ইংল্যান্ডের ফুটবলে তারা অনেক দিনই বড় নাম। প্রিমিয়ার লিগ কিংবা এফ এ কাপে তাদের জয়জয়কার চলছে বহু দিন ধরেই। কিন্তু ইংল্যান্ডের সীমানা ছাড়িয়ে ফুটবল যখনই ইউরোপের আঙিনায় চলে যায় তখনই সব জারিজুরি শেষ হয়ে যায় ম্যাঞ্চেস্টার সিটির। গত বছর তারা প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হল। তাদের থেকে অনেক দূরে ছিল রানার্স চেলসি। কিন্তু উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সেই চেলসির কাছেই ০-১ গোলে হেরে গেল ম্যান সিটি।
এবার তারা আর সেই ভুল করতে চায় না। এবারের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির লড়াই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে। প্রথম লেগে ঘরের মাঠ আল ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যান সিটি ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে অ্যাটলেটিকোকে। ফিরতি ম্যাচে বুধবার তাদের লড়াই মাদ্রিদে অ্যাটলেটিকোর ঘরের মাঠে। এবার কি পেপ গুয়েরদিওলার দল পারবে দিয়েগো সিমোনের দলের প্রতিরোধ চূর্ণ করে সেমিফাইনালে উঠতে?
প্রশ্নটা যতই সহজ, উত্তরটা ততটা নয়। অ্যাটলেটিকো এমন একটা দল যারা প্রায়শই অঘটন ঘটাতে পারে। বুধবার যদি সে রকম কিছু একটা ঘটে তাহলে আবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে সেটা যাতে না হয় তার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত সিটির কোচ এবং ফুটবলাররা। গত ম্যাচে সিটি ১-০ গোলে জিতেছিল। সেই ম্যাচে অ্যাটলেটিকো খেলেছিল ৫-৫-০ ছকে। অর্থাৎ পাঁচজন ডিফেন্ডার ও পাঁচজন মিডফিল্ডার। এই ছকে গোল খাওয়ার সম্ভাবনা যেমন কম থাকে, গোল করার সম্ভাবনাও তেমন কম। সেটাই হয়েছে। অ্যাটলেটিকো তেমন আক্রমণ করতে পারেনি যার থেকে গোল হতে পারে। বরং ফিল ফডেনের পাস থেকে গোল করে টিমকে জিতিয়েছেন সিটির অধিনায়ক কেভিন দে ব্রুইন। বেলজিয়ামের এই তারকা ইদানিং গোলের মধ্যে। গত পাঁচটা ম্যাচে সিটির হয়ে ছটা গোল করেছেন। গত রবিবার প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের সঙ্গে নিজেদের মাঠে ২-২ করেছে সিটি। সেই ম্যাচেও গোল আছে কেভিনের। তাঁর পাশে মাজেশ মহারাজ, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রহিম স্টার্লিংরা তো আছেনই। তাই গোল পেতে সমস্যা নাও হতে পারে সিটির। কিন্তু অ্যাটলেটিকো তো ডিফেন্সিভ খোলস ছেড়ে অ্যাটাকিং ফুটবল খেলবে নিজেদের তাগিদেই। সেই অ্যাটাকিং ফুটবলকে কাউন্টার করতে হবে সিটিকে। লুই সুয়ারেজ, আঁতোয়া গ্রিজম্যানরা কিন্তু তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে। শেষ পর্যন্ত ফল কী হবে তা নিয়ে আগাম মন্তব্য করা হয়তো যাবে না, কিন্তু একটা উপভোগ্য ম্যাচ যে হবে তা কিন্তু আন্দাজ করই যায়।
বুধবার কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের অন্য ম্যাচে লিভারপুলের মুখোমুখি হবে পর্তুগালের বেনফিকা। লিসবনে গিয়ে লিভারপুল জিতে এসেছে ৩-১ গোলে। তাই আনফিল্ডে নিজেদের মাঠে তারা অবস্যই ফেভারিট। জুরগেন ক্লপের টিমের বড় ভরসা তাদের তিন ফরোয়ার্ড। মহম্মদ সালাহ, সাদিও মানে এবং রবের্তো ফিরমিনো। এই ত্রয়ীর যা সম্মিলিত শক্তি তাকে আটকানো বেশ কঠিন বেনফিকার। আর দু গোলে এগিয়ে থাকা লিভারপুল নিজের মাঠে চেষ্টা করবে সেই লিড বাড়াতে না পারলেও ধরে রাখতে। তাই লিভারপুলের সেমিফাইনালে ওঠা শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাদের কাজ সহজ। কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কাজটা সহজ নয়। তাদের কাজটা বেশ কঠিন। তাই দেখার ইংল্যান্ডের দুই দল একই দিনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে যায় কি না।