কেরালা–১ বাংলা–১
(টাই ব্রেকারে কেরালা-৫ বাংলা-৪)
ট্রফি কপালে না থাকলে ট্রফিতে হাত দেওয়া যায় না। আবার উল্টোটাও সত্যি। ট্রফির গায়ে যদি বিজয়ীর নাম ভাগ্যদেবী আগে থেকেই লিখে রাখেন, তবে ট্রফি অন্য কেউ নেয় কীভাবে?
সংক্ষেপে সোমবার এটাই হল সন্তোষ ট্রফি ফাইনালে বাংলা-কেরালা ফাইনালের সারসত্য। না হলে ৯৬ মিনিটে শুভেন্দু মান্ডির সেন্টার থেকে দুর্দান্ত হেডে দিলীপ ওরাঁও যখন গোল করলেন তখন মনে হচ্ছিল বাংলাই বুঝি চল্লিশ বছর পর কেরালার মাটি থেকে সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসবে। সেবার শান্ত মিত্রের কোচিংয়ে সুব্রত ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বাংলা ফাইনালে রেলওয়েজকে হারিয়ে সন্তোষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ১৯৮১-৮২ সালের পর আবার এবার সেই কৃতিত্বের প্রায় কাছেই পৌছে গিয়েছিল বাংলা। কিন্তু এবারের কেরালা তো অন্য ধাতুতে গড়া। জিজু জোসেফের নেতৃত্বে বিনু জর্জের ছেলেরা প্রায় অসাধ্য সাধন করল অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্দ্ধে সেই গোলটা শোধ করে। নৌফলের সেন্টারে হেড করে গোল করলেন টি কে জেসিন।
টাই ব্রেকারে বাংলার হয়ে গোল করলেন দিলীপ ওরাঁও, বাবলু ওরাঁও, তন্ময় ইন্দু এবং প্রিয়ন্ত সিং। শুধু দ্বিতীয় শটটি নিতে এসে সজল বাগ বল উড়িয়ে দিলেন বারের উপর দিয়ে। আর কেরালা পাঁচটা শটের পাঁচটাতেই গোল করল। তাদের হয়ে গোল করলেন সঞ্জু, বিবিন, জিজু জোসেফ, টি কে জেসিন এবং জয়রাজ। এই নিয়ে কারালা সাত বার সন্তোষ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হল।
মঞ্জেরি স্টেডিয়ামে তিরিশ হাজার দর্শকের সামনে কেরালার চেয়ে বত্রিশ বারের চ্যাম্পিয়ন বাংলাই শুরু থেকে ভাল খেলছিল। প্রথম পনেরো মিনিটে তারা তিনটি কর্নারও পায়। কিন্তু আস্তে আস্তে ম্যাচে ফেরে কেরালা। একশো কুড়ি মিনিটের ম্যাচেই তারা জিততে পারত। বিশেষ করে নব্বই মিনিটে তারা একটার পর একটা সুযোগ নষ্ট করেছে। বাংলার গোলকিপার প্রিয়ন্ত সিং যথারীতি দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছেন। কেরালার বেশ কয়েকটি শট তিনি বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু টিম যখন ১-০ গোলে এগিয়ে তখন গোলটা খেয়ে যান। যদিও এই নিয়ে তাঁকে দোষারোপ করা যায় না। বাংলা গ্রুপ লিগের ম্যাচে কেরালার কাছে ০-২ গোলে হেরেছিল। সেই টিমটাই এ রকম দুর্দান্তভাবে ফাইনালে খেলল এর জন্য কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্যের প্রশংসা করতেই হবে। কিন্তু ট্রফি কপালে না থাকলে কী হবে। এত কাছে এসেও দূরেই থেকে গেল সন্তোষ ট্রফি। দাম পেল না প্রিয়ন্ত সিং, মনোতোষ চাকলাদার, শুভেন্দু মান্ডি, ফারদিন আলি মোল্লাদের লড়াই। এটাই ফুটবল। কখন যে দেবে আর কখন যে কেড়ে নেবে তা কেউ জানে না।