কলকাতা: দলীপ ট্রফি (Duleep Trophy) থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। উঠতি প্রতিশ্রুতিমান খেলোয়াড়দের জন্য জায়গা করে দিতেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। ভারতের অন্যতম সেরা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট দলীপ ট্রফি, জাতীয় দলের দরজায় কড়ানাড়া দেওয়ার বাসনায় এই প্রতিযোগিতায় খেলে উঠতি ক্রিকেটাররা। সেই কারণেই নাম তুলে নিলেন ঋদ্ধি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য দলীপ ট্রফিতে খেলতে পারছেন না ঈশান কিষাণ (Ishan Kishan)। তাঁর জায়গায় পূর্বাঞ্চলের (East Zone) টিমে ঋদ্ধিকে নিতে চেয়েছিলেন ত্রিপুরার নির্বাচক জয়ন্ত দে। এ নিয়ে ৩৮ বছর বয়সি ঋদ্ধিকে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি খেলতে চাননি। জয়ন্ত দে-কে ঋদ্ধি বলেন, জাতীয় দলে ঢোকার চেষ্টা করছে এমন কোনও তরুণ ক্রিকেটারের সুযোগে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চান না। কারণ জাতীয় দলে তাঁকে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এরপর বাংলার অভিষেক পোড়েলকে (Abhishek Porel) পূর্বাঞ্চলের ফার্স্ট চয়েস উইকেটকিপার হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
ত্রিপুরার নির্বাচককে ঠিক বলেছিলেন ঋদ্ধি?
আরও পড়ুন: The Ashes | আজ থেকে শুরু ঐতিহ্যের অ্যাশেজ সিরিজ, জানেন এর মাহাত্ম্য কী?
ভারতের হয়ে খেলতে প্রত্যাশীদের জন্য দলীপ ট্রফি। আমি যদি কোনও দিন দেশের হয়ে না-ই খেলতে পারি, তবে তরুণ ক্রিকেটারের রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কোনও মানে হয় না।
বরাবর শান্ত, নির্লিপ্ত মানুষ বাংলার পাপালি। ভালো সময় হোক কি মন্দ, আবেগকে সংযত রাখেন। সেই সঙ্গে এক বড় হৃদয় রয়েছে তাঁর। দলীপ ট্রফির এই ঘটনার জন্য নয়, এর আগেও তাঁর মহানুভবতার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে তাঁকে বসিয়ে যাঁকে দলে নেওয়া হয়েছিল, সেই কে এস ভরত দস্তানা হাতে খাবি খাচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেছিল কলকাতা টিভি। ঋদ্ধি তখন ভরতকে নিয়ে যথেষ্ট সহানুভূতিশীলতা দেখান। বলেন, প্রথম এত বড় ম্যাচ, হয়তো স্নায়ুর চাপে রয়েছে। এমনকী আইপিএল চলাকালীন গুজরাত ক্যাম্পে প্রয়োজন হলে ভরতকে সাহায্য করবেন বলে জানান।
অথচ এই ক্রিকেটারের সঙ্গে কী অবিচারটাই না করা হয়েছে। হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তুমি তল্পিতল্পা গোটাতে পারো, তোমাকে আর জাতীয় দলের জন্য ভাবা হচ্ছে না। এটা কোন ধরনের অসভ্যতা? কাউকে বাদ দিতে হলে প্রথা অনুযায়ী দল ঘোষণা করলেই মিটে যেত। যে লোকটা দস্তানা হাতে এখনও পৃথিবীর সেরা, তাঁকে মুখের উপর অপমান করা হয়েছিল। কিন্তু ঋদ্ধি দেখিয়ে দিলেন, তাঁর সঙ্গে যতই অন্যায় হোক, তিনি অবিচল থাকবেন, নিজের কর্তব্য করে যাবেন।