময়ে ১৯টা দল এন ডি এ ছেড়েছে, কেন? ওই গিলে খাবার কৌশল বুঝে এড়াতে গিয়ে চুরমার হয়ে গিয়েছে৷ বিজেপি বেড়েছে রাজ্যে রাজ্যে৷ বিজেপির শরিক দল ধারাবাহিকভাবেই কমেছে৷

বিহারের দিকে তাকান, প্রথম যখন জোট হল বিজেপির সঙ্গে জেডিইউর, সেই জোটে বড় দল, ১০০ র বেশি আসন কার? জেডিইউর, ৫০/৫৫ টা আসন বিজেপির৷ এখন? মুখ্যমন্ত্রী এখনও নীতিশ কুমার, কিন্তু বড় শরিক ঘাড়ের ওপরে নয়, অনেক ওপরে বিজেপি ৭৭, জেডি ইউ ৪৫। মহারাষ্ট্র? একই খেলা, শিবসেনা ছিল বড় শরিক, তাদেরই মুখ্যমন্ত্রী হত, কোনও প্রশ্নই উঠত না, তারপর ধীরে ধীরে বিজেপি বেড়েছে, শিবসেনা কমেছে, এখন একনাথ সিন্ডের শিবসেনা কাঠপুতুলের চেয়ে বেশি কিছু নয়৷ ওদিকে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা নিজেদের বাঁচাতে, এনডিএর রাষ্ট্রপতি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকেই সমর্থন করলেন৷ উপায় নেই, দল শেষ, অজগর গিলে খেয়েছে।

ওদিকে দেখুন আকালি দলকে, তাদেরও অবস্থা খারাপ, এক নয়া দলের কাছে হেরে ভূত, কারণ বিজেপি জমানার যাবতীয় দায় তাদের বইতে হচ্ছে৷ ক্ষীর খাচ্ছে বিজেপি, তারা কংগ্রেস গেলেই খুশি, থাকুক না আপ একটা কি দুটো রাজ্যে, এআইডিএমকের দিকে তাকান৷ তাদেরই সমর্থনে সামান্য জায়গা করার পরে, এখন তাদের দলীয় কোন্দল নিয়ে মাঠে নেমেছে বিজেপি৷ কিছুদিনের মধ্যেই তারা সম্ভবত দূর্বল গোষ্ঠীর সাহায্য নিয়ে বেড়ে উঠবে, অন্তত চেষ্টা করবে। উত্তরপ্রদেশে রাজভরের সুহেলদেভ সমাজ পার্টি, হরিয়ানার রাজ কুমার সাইনির দল লোকতন্ত্র সুরক্ষা পার্টি, উত্তরপ্রদেশের অপনা দল এরকম বহু ছোট ছোট জন গোষ্ঠী, জাতি, উপজাতিদের নেতা, দলের সঙ্গে বিজেপি ছিল, একে একে তাদেরকে হয় গিলে খেয়েছে, নাহলে তারা এখন কেবল কাঠপুতুল, শাহ – মোদি যেমন নাচাবেন, তেমন নাচবে।

এটাই তাদের ভবিষ্যত, তারা লুঠমার চালাবে, এক চোখ বুঁজে তাদের দিকে নজর রাখবে বিজেপি, সব খাতায় লেখা থাকবে, কথা না শুনলে ইডি আসবে দূর্নীতি বার করতে, আবার পূনর্মুশিক ভব। ঠিক এই মূহুর্তে নরেন্দ্র মোদি – অমিত শাহের ন্যাশন্যাল ডেমোক্রাটিক অ্যালায়েন্সে, বড় শরিক দল বলতে আছে কেবল নীতীশ কুমারের জে ডি ইউ, সেটাও কতদিন থাকবে বলা মুশকিল৷ সম্ভবত একদা লালুসখা নীতীশ তাঁর ব্যাটন তেজস্বী যাদবের হাতেই দিয়ে যাবেন, ওনার ইদানিং সময়ের গতিবিধি সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। লোক জনশক্তি পার্টির দিকে তাকান, রামবিলাশ পাশোয়ানের ছেলেকে বড় করে, নীতীশ কুমারের ভোট কেটে জেডি ইউর আসন কমিয়ে দিল বিজেপি। সেই লোক জনশক্তি দল কোথায়? তাহলে দাঁড়াল কী? আদতে এক গোঁড়া হিন্দুত্ববাদী, ক্যাডার বেসড বিজেপি দল, যা নাকি আরএসএসের নির্দেশে ভারতের রাজনীতিতে আছে, তাদের যুক্তফ্রন্টের কৌশল হল নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানো, ধীরে ধীরে কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহায়ক দলগুলোতে ভাঙন ধরিয়ে, তাদের নেতাদের ভেঙে এনে গিলে খাওয়া, তাদের লক্ষ্য পরিষ্কার, এক হিন্দু জাতি, এক রাজনৈতিক দল বিজেপি, এক নেতা, এক ভাষার ভিত্তিতে এক হিন্দুরাষ্ট্র তৈরি করা। মধ্যে র হাইফেন এই শিবসেনা, আকালি দল, সুহেলদেব সমাজ দল, জনতা দল ইউনাইটেড, লোক জনশক্তি পার্টি, অপনা দল, পি এম কে, এম ডি এম কে, আর এস পি (বলশেভিক), নাগা পিপলস ফ্রন্ট ইত্যাদিরা ইতিহাস হয়ে যাবে, মিউজিয়ামে এই দলগুলোর ফ্ল্যাগ পাওয়া যাবে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মে মাসে কেরিয়ারে বড় উন্নতি হবে ৫ রাশির জাতকের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আচমটাই ঝড়-বৃষ্টি মেদিনীপুর জুড়ে, বাকি জেলায় কবে?
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসুস্থ অভিনেতা সোহম, ভর্তি হাসপাতালে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বিশ্বকাপে খেলতে পারেন রিঙ্কু, আছে আইসিসির এই নিয়ম
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
খড়গ্রামের ঘটনায় গ্রেফতার ৭, এখনও অধরা অনেকে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কুণাল কি বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন, জল্পনা তুঙ্গে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কাল, বৃহস্পতিবার সকালে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
ভোটদানের হার বাড়ল কী করে? প্রশ্ন মমতার
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
আমাকে কি অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে, প্রশ্ন কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের পদ খুইয়ে বিস্ফোরক কুণাল
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কর ফাঁকি দেওয়া ৫ লক্ষের সিমকার্ড ব্লক করছে পাকিস্তান
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
সলমানের বাড়ির বাইরে গুলি: অভিযুক্তের মৃত্যু
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
Aajke | দেশের আইন কানুনের উপর এতটুকুও আস্থা নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা বিজেপি নেতাদের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ গেল কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team