Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: কুকুর ল্যাজ নাড়াচ্ছে? নাকি ল্যাজ কুকুরকে নাড়াচ্ছে?
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২, ১০:৪৫:৩৮ পিএম
  • / ৪২৩ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

ল্যাজ কুকুরকে নাড়ায়৷ এ তো নতুন কিছু নয়, ভারতবর্ষের সংসদীয় রাজনীতিতে বহুবার এ জিনিস আমরা দেখেছি৷ ছোট দল, কয়েকজন এমএলএ বা কয়েকজন এমপি, কিন্তু হয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী। আমরা দেবেগৌড়াকে দেখেছি, আইকে গুজরালকে দেখেছি, চন্দ্রশেখরকে দেখেছি৷ বিভিন্ন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী হতে দেখেছি অনেককে যাদের হাতে রয়েছে মুষ্টিমেয় বিধায়ক৷ কিন্তু সেই বিধায়কদের সমর্থন ছাড়া সরকার তৈরি হবে না, তাই তাদের নেতা মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। মহারাষ্ট্রেও তাই হল৷ ৩৯ জন বিধায়কের নেতা মুখ্যমন্ত্রী৷ ১০৬ জন বিজেপি বিধায়ক দলের নেতা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবার ডেপুটি চিফমিনিস্টার৷ ওই ল্যাজ নাড়াচ্ছে কুকুরকে। কিন্তু আমাদের দেশের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাস এও বলে যে, এই ল্যাজ নাড়াচ্ছে কুকুরকে অবস্থায় সরকার টেঁকে না, টেঁকেনি। দেবেগৌড়া বলুন গুজরাল বলুন বা চন্দ্রশেখর, না একটাও টেঁকসই সরকার ছিল না৷ কেউ ৮, কেউ ১০, কেউ ৫ মাস টিঁকেছে৷ কারণ ল্যাজের কুকুরকে নাড়ানোর শক্তি থাকে না৷ অনিবার্য হয়ে ওঠে সংঘাত৷ তারপর এক সকালে আবার পালাবদলের খেলা৷

রাজ্যে রাজ্যে এ খেলা আমরা দেখেছি, আমরা দেখেছি পরস্পর বিরোধী রাজনৈতিক দল, বড় বড় আদর্শের দোহাই দিয়ে ভাগ হওয়া কমিউনিস্ট পার্টি, ভোটের সময় একে অন্যকে তীব্র সমালোচনা করে, গালিগালাজ দিয়ে রেজাল্ট বের হওয়ার পর, কেবল সরকারের গদিতে বসতে হাত মিলিয়েছে, মিলিয়েছিল দুই কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলা কংগ্রেস, একবার নয়, দুবার। হাত মিলিয়েছিল শিবসেনা, এনসিপি, কংগ্রেস৷ ফল আমরা জানি। বামফ্রন্টের অতগুলো দল মিলে মিশে চালিয়েছে, ৩৪ বছরের বাম সরকার। কারণ ল্যাজ কুকুরকে নাড়াচ্ছিল না৷ কুকুর ল্যাজকে নাড়াচ্ছিল৷ সিপিএমের একক গরিষ্ঠতা না থাকলে কবেই ওই সরকার ভেঙে যেত৷ যেমন গেল মহারাষ্ট্রে, যেমন গিয়েছে রাজ্যে রাজ্যে বহুবার৷ কেন্দ্রেও সরকার ভেঙেছে।

এবার মহারাষ্ট্রের সরকার সেই অর্থে এক ক্লাসিক উদাহরণ৷ মাত্র ৩৯ জন দলের নেতা মুখ্যমন্ত্রী, কেন? বিজেপির বক্তব্য শিবসেনা ভেঙেছে, আমাদের সাহায্য চেয়েছে, আমরা সমর্থন করেছি, সরকারে আসতে বললেও আমরা মুখ্যমন্ত্রী হইনি, আমরা উপমুখ্যমন্ত্রী পদেই সন্তুষ্ট। এবার সরকার খারাপ করলে একনাথ শিণ্ডের দায়৷ ভালো করলে বিজেপির লাভ। সেরকম বুঝলে আবার শিবসেনা ভাঙবে, আবার কিছু খরিদ বিক্রি হবে, তারপর বিজেপির সরকার হবে৷ নির্বাচন সেই সরকারকেই সামনে রেখে, বিরোধীরা তো সরকার টেঁকাতেও পারে না, আমাদের ভোট দিন, মিটে গেল। শিণ্ডে জানেন তিনি বাঘ, কিন্তু মুনির আশীর্বাদে তিনি একদা ইদুঁর থেকে বাঘ হয়েছেন৷ দেবেন্দ্র ফড়ণবীস জানেন আসলে শিণ্ডে বাঘ নন৷ কাজেই সেই কেমিস্ট্রি থেকে যাবে৷ প্রতিদিন প্রতিদিন দল ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসা শিণ্ডে সাহেবের মাথায় ঘুরবে, এই বুঝি গেল, এই বুঝি গেল৷ সামনে তাকালেই দেখতে পাবেন বিজেপির স্পিকার৷ বিজেপির একদা মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকে, তিনি বাঘের ওপরে সওয়ার হয়ে বসেছেন, বাঘ ছুটছে, থামলে খাবে, নামলেও খাবে। উদ্ধব ঠাকরের কী হবে? সেই অর্থে উনি বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে বটে, কিন্তু বালাসাহেবের তুলনায় কিছুই নন৷ বালাসাহেব মানে অমিতাভ বচ্চনের সরকার৷ বালাসাহেব নিজেই বলেছিলেন, সরকার ছবিতে সরকার ওনার অনেকটা কাছাকাছি। উদ্ধব ধারে কাছেও নেই৷ ছিলেন রাজ ঠাকরে৷ কিন্তু তিনি পিছিয়ে গিয়েছেন৷ আদিত্য ঠাকরেও এখনও শিশু। কাজেই এই মুহূর্তে শিবসেনার উঠে আসা, নতুন চেহারায় ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব।

কংগ্রেসের অবস্থা একবার ভাবুন, আস্থা ভোটে তাঁদের ৭ জন সদস্য হাজিরই থাকলেন না৷ তাহলে বিরোধী চেহারা একমাত্র শরদ পাওয়ার, ক্রিজ ছাড়বেন না বলেই রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হননি৷ এই মানুষটা সব হিসেব পালটে দিতে পারে, দেওয়ার ক্ষমতা আছে। মহারাষ্ট্র কেবল নয়, সারা দেশ জুড়েই রাজনৈতিক আলোচনার থেকে বাদ পড়ে গেছে মরালিটি, নৈতিকতা। কিসের নৈতিকতা, রাজনীতি মানে ক্ষমতা, রাজনীতি মানে যে কোনও মুল্যে ক্ষমতায় আসা। চলে গিয়েছে আদর্শ। কিসের আদর্শ? গান্ধীবাদ জুড়ে যাচ্ছে মার্কসবাদের সঙ্গে, মার্কসবাদ জুড়ে যাচ্ছে গান্ধীবাদের সঙ্গে৷ কেউ ভেবেছিল কখনও শিবসেনা কংগ্রেস জোট হবে? হয়েছে তো। কেউ ভেবেছিল ফায়ার ব্র্যান্ড সোশ্যালিস্ট নেতা জর্জ ফার্নান্ডেজ, বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবে? মিলিয়েছেন তো। নীতীশ – বিজেপির সরকার তো চলছে, পিডিপি বিজেপির সরকারও চলেছে, পরে ভেঙেছে। তার মানে আপাতত রাজনীতি নৈতিকতা আর আদর্শের ধারও ধারে না, পড়ে রয়েছে সেই রাজনীতি যার মূল লক্ষ্য ক্ষমতায় বসা৷ তার জন্য যা যা করা যায়, করছেন সব্বাই।

কিন্তু এরও পিছনে আর এক খেলা চলছে৷ কুকুর ল্যাজ নাড়াচ্ছে? ল্যাজ কুকুরকে নাড়াচ্ছে? নাকি অন্য আরেকজন কেউ দুজনকেই কন্ট্রোল করে? দুজনকেই নাড়াচ্ছে, পুতুল খেলছে এক দক্ষ বাজিগর, পর্দার আড়াল থেকে। এতদিন ধরে মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ির সরকার ছিল, মেট্রো কার শেডের জন্য ডেয়ারি অ্যারের জায়গা দেওয়া হয়নি৷ সমস্যা ছিল পরিবেশ নিয়ে৷ মুম্বই এর মধ্যে অতখানি জায়গা খানিকটা ফুসফুসের কাজ করতো, পরিবেশ আন্দোলনকারীদের তরফে বহু প্রতিবাদ হয়েছে, এই জায়গার গাছ কাটা নিয়ে। বলা যাক, এই ডেয়ারি অ্যারেটা কী? তখনও বম্বে মুম্বই হয়নি, কিন্তু শহর বাড়ছে, শহরের যত গরু মোষ, গোয়াল তাদেরকে পাঠানো হয়েছিল এই জায়গায়, তাই নাম ডেয়ারি অ্যারে। প্রচুর গাছপালার মধ্যে কিছু অফিসও ছিল, এদিকে মুম্বইয়ের নতুন মেট্রো হচ্ছে, উত্তর থেকে দক্ষিণ, মেট্রোর জন্য কারশেড তো লাগবেই৷ কিন্তু কারশেডের পিছনে চলছিল অন্য খেলা৷ একবার গাছ কাটা শুরু হলে ক্রমশঃ এগিয়ে আসবে বিল্ডার চক্র, সে কোটি কোটি টাকার খেলা, পিছনে গৌতম আদানির নামও শোনা যাচ্ছে।

যাই হোক উদ্ধব ঠাকরে এই অনুমতি দেননি৷ এদিকে শিণ্ডে সরকার এসেই ফাইল সই হয়ে গিয়েছে৷ গাছ কাটাও শেষ৷ স্বাভাবিক প্রশ্ন এত তাড়াহুড়ো কেন? এটাই কি তাহলে সরকার বদলের প্রাক শর্ত? ইহা করিলে উহা হইবে? সরকার এল, প্রজেক্ট পাস। আচ্ছা এই মেট্রো কারশেড তো জরুরি৷ মুম্বইয়ের ট্র্যাফিকের যা অবস্থা তাতে এই মেট্রো না হলে আর কিছুদিন পরে মুম্বইতে গাড়ি নিয়ে বের হওয়াও যাবে না৷ তাহলে? আসলে পৃথিবীর অন্য জায়গায় কী হয়েছে সেটা দেখলেই এই সমস্যার খানিকটা সমাধান তো বেরিয়েই আসবে৷ ৫০ এর দশকে এই বাংলাতেও হয়েছিল, জমি দখল না করে জমি তৈরি করে নেওয়া হয়েছিল, সল্টলেক ছিল জলা জায়গা, সেখানে গঙ্গার পলি এনে ফেলে তৈরি করা হল জমি৷ পৃথিবীর বহু জায়গাতেই হয়, সমুদ্রের ধারে সেটাই সবথেকে সুবিধের, শহর বড় হল, কিন্তু জমি দখল হল না৷ মুম্বইয়ের ধারে সমুদ্র থেকে এই জমি তৈরি করাই যেত, কিন্তু তাহলে সেখানে, ওই মেট্রো কারশেডের পাশে গজিয়ে ওঠা মাল্টি স্তোরিড বিল্ডিং ও চোখে পড়তো, এখানে তা চোখে পড়বে না এবং জমি বুঁজিয়ে করতে খরচ আর সময় অনেক লাগবে৷ অতএব বনা বনায়া আসমান খরিদ লো, এই হল আসল প্ল্যান। মনে পড়েই যাচ্ছে রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,
ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।
পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,
মূর্তি ভাবে আমি দেব–হাসে অন্তর্যামী।

আমরা ভাবছি শিবসেনার মধ্যের লড়াই, আমরা ভাবছি রাজনীতির কথা, আমরা ভাবছি স্পিকার পদে বিজেপির প্রার্থী জিতবে কি না, আমরা ভাবছি একনাথ শিণ্ডে আস্থা ভোটে জিতবেন কি না, এদিকে পুরোটাই এক স্ক্রিপটেড গেম৷ উদ্দেশ্য আমাদের জানাও নেই, সবটাই পূর্বনির্ধারিত এক সুচতুর পরিকল্পনা৷ আমরা জানতেও পারলাম না৷ এদিকে স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী এক সরকার চলে যাচ্ছে, আরেক সরকার আসছে, নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, ওদিকে কোনও পাঁচতারায় বসে গেলাসে গেলাসে ঠোকাঠুকি, উল্লাস, উল্লাস,অন্তর্যামীরা বসে হাসছেন, বাঃ বেশ, বাঃ বেশ, ধরা যাক কয়েকটা ইদুঁর এবার। কিছুদিন পরে আবার নতুন কোনও চিত্রনাট্য, নতুন কোনও খেলোয়াড়, নতুন কোনও দল, আবার মানুষ তর্কে নামবে, সমর্থকেরা রাস্তায় মিছিল করবে, আবার অন্তর্যামীরা নতুন করে হাসবেন, হ্যা হ্যা করে হাসবেন

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মে মাসে কেরিয়ারে বড় উন্নতি হবে ৫ রাশির জাতকের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আচমটাই ঝড়-বৃষ্টি মেদিনীপুর জুড়ে, বাকি জেলায় কবে?
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসুস্থ অভিনেতা সোহম, ভর্তি হাসপাতালে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বিশ্বকাপে খেলতে পারেন রিঙ্কু, আছে আইসিসির এই নিয়ম
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
খড়গ্রামের ঘটনায় গ্রেফতার ৭, এখনও অধরা অনেকে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কুণাল কি বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন, জল্পনা তুঙ্গে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কাল, বৃহস্পতিবার সকালে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
ভোটদানের হার বাড়ল কী করে? প্রশ্ন মমতার
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
আমাকে কি অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে, প্রশ্ন কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের পদ খুইয়ে বিস্ফোরক কুণাল
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কর ফাঁকি দেওয়া ৫ লক্ষের সিমকার্ড ব্লক করছে পাকিস্তান
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
সলমানের বাড়ির বাইরে গুলি: অভিযুক্তের মৃত্যু
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
Aajke | দেশের আইন কানুনের উপর এতটুকুও আস্থা নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা বিজেপি নেতাদের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ গেল কুণালের
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
Fourth Pillar | এই নির্বাচনের সময়েই দাবি তুলুন, আমাদের মৌলিক অধিকার ফেরত পেতে চাই
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team