কোভিডের দ্বিতীয় ধাপ টপকে তৃতীয় ধাক্কা আসার মুখে চিন্তায় গোটা বিশ্ব। ২০২০ টপকে ২০২১ তেও যা চিন্তার কারণ। তারই মধ্যে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হয়ে গেছে। কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টটি হয়েছে। শেষ হয়েছে, ইউরো কাপও। এছাড়া, বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় ক্লাব ফুটবল লিগও শেষ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাঠ ছিল সমর্থক শূন্য। ব্যতিক্রমী ছিল, ইউরো কাপ ফুটবল।
এবার নুতন মরশুমের অপেক্ষায় দিন গোনা শুরু হয়েছে। একটি কঠিন সময়ের মরশুম শেষ হয়েছে। এখন ফুটবলপ্রেমীদের নজর আরেকটি দিকে। তা হল, ২০২০-২১ মরশুমে ব্যালন ডি অরের ট্রফি হাতে পাবেন বিশ্বের কোন ফুটবলার।
এই নিয়ে চলছে জোর জল্পনা-কল্পনা। ইতোমধ্যেই উঠে এসেছে বেশ কয়েকজন তারকা ফুটবলারের নাম। তারই মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক ছয়বারের ব্যালন ডি অর জয়ী মেসি আবার এই সম্মানের জন্য হট ফেভারিটে। সপ্তমবারের জন্য সম্মানজনক এই ট্রফি জয় কি তিনিই জয় করবেন?
মেসির ক্লাব বার্সেলোনার কোচ রোনাল্ড কোম্যানও মনে করেন আর্জেন্টিনার তারকাই এবার জিতবেন ব্যালন ডি অর। মূলত কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে খেতাব জেতানোয় তিনি মূল কারিগর। টুর্নামেন্ট সেরা তিনিই।
আরও পড়ুন:কোপার সাফল্য:মেসির স্মরণে মারাদোনা
অধিনায়ক মেসি যদি আর্জেন্টিনাকে এবার কোপার খেতাবটি জিতে দিতে না পারতেন তাহলে হয়তো তাঁকে ব্যালন ডি অরের জন্য বিবেচনাতেই আনা হত না। কিন্তু দীর্ঘ ২৮ বছর পর আর্জেন্টিনা এই খেতাব জিতেছে। এবং তা জেতানোর পর তাঁর নাম এখন রয়েছে খেতাব জয়ীদের সম্ভাব্য তালিকায় উপরের দিকে।
এবার তিনি বার্সার হয়েও বেশ সফল । জাতীয় দলের মতন বার্সার হয়েও নিয়মিত গোল করেছেন এবং করিয়েছেন তিনি।
মেসিই ব্যালন ডি অর জিতবেন- এমন কথা বেশ দাপটের সঙ্গে জানিয়েছেন বার্সেলোনা দলের কোচ কোম্যান। তিনি বার্সেলোনা টিভিতে এক সাক্ষাৎকার দিতে বসে স্পষ্ট বলেন, ‘সপ্তমবারের বর্ষসেরা খেতাবটি জিতবেন মেসিই। বার্সা দলে মেসি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে আমাদের অধিনায়ক। এবং সকলের জন্য মেসি এক আদর্শ । সে মনেপ্রাণে চাইছিল এবার চ্যাম্পিয়ন হতে এবং বিশ্ব সেরা ফুটবলার হয়ে সে শিরোপা জিতে নিতে অভ্যস্ত। ব্যালন ডি অর জয়ের লড়াইয়ে সেই বাকিদের চেয়ে এগিয়ে।’
প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, ২০২০ সালে আর্জেন্টিনার এক ব্যক্তি মেসির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেছিল। গত শুক্রবার স্পেনের আদালত সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। ক্লিনচিট দিয়েছে মেসিকে।
মেসির পাশাপাশি এবার ব্যালন ডি অর জয়ের জন্য আরও কয়েকজন ফুটবলারের নাম আলোচনায় ঘোরাফেরা করছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জর্জিনহো, হ্যারি কেন, রবার্ট লেভানদোস্কি ও জর্জিও কিয়েলিনি।
জর্জিনহো : ইটালির জর্জিনহো এবার ইউরোপের টুর্নামেন্টে দুবার চ্যাম্পিয়ন দলে রয়েছেন। প্রথম তিনি চেলসির হয়ে জেতেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাব। এরপর ইটালির হয়ে জিতলেন ইউরোর শিরোপা। যেহেতু তিনি একই মরশুমে দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, তাই ব্যালন ডি অর জেতার ক্ষেত্রে তিনিও অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন।
হ্যারি কেন : ইংল্যান্ড যদি এবার ইউরো কাপ জিতে নিতে পারত তাহলে এই দলের অধিনায়ক হ্যারি কেন ব্যালন ডি অর জেতার দৌড়ে সকলের চেয়ে এগিয়ে থাকতেন। হ্যারি কেন ইংলিশদের হয়ে গ্রুপপর্বে কিছু করতে পারেননি। কিন্তু নকআউট পর্বে দক্ষতার সেরা পর্যায়ে নিজেকে তুলে নিয়ে যান। তবে আবার সেই ফাইনালে তিনি দলের হয়ে বড় ভূমিকা নিতে পারেননি।
রবার্ট লেভানদোস্কি : এ বছর যদি কোরোনার দাপটে ইউরো বা কোপা আমেরিকা না হত, তাহলে নিঃসন্দেহে রবার্ট পোল্যান্ড ও বায়ার্ন মিউনিখের রবার্ট লেভানদোস্কিই পেতে পারতেন ব্যালন ডি অরের সম্মান । এ বছর ক্লাব ফুটবলে বায়ার্নের হয়ে ৪১টি গোল করেন লেভানদোস্কি। এই সাফল্য গত ৫০ বছরের রেকর্ড। এক মরশুমে সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড গড়ে রেখেছেন।
জর্জিও কিয়েলিনি : ইটালির অধিনায়ক ও রক্ষণভাগের খেলোয়াড় জর্জিও কিয়েলিনির ব্যালন ডি অর জেতার সম্ভাবনা হয়তো এবার খুব বেশি নেই। তবে তার নাম আবার উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ তিনি দলের রক্ষণ সামাল না দিলে হয়তো ইটালির শিরোপাও জেতা হতো না। ২০০৬ সালের পর রক্ষণভাগের কোনও ফুটবলার আর ব্যালন ডি অর খেতাব জেতেননি। সেবার ইটালির অধিনায়ক ফাবিও কান্নাভারো জিতেছিলেন ব্যালন ডি অর।
ছবি: সৌ – টুইটার