আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তারপরই কাতারে শুরু হতে চলেছে ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে বারবার উঠে আসছে পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা। কফিনের ওপর বিশ্বকাপ! এভাবেই কাতার বিশ্বকাপকে কটাক্ষ করছে বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন। কাতারে স্টেডিয়াম থেকে মেট্রো, বিমানবন্দর সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোগত কাজ তৈরিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক। যদিও মৃত্যুর সংখ্যা ধামাচাপা দিতে কাতার প্রশাসনের দাবি মাত্র ৩৭জন মারা গিয়েছেন বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম ও পরিকাঠামো তৈরির কাজে। তবে কাতারের সেই দাবি একেবারেই ধোপে টেকেনি।
মোটের ওপর সবাই মেনে নিয়েছেন, কাতারে এই যে চোখধাঁধানো বিশ্বকাপ হতে চলেছে, তার পিছনে লেগে অনেক রক্ত, অনেক না বলা যন্ত্রণা, খিদের কাহিনি। ২০১০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েই কাতার তাড়াহুড়ো করে স্টেডিয়াম ও পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করে দেয়। মাত্র ৩০ লক্ষের দেশে অত শ্রমিক ছিল না। তাই ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মত দেশ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে এসে শুরু হয় ৮টি স্টেডিয়াম, ঝাঁ চকচকে নয়া বিমানবন্দর, অত্যাধুনিক মেট্রো সহ তাক লাগিয়ে দেওয়া বিশ্বকাপ আয়োজনের কাজ। কিন্তু কয়েকশো কোটি টাকার বিশ্বকাপে পরিযায়ী শ্রমিকদের একেবারে স্বস্তায় দিন রাত এক করে খাটিয়ে নেওয়া হয়। ৫০-৫২ ডিগ্রি অসহ্য গরমে শ্রমিকরা দিনে ১৪-১৬ ঘণ্টা পরিশ্রম করে থাকলেন বস্তিতে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। প্রতিবাদ করলে পাসপোর্ট আটকে রাখার অভিযোগও উঠেছিল।
আরও পড়ুন-FIFA World Cup 2022: স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা করায় না, বিশ্বকাপে কড়া নির্দেশের মুখে ইংল্যান্ড
এত পরিশ্রম সহ্য করতে বহু শ্রমিক মারা গেলেন। কোনও কোনও শ্রমিক কাজের চাপে দুর্ঘটনার মুখে পড়লেন। মার্কিন, ইউরোপের মিডিয়ায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টের কথা লেখা হল বড় বড় করে। বোঝা গেল, ভারী অন্যায় হয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন কী এসবে থেমে থাকে? বিশ্বও থেমে থাকে না। আর বিশ্বকাপ তো নয়ই।
I will support jungkook, but please aware what’s happening in Qatar.
over 6500 asian migrant wokers d!ed under the construction of that venue.
and they are homopobiac.https://t.co/cM3ivNgXvzhttps://t.co/aajH1e5isM— 🍊slow (@haya_ec4) November 12, 2022
যদিও কাতারের অভিযোগ, এসবই হল পশ্চিমী দুনিয়ার ষড়যন্ত্র। যেহেতু তাদের ওখানে বিশ্বকাপ না হয়ে কাতারে হচ্ছে, তাই নাকি এত মিথ্যা অভিযোগ। এটা ঠিক, কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের মত অত স্টেডিয়াম ছিল না। তাই তাদের অত সব পরিকাঠামো করতে অনেক বেশি সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিতে আসতে হয়েছিল। কাতারের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশের ওপর যদি অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে তার তদন্ত করা হবে। এমনকী তার দায় তাদের নয়, বরং বিদেশী এজেন্সিগুলির তেমন কথাও কাতার বলেছে।