সোমবার মল্লপুরমে সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে কেরালার সামনে বাংলা। ৩২ বারের সন্তোষ চ্যাম্পিয়ন বাংলার বিরুদ্ধে নিজেদের মাঠে কেরালাকেই ফেভারিট ধরতে হবে। একে তো নিজেদের মাঠে খেলা। হাজার ত্রিশেক দর্শক সারাক্ষণই চিৎকার করে উৎসাহিত করে যাবেন নিজের রাজ্যের প্লেয়ারদের। তার উপর কেরালা এবারের টুর্নামেন্টে খুবই ভাল খেলছে। তারাই একমাত্র দল যারা এখন পর্যন্ত কোনও ম্যাচ হারেনি। গ্রূপ লিগের খেলায় তারা চারটি ম্যাচেই জিতেছে। সেমিফাইনালে ৭-৩ গোলে হারিয়েছে কর্নাটককে। এই সাতটি গোলের মধ্যে পাঁচটিই করেছেন স্ট্রাইকার টি কে জেসিন। ৩০ মিনিটের মাথায় মাঠে নামেন জেসিন। এর পর মাত্র তেরো মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক করেন। পরে আরও দুটি গোল করেন। যে টিমে জেসিনের মতো স্ট্রাইকার আছেন সেই টিমকে সমীহ করতেই হয়।
এই কেরালার কাছেই গ্রুপ লিগে ০-২ গোলে হেরে গিয়েছিল বাংলা। তার পর থেকে বাংলার খেলায় যে উন্নতি হয়নি তা নয়। বিশেষ করে ফারদিন আলি মণ্ডল, দিলীপ ওরাঁও এবং মহীতোষকে নিয়ে গড়া বাংলার ফরোয়ার্ড লাইন তো বেশ ভাল। কিন্তু সমস্যা আছে রক্ষণে। শুক্রবার সেমিফাইনালে মণিপুরের বিরুদ্ধে শুরুর সাত মিনিটের মধ্যে দু গোলে এগিয়ে যায় বাংলা। পরে আরও একটা গোল করে তারা। তিন গোলে হারলেও মণিপুর কিন্তু আক্রমণ করতে ছাড়েনি। এবং সেই আক্রমণগুলোকে সামাল দিতে বাংলার গোলকিপার প্রিয়ন্ত সিংকে দুর্দান্ত গোলকিপিং করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন প্রিয়ন্ত-ই। যে ম্যাচে বাংলা তিন গোলে জিতল সেই ম্যাচের সেরা হলেন প্রিয়ন্ত, তাতেই বোঝা যাচ্ছে বাংলার ডিফেন্সে গলদ আছে। অধিনায়ক মনোতোষ চাকলাদারের নেতৃত্বে বাংলা ডিফেন্সকে কিন্তু ভাল খেলতেই হবে। তারা কতখানি ভাল খেলে তার উপর নির্ভর করছে বাংলার ভাগ্য।
কেরালার অধিনায়ক জিজু জোসেফ এবারের টুর্নামেন্টে খুবই ভাল খেলছেন। মিডফিল্ডার জোসেফ হলেন কেরালা টিমের আক্রমণের প্রধান মুখ। বাংলাকে জিততে হলে জিজু জোসেফকে আটকাতেই হবে। সেই দায়িত্বটা বাংলার কোচ কাকে দেন তাই এখন দেখার। তবে গোল পাওয়া নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয় বাংলার। ফারদিন আলি মোল্লা এবং দিলীপ ওরাঁও–দুই উইঙ্গারই গোলের মধ্যে রয়েছেন। স্ট্রাইকার মহীতোষ রায় হয়তো গোল কম পেয়েছেন, কিন্তু আক্রমণকে সচল রাখতে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। মাঝ মাঠে সুজিত সিং বেশ ভাল। গোলও করেছেন নিয়মিত। সব মিলিয়ে বাংলার শক্তি নেহাত ফেলনা নয়। এখন সেই শক্তি কেরালা জয় করে কলকাতায় সন্তোষ ট্রফি নিয়ে আসতে পারে কি না তাই এখন দেখার। কেরালাকে হারানো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়।