দেশ ছাড়ার আগে ভারতীয় ক্রিকেট দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন এই কথা। ‘ বিশ্ব টেষ্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল এক ম্যাচের হওয়া উচিত নয়। তিন ম্যাচের হওয়া উচিৎ।’ ফাইনালের পর ম্যাচটি হেরে ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি বললেন সেই এক কথা। এখন দেশে পৌঁছে নিউজিল্যান্ড দলের নেতা কেন উইলিয়ামসনের মুখে একই কথা শোনা গেল। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা নেতা বলেছেন, একটা ম্যাচ দিয়ে সবটা বোঝা যায়না। একটা ম্যাচের ফাইনাল উন্মাদনা বাড়াতে পারে, কিন্তু সবদিক দিয়ে সেরার ছবিটা সামনে আনে না।
এক ম্যাচের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জিতেছিল, ১৩৯ রান তাড়া করে। হেরে যায় ভারত। লো স্কোরিং ম্যাচে কিউই নেতা কেন, ম্যাচের একমাত্র অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের স্বাদ এনে দেন।
দেশের এক বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকার দিতে বসে এমন কথাই বলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এক ম্যাচের ফাইনাল বাড়তি উন্মাদনা টানতে পারে – কিন্তু দুটি দলের সব কিছু দিয়ে আসল চ্যাম্পিয়নের ছবিটা তুলে ধরে না।
‘আমরা সকলেই জানি এই ভারতীয় দল যথেষ্ট শক্তিশালী। যোগ্য দল। আমরা তাদের সঙ্গে খেলে জিতেছি, এটা বিরাট গর্বের। এটা দিয়ে কিন্তু প্রমাণ হয় না, সেই দল কতোটা শক্তি ধরে। এমনকি তাদের দক্ষতার মান কতোটা উঁচুতে,সেটাও ধরা পড়ে না।’
বিশ্ব টেস্ট জয়ী নেতাই বলেছেন, ‘ কোনও সন্দেহ নেই, ওই দল এরপর অনেক জয় পাবে। সকলে জানে, এই দলের দক্ষতা কতো জোরদার। ভারতের পেস বোলিং আক্রমন বিশ্ব সেরা। অবিশ্বাস্য সব স্পিনার আছে দলে। আর সেই দলের ব্যাটিং শক্তি সম্পর্কে বাড়তি কিছু বলারই নেই। তাদের দলের গভীরতা কুর্নিশ জানানোর মতো।’
কেন উইলয়ামসনের মুখে এসব শোনার পাশাপাশি শোনা গেল, ভারতীয় ক্রিকেটাররা গোটা ক্রিকেট বিশ্বের কাছে এক একজন দূত। এই দেশের মানুষজন জাতীয় দলকে এমন ভালোবাসে, যে আবেগ নিয়ে মাঠে আসে – তা অভূতপূর্ব।
আরও পড়ুন – WTC: কিউইদের কাছে ক্ষমা চাইলেন অজি নেতা টিম
ফাইনাল ম্যাচের শেষ দিন কেমন অনুভূতি নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন উইলিয়ামসন? এই প্রশ্নের উত্তরে সহজভাবে বলেছেন, ‘ আমাদের জন্য দিনটা ছিল সবরকম সম্ভাবনায় ঠাসা। যা কিছু ঘটতে পারে , কিন্তু আমরা আমাদের সেরাটা মাঠে দেবো – এই ছিল লক্ষ্য। বাকি দিনগুলোর মতনই মানসিকতা ছিল আমাদের। খেলার গতি প্রকৃতির দিকে নজর ছিল। কী কী সুযোগ মেলে , তার জন্য আমরা তৈরি ছিলাম। ‘
নিউজিল্যান্ড শিবির নাকি পূজারা আর বিরাট ফিরতেই ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা দেখতে শুরু করে। ভারত তারই মধ্যে কাউন্টার অ্যাটাক করতে শুরু করলে, উইকেট অনুযায়ী কিউই পেসাররা বল করতে থাকে। তাতেই সাফল্য মেলে।
আরও পড়ুন – টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড
আলোচনার মাঝে চলে আসে অশ্বিনের বলে উইলিয়ামসনের এলবিডব্লু আউট হওয়ার প্রসঙ্গ। আশ্বিন আউটের আবেদন করলে, অন ফিল্ড আম্পায়ার আঙ্গুল তোলেন। কিন্তু রিভিউ চাওয়ার পর মেলে নট আউট সিধ্যান্ত। ক্যাপ্টেন কেন এই রিভিউ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ সিধ্যান্ত খুব ক্লোজ ছিল। আমার মনে হচ্ছিল, রবি যেভাবে অফ ব্রেক বল করছিল – হয়তো রিভিউ নিলে আমাদের পক্ষে আসতেও পারে এই সিধ্যান্ত। তা আমাদের পক্ষে আসায়,স্বস্তি পাই।’
এই ফাইনাল ম্যাচে কাইল জমিয়েশনই নাকি দুই দলের মধ্যে ফাঁরাক গড়ে দেন বলে, উইলিয়ামসনের বিশ্বাস।
ছবি:সৌ-টুইটার