Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: গণতান্ত্রিক সার্কাস এবং ভারতীয় জনতা পার্টি
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২, ১০:৪৫:৫৮ পিএম
  • / ২৯৬ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

মনে আছে গ্রেট ডিকটেটরের ওই দৃশ্যটা? সেই গ্রেট ডিকটেটর গোটা পৃথিবীটাকে নিয়ে খেলছে৷ সেই গ্লোব ওপরে উঠছে, নীচে নামছে, গ্রেট ডিকটেটর কখনও হাত দিয়ে কখনও পা দিয়ে, কখনও বা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ দিয়ে তাকে ঠেলে দিচ্ছে, খেলছে, তার মুখে কী অসীম পরিতৃপ্তি৷ আহা কী আনন্দ! সারা পৃথিবী হাতের মুঠোয়, সারা পৃথিবী আমার বশে, সারা পৃথিবীর মানুষকে শাসন করছি আমি, যেমন খুশি তেমন ভাবে, আমি ছুঁড়ে দেব, আমিই লুফে নেব। আসলে কি তা সত্যি ছিল? না ছিল না৷ পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষেরা জড়ো হচ্ছিল, স্বৈরতন্ত্র মানুষ মেনে নেয়নি৷ মেনে নেয় না বলেই, শত শত সাম্রাজ্য ভেঙে যায়, ধুয়ে যায়, মুছে যায়, ওরা কাজ করে।
মাটির পৃথিবী-পানে আঁখি মেলি যবে
দেখি সেথা কলকলরবে
বিপুল জনতা চলে
নানা পথে নানা দলে দলে
যুগ যুগান্তর হতে মানুষের নিত্য প্রয়োজনে
জীবনে মরণে
ওরা চিরকাল টানে দাঁড়, ধরে থাকে হাল
ওরা মাঠে মাঠে
বীজ বোনে, পাকা ধান কাটে
ওরা কাজ করে
নগরে প্রান্তরে
রাজছত্র ভেঙে পড়ে
রণডঙ্কা শব্দ নাহি তোলে
জয়স্তম্ভ মূঢ়সম অর্থ তার ভোলে
রক্তমাখা অস্ত্র হাতে যত রক্ত-আঁখি
শিশু পাঠ্য কাহিনীতে থাকে মুখ ঢাকি।

ঠিক এই সময়ে দাঁড়িয়ে বিজেপি দল৷ তাদের নেতাদের দেখলে ওই স্বৈরতান্ত্রিক চেহারাটা বোঝা যায়৷ গণতন্ত্র নিয়ে তারা খেলা করছে, ছুঁড়ছে, ফেলছে, লুফছে৷ এক খেলনার মত। হা হা করে হাসছে প্রতিটা পদক্ষেপে। আমাদের দেশ যারা স্বাধীন করেছিল, দেশের সংবিধান যারা লিখেছিল, তার জন্য যে বলিদান তাদের দিতে হয়েছে, যে মূল্য তাদের চোকাতে হয়েছে, সবটা আজ মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। সংবিধান, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা সবটাই আজ বিজেপির হাতে খেলনা, বিজেপির খেলার জিনিস। আমাদের বিরোধিতা করবে? ইডিকে পাঠাচ্ছি, ইডি আসবে, রোজ, রোজ, দেশের বিরোধী দলের সর্বোচ্চ নেতাকে ৫০ ঘন্টা জেরা করা হয়ে গেছে, আরও হবে, গ্রেফতারও করা হতেই পারে, প্রতিবাদ করবেন? আপনাকেও ওই একই কায়দায় বা আরও অন্য কায়দায় সরিয়ে দেওয়া হবে, বাংলায় বিরোধিতা হচ্ছে, ইডি আসছে, সিবিআই আসছে, আজ ১০ বছর পার হতে চললো নারদা মামলা, চলছে তো চলছে, মাঝে মধ্যে জেরা, আর জেরার পরে সিলেকটিভ লিকেজ, কিছু খবর চলে যাবে পোষা ডালকুত্তাদের কাছে, যারা নিজেদের সংবাদমাধ্যম বলে। দেশের প্রত্যেক বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে হয় সিবিআই, নয় তো ইডি, নাহলে অন্য কোনও ভিজিলেন্স, মামলা, জেল হাজত, লেগেই রয়েছে, চলছে তো চলছেই৷ নির্বাচন আসলেই উদয় হয় তারা। আর সেই মামলার ভয়? অনেকেই পায়, কেউ কেউ লড়তে থাকে, মাথা না নুইয়ে৷ কেউ কেউ না লড়েই সারেন্ডার করে৷ যেমনটা কাঁথির খোকাবাবু করেছে৷ কেউ কেউ বন গয়া পাগলা৷ সেদিন দু’জনে গান গাইছে, নাচছে, লোকে খিল্লি করছে, যেন পাগল ভোলানাথ৷ বন্ধ ফ্যাক্টরির তার চুরি করে সিনেমা দেখতে যেত যে, সে আজ ৬০০ কোটি টাকার মালিক৷ কিন্তু বন গয়া পাগলা, আজ তৃণমূল, কাল বিজেপি, পরশু অভিমান, তারপরের দিন দিদি, আবার পরের দিন মিডিয়ার সামনে সাংঘাতিক ইংরিজিতে কী সব বলল, বোঝাই গেল না বিজেপি ওনাতে জয়েন করেছে, না উনি বিজেপিতে৷

যাই হোক শেষমেষ মাঝে মধ্যেই খবরে আছেন বটে কিন্তু সেদিন দু’জনে নেচে, গান গেয়ে, জামাইষষ্ঠীতে ইলিশ খেয়ে, বন গয়া পাগলা, ইডি আর আসছে না, সিবিআই ডাকছে না। মাথা নুইয়ে দাও, বিজেপির কাছে বিকিয়ে দাও নিজেকে, সিবিআই আর আসবে না, ইডি আর আসবে না৷ ক্লিনচিট নিয়ে কাঁথির খোকাবাবু ঘুরে বেড়াচ্ছে, অথচ আমরা দেখেছি, ক্যামেরার সামনে উনিও নিয়েছিলেন টাকা, হ্যাঁ নিয়েছিলেন। আর যদি এম হয়, বিরোধী কিন্তু তার কাছে সিবিআই গেলে, ইডি গেলে লোকে হাসবে, তাহলে তাকে আর্বান নকশাল বলে জেলে পুরে দাও, পচুক জেলে। ধর্মনিরপেক্ষতা? আদিত্য যোগীকে দেখুন, নরেন্দ্র মোদি বা শাহ বা বিজেপির নেতা মন্ত্রীদের দেখুন, ওরকম কোনও শব্দ আছে, তাই জানা নেই৷ সারাদিন, ৩৬৫ ইন্টু ২৪, কাজ হল হিন্দু মুসলমান বিষ ছড়ানো, দাঙ্গা লাগানো। এবং সেই প্রসেসেই জন্ম নিচ্ছে নূপুর শর্মা, নবীন জিন্দলদের দল৷ মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ এসেছে, ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতি হবে, তাই আপাতত লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা৷ এর পরে নির্বাচনে এই দু’জন জিতে আসবেন৷ যেমন জিতে এসছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা৷ ভোপাল থেকে বিজেপির এমপি প্রকাশ্যে বলেছেন নাথুরাম গডসে একজন দেশপ্রেমিক ছিলেন৷ নরেন্দ্র মোদি ওনাকে জেলে পোরেননি৷ দল থেকে তাড়িয়ে দেননি৷ সাংসদ পদ কেড়ে নেননি৷ কেবল দুঃখ পেয়েছেন, কেবল দুঃখ।

দেশের প্রত্যেকটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আজ আরএসএস–বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে৷ বিচার থেকে শুরু করে প্রশাসন এবং অন্যায় কাজ করছে, সংবিধান বিরোধী কাজ করছে, প্রকাশ্যে, ভালো লাগলে হাততালি দিন, খারাপ লাগলে বয়েই গিয়েছে৷ দেশ কে গদ্দারো কো, গোলি মারোঁ শালোঁ কো বলার পরে প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ক্যাবিনেট মন্ত্রী হয়ে গেল, ভাবা যায়? সেই নোংরা খেলার আর এক চ্যাপটার সবে খুলেছে মহারাষ্ট্রে৷

এই প্রথম নয়৷ প্রথমে এনসিপিকে ভেঙে সেই ভাঙা দলের নেতাকে সামনে রেখে বিজেপি জোট সরকার তৈরি করল৷ ভোর চারটেয় রাজ্যপালের ঘুম ভাঙিয়ে শপথ গ্রহণ করার পরেও শেষরক্ষা? না হয়নি। এরপর আবার বছর দুয়েক আগে, গেল গেল গেল, সরকার গেল৷ সেবারেও হয়নি। হঠাৎ এবার শোনা গেল শিবসেনা এমএলএ একনাথ শিন্ডে ৯/১০ জন শিবসেনা এমএলএ নিয়ে চলে গিয়েছেন গুজরাতে৷ আছেন এক দারুণ রিসর্টে। গুজরাতে কেন? কারণ পরিষ্কার৷ গুজরাট মোদিজির হোম স্টেট। তারপর জানা গেল ১০ নয়, ২৪ জন শিবসেনা এমএলএ সঙ্গে আছেন৷ শিবসেনা নেতাও সেখানে চলে গেলেন, যোগাযোগ করলেন, তাহলে কি প্ল্যান ভেস্তে যাবে?

এইসব সম্ভাবনার মধ্যেই সেই একনাথ শিন্ডে এবং শিবসেনা এমএলএরা চলে গেলেন অসম৷ রাজ্যে বন্যা৷ তাতে কী সাত সকালে মুখ্যমন্ত্রী আর এক দলবদলু হিমন্ত বিশ্বশর্মা চলে গেলেন পাঁচতারা হোটেলে৷ তাদের ব্যবস্থা করতে, এমএলএরা এলেন৷ এবার জানা গেল কেবল শিবসেনা নয়, নাকি ৬ জন কংগ্রেস বিধায়ক ও আছেন, কি মজার তাই না? মহারাষ্ট্রে সরকার ভাঙতেই হবে, যেন তেন প্রকারেন৷ সাম দাম দন্ড ভেদ, যা লাগে লাগুক। আগে দল ভাঙা হ নি? কিন্তু এভাবে? এক রাজ্য থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হল গুজরাত, তারপর অসম। মহাবিকাশ আগাড়ির সরকার ভাঙতে হবে। কী নোংরা প্রিসিডেন্স, উদাহরণ রেখে যাচ্ছে এই আরএসএস – বিজেপি৷ নীতি নৈতিকতার ধারও ধারে না। এই একই খেলা হয়েছে আগে গোয়াতে, হয়েছে মধ্যপ্রদেশে, কর্নাটকে। বিজেপির সরকার তৈরি হয়েছে। তার মানে কী দাঁড়াল? মানে হল মানুষ যাকে ইচ্ছে হয় ভোট দিক৷ আমরা সরকার তৈরি করলে ভালো, না তৈরি করতে পারলে এমএলএ কিনে নেব৷ টাকার জোগানদার আছে৷ জোগানদারেরা টাকা না দিলে সেখানেও চলে যাবে ইনকাম ট্যাক্স, সিবিআই, ইডি। এবং ওই গ্রেট ডিকটেটরের মত আরএসএস বিজেপির মনে হয়েছে, এ এক পার্মানেন্ট ব্যবস্থা, চিরকাল এরকমই চলবে। হ্যাঁ চেঙ্গিজ খান থেকে নেবুচাদনেজার থেকে সিজার, হিটলার থেকে মুসোলিনী, তোজো এরকমই ভেবেছিল৷ কিন্তু শেষমেষ সে সব স্বৈরতন্ত্র টেকেনি৷ মানুষ থাকবে, মানবতা থাকবে, গণতন্ত্র থাকবে, ভাইচারা থাকবে,
অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের সমুদ্র-নদীর ঘাটে ঘাটে
পাঞ্জাবে বোম্বাই-গুজরাটে
গুরুগুরু গর্জন গুন্‌গুন স্বর
দিনরাত্রে গাঁথা পাড়ি দিনযাত্রা করিছে মুখর
দুঃখ সুখ দিবসরজনী
মন্দ্রিত করিয়া তোলে জীবনের মহামন্ত্রধ্বনি
শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ-‘পরে
ওরা কাজ করে।
মানুষ থাকবে, অমানুষেরা নয়।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বাংলায় জন্ম নিতে চলেছি বলে মালদহে আবেগে ভাসলেন মোদি
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
শাহজাহান ঘনিষ্ঠের বাড়িতে মাটির নিচে অস্ত্র ভাণ্ডারের হদিশ
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
তৃণমূলের জন্য়ই ২৬ হাজারের চাকরি গেল, মালদহে তোপ মোদির
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
তামান্নাকে সমন মহারাষ্ট্র পুলিশের
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
স্ত্রী-ধনে অধিকার শুধু স্ত্রীর, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
ব্যালটে নয়, ভোট হবে ইভিএমেই, ভিভি প্যাট মামলায় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
ভিভিপ্যাট খারাপ, গঙ্গারামপুরে থমকে ভোটপ্রক্রিয়া
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
বুথ থেকে বেরিয়েই ফের মোদিকে নিশানা প্রকাশের!
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
তৃণমূল-কংগ্রেস তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছে, মালদহে অভিযোগ মোদির
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
১৫ দিন ধরে পাল্লা দিয়ে লোডশেডিং, প্রতিবাদে পথ অবরোধ স্থানীয়দের
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
বিজেপিকে ভোট দিন, তৃণমূল প্রার্থীর নামে লিফলেট ঘিরে বিতর্ক!
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
এই রাজ্যে সভ্যভাবে ভোট হওয়া মুশকিল, বললেন মিঠুন
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
পানিহাটিতে সৌগত রায়ের নামে ব্যানার ছেঁড়া হল
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
স্টার্ক কি আজ বাদ? কী হবে নাইট একাদশ?
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দলীয় পতাকা ড্রেনে ফেলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team