Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: অযোধ্যার পরে এবার ইস্যু জ্ঞানবাপী মসজিদ, আবার দাঙ্গা, আবার মেরুকরণ
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ মে, ২০২২, ১০:১১:০৮ পিএম
  • / ৯০০ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

চারিদিকে সাজো সাজো রব, শিব লিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে ওজু করার জলাশয়ে৷ আদালত বলেছে, দেখা হোক, পরীক্ষা হোক, তার আগে জায়গাটাকে সিল করার আদেশও এসেছে৷ দেশের হিন্দুত্ববাদীদের প্রতিক্রিয়াও আসছে৷ পুরনো স্লোগান উঠছে, অযোধ্যায় তো পহলি ঝাঁকি হ্যায়, কাশি মথুরা বাকি হ্যায়। কেউ কেউ তিন নহিঁ হ্যাঁয়, তিন হাজার, মানে কেবল অযোধ্যা, কাশি, মথুরাই নয়, আরও তিন হাজার এমন মুসলিম, ক্রিস্টান উপাসনালয় আছে, যা হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছে, সেগুলো আবার মন্দিরে রুপান্তরিত হবে৷ মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা জয়ভান সিং পবৈয়া বলেছেন, পাণ্ডবরা মাত্র ৫ টা গ্রাম চেয়েছিল, কৌরবরা দেয়নি৷ কৌরবদের কেউ বাঁচেনি৷ এই কথা মাথায় রেখেই আমাদের মন্দির আমাদের ফেরত দেওয়া হোক, নাহলে……

নাহলে কি হবে?

ওই যে কৌরবদের একজনও বাঁচেনি, উদাহরণ তো দিয়েই রেখেছেন। সংবিধান আছে, আইন আছে, মৌলিক অধিকার আছে এবং এই সব কিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রকাশ্যে এই হুমকি ও আছে, বিরোধিতা করলে৷ প্রতিবাদ করলে, ভালোয় ভালোয় আমাদের ইচ্ছে না মেনে নিলে নির্বংশ হতে হবে। আমাদের মধ্যযুগের ইতিহাস ঘেঁটে, তার বিভিন্ন বর্ণনার থেকে, যা যা পাওয়া যাবে, আজ তার হিসেব নিকেশ করার পালা, নিক্তিতে মেপে হিসেব করা হবে। তাহলে বিকাশ? উন্নয়ন? ফাইভ ট্রিলিয়ন ইকোনমি? মেক ইন ইন্ডিয়া? ওসব ভড়কিবাজি, ওসব জুমলা, ওসব রাখুন৷ ৩৫০ বছরেরও বেশি মুসলমান শাসনের সময় যত হিন্দু মারা গিয়েছে, যত মন্দির ভাঙা হয়েছে, যত বাড়ি ঘরদোর লুঠ হয়েছে, যত অত্যাচার হয়েছে, আগে তার বিচার চাই, সেই সমস্ত অন্যায়ের বিচার চাই, সে সব চুকে বুকে গেলে, উন্নয়ন, বিকাশ, এসব নিয়ে ভাবা যাবে৷ তখন বসে ভাববো অর্থনীতির কথা, শিল্পের কথা৷ তখন চাকরির কথা ভাবা যাবে৷ আপাতত কাশী আর মথুরা, আর তিন হাজার মন্দির নিয়ে ভাবা যাক।

কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না৷ কারণ ১৯৯১ এর প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট, বাবরি মসজিদ নিয়ে যখন বিতর্ক আর উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন আদালতের মাধ্যমে সেই বিতর্কের সমাধানের জন্য সংসদে প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট আনা হয়েছিল৷ এনেছিলেন নরসিংহ রাও এর সরকার৷ বলা ছিল একমাত্র বাবরি মসজিদ ছাড়া দেশের যে কোনও উপাসনাস্থল ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টে, যেরকম ছিল, সেই রকমই থাকবে৷ মানে যে ধর্মের, যে ধর্মীয় গোষ্ঠীর মানুষেরা সেখানে তাদের উপাসনা করত, পুজো অর্চা করত, নমাজ পড়ত, প্রার্থনা করত, তারাই সেই উপাসনালয় চালাবে৷ এর কোনওরকম পরিবর্তন করা যাবে না৷ বাবরি মসজিদ নিয়ে বিতর্ক আদালতে বিবেচনা করা হচ্ছে, আদালত যা রায় দেবে সব পক্ষ তা মেনে নেবে। অবশ্যই, বিজেপি এই আইন পাশ করার পক্ষে ভোট দেয়নি, তারা ওয়াক আউট করেছিল। কিন্তু আইন পাশ হয়েছিল। এটা ১৯৯১ সাল।

এরপর বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়, পরিকল্পনা করে ভাঙা হয়৷ যখন শতাব্দী প্রাচীন এই ইমারত ভাঙা হচ্ছে তখন আনন্দাশ্রু আটকাতে পারেননি লালকৃষ্ণ আদবানি৷ স্লোগান উঠছিল, অযোধ্যা পহেলি ঝাঁকি হ্যায়, কাশী, মথুরা বাকি হ্যায়। কিন্তু কতটা ক্লীব এই আরএসএস – বিজেপি নেতারা, তাঁরা আদালতে সামনে জোর দিয়ে বলতে পারলেন না যে, হ্যাঁ আমরাই এটা করেছি, সে ধক ওই মুচলেকাজীবিদের ছিল না, নেইও। ভগৎ সিং বোমা ফেলেছিলেন আইনসভায়৷ বুক চিতিয়ে বসেছিলেন সেই কথা, দেশদ্রোহের অভিযোগ এসেছিল গান্ধিজীর বিরুদ্ধে, বিচারকের চোখে চোখ রেখে তিনি বলেছিলেন, আমি স্বাধীনতার কথা বলেছি, এটা আমার অধিকার, আবার বলবো, জেল খাটবো, ক্ষমা চাইবো না, জেলে গিয়েছিলেন। আদবানি, যোশী, উমা ভারতীর দলের সেই মনের জোর ছিল না৷ পিছন থেকে উস্কানি দিয়ে, পরিকল্পনা করে মসজিদ তো ভাঙলেন, কিন্তু ভেঙেছি বলার সৎ সাহস ওনাদের ছিল না। সে যাই হোক, তারপর মামলা চলতে থাকে, ৯ নভেম্বর ২০১৯ এ অযোধ্যা বাবরি মসজিদ বিতর্কের রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ ৫ জনের বেঞ্চ এর এই রায়ে বলা হল, ওই মসজিদ রামজন্মভূমি ছিল কি না তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি৷ কেউ বা কয়েকজন সেখানে একটি রামমূর্তি বসিয়ে দিয়ে আসে, শতাব্দী প্রাচীন মসজিদটি জোর করেই ভাঙা হয়েছিল৷ কিন্তু বিতর্কিত জমিটি এক ট্রাস্টের হাতে দেওয়া হবে, যারা রাম মন্দির তৈরি করবে, অন্য কোনও জায়গায় ৫ একর জমি মুসলমানদের হাতে তুলে দেওয়া হবে, সেখানে তারা তাদের উয়াপাসনালয় গড়ে তুলুক।

রামমন্দিরের ভূমিপূজনের জন্য হাজির থাকলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, এক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী, বিরাট রামমন্দির তৈরি হবে৷ ওদিকে মুসলমান ওয়াকফ বোর্ড থেকে জানানো হল, তারাও এক বিরাট মসজিদ তৈরি করবেন, তারসঙ্গে তৈরি হবে এক বিরাট হাসপাতাল, তার ছবি প্রকাশ করা হল। সাধারণভাবে রায়ের এই অংশটুকু নিয়ে প্রচুর আলোচনা হল, সমালোচনাও হল, কিন্তু এখনও যে ছিঁটেফোটা সম্মান বেঁচে আছে সুপ্রিম কোর্টের, তা মাথায় রেখে প্রত্যেকেই মেনে নিল। কিন্তু ওই রায়ের ভিতরে, আরও বেশ কিছু কথা সেদিন বিচারকেরা বলেছিলেন, যা আর একবার সব্বাইকে মনে করিয়ে দেওয়াটা দরকার৷

তিনটে কথা, তিনটে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা। প্রথম কথা যেটা বিচারকরা বললেন, তা আসলে আরও একবার, ১৯৯১ প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট মনে করিয়ে দেওয়া৷ তাঁরা বললেন, রাম জন্মভূমি বিতর্কের অবসান হল৷ এখানেই শেষ হোক৷ প্লেস অফ ওয়ারশিপ অ্যাক্ট মেনে কোনও পক্ষই, আর কোনও বিষয় নিয়ে বিতর্ক তুলবেন না। রায়ে বলা হল, In providing a guarantee for the preservation of the religious character of places of public worship as they existed on 15 August 1947 and against the conversion of places of public worship, Parliament determined that independence from colonial rule furnishes a constitutional basis for healing the injustices of the past by providing the confidence to every religious community that their places of worship will be preserved and that their character will not be altered. The law addresses itself to the State as much as to every citizen of the nation. Its norms bind those who govern the affairs of the nation at every level. Those norms implement the Fundamental Duties under Article 51A and are hence positive mandates to every citizen as well

দ্বিতীয় যা বললেন, সেটা আরও গুরুতর৷ Even if a future Parliament in its wisdom decided to repeal or amend this law, this judgment would come in the way as the judges had placed the spirit of “non-retrogression” at the heart of our secular Constitution, as part of its basic features. A foundational feature of fundamental principles of the Constitution. Which, we know, can’t be amended. মানে সংসদ চাইলেও এই আইনকে পাল্টাতে পারে না৷ পারে না কারণ এই আইন সংবিধানের মূল নীতিকেই ধরে আছে৷ সেই নীতি হল ধর্মনিরপেক্ষতা, সংবিধানের মূল নীতি কোনওভাবেই বদল করা যাবে না৷ এটা সুপ্রিম কোর্টের রায়। তৃতীয় যা বললেন, তা এক শাশ্বত সত্য৷ আমাদের উপনিষদ বলেছে, চরৈবেতি, চরৈবেতি, এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো, জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, আমরা শুনেছি ওই, মাভৈ মাভৈ মাভৈ, কোন নূতনেরই ডাক। বিচারকরা বললেন, আবেদন রাখলেন সবার কাছে, যা হয়ে গিয়েছে, তা থাক, আমরা নতুন পথে বের হই, নতুন ভারতবর্ষের জন্য একসঙ্গে কাজ করি, হ্যাঁ সেদিন বিচারকেরা বলেছিলেন।

কিন্তু আজ আবার সেই গর্ত খোঁড়া হচ্ছে, আবার সেই মধ্যযুগীয় আবর্জনা বের করা হচ্ছে৷ আবার সেই মধ্যযুগীয় চোখের বদলে চোখ, রক্তের বদলে রক্তের থিওরিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে৷ হিন্দু শৈবরা ভেঙেছে বৈষ্ণবদের মন্দির, উপাসনালয়, মুসলমান সম্রাটরা ভেঙেছে হিন্দু উপাসনালয়, হিন্দু রাজা চার্চ ভেঙেছে, খ্রিস্টান সাহেব মন্দির ভেঙেছে৷ এসব তো ইতিহাস৷ কোথাও সম্পত্তির জন্য, কোথাও ব্যক্তিগত শত্রুতার জন্য, কোথাও বা বিবেচ্য ছিল কেবল ধর্ম, কিন্তু আজ সেটাই আমাদের সমাজের, দেশের বিবেচনার বিষয়? নিশ্চই নয়। কিন্তু আরএসএস –বিজেপি, মোদি–শাহ জানেন, তাঁরা এক বাঘের পিঠে সওয়ার হয়ে গিয়েছেন৷ বাঘ রক্ত চাইবে, মাংস চাইবে, তাকে তা দিতেই হবে, আর পিঠ থেকে নামলেই বাঘ তাদের খাবে, কাজেই আরএসএস–বিজেপিকে টিঁকে থাকতে হলে রোজ এরকম মধ্যযুগীয় গড়ামুর্দা, কবর থেকে মৃতদেহ তুলতেই হবে৷ তাঁরা সেই কাজটাই করছেন। ওদিকে আজই প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু টুইট করে জানিয়েছেন, গত ২৫ বছরের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির সাক্ষী আমরা, ইনফ্লেশন ছুঁইয়েছে ১৫%, এর ফলে ছোট ব্যবসা বন্ধ হবে, বেকারত্ব আরও বাড়বে। এবার নিন, বিচার করুন, কী নিয়ে রাস্তায় নামবেন? বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি? নাকি জ্ঞানবাপী মসজিদ?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

ভালো সুযোগ আসছে এইসব রাশির জাতকের জীবনে 
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট শেষ হতেই বোমাবাজিতে উত্তপ্ত শীতলকুচি
শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
ভোট শেষ হওয়ার দুঘন্টার মধ্যেই বিজয় মিছিল তৃণমূল–বিজেপি
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
প্রথম দফায় ১০২ কেন্দ্রে কোন কোন হেভিওয়েটের ভাগ্য চূড়ান্ত হল
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
Stadium Bulletin | স্টার্ককে যদি হাবাসের হাতে ছাড়া যায়?
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
এসএসসি মামলার রায় সোমবার
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
শক্তিপুর ও বেলডাঙার ওসিকে সাসপেন্ড করল কমিশন
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
কয়লা পাচার মামলায় জয়দেবের জামিনের আর্জি খারিজ হাইকোর্টে
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
রেকর্ড! টানা ৬১৩ দিন কোভিডে আক্রান্ত থেকে মৃত্যু
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
৪০ ডিগ্রিতে ফুটছে কলকাতা
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
মণিপুরে ৫ বুথে বন্ধ ভোট, নাগাল্যান্ডে ভোট বয়কট ৬ জেলায়
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন রূপাঞ্জনা-রাতুল
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে রাজ্যে আসছে আরও ৩০ কোম্পানি বাহিনী
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মমতার
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলার তিন কেন্দ্রে ভোটের মোট হার ৭৭.৫৭ শতাংশ
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team