কোপার মঞ্চে মেসিদের শাপমোচন হলেও, ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের শাপমুক্তি হল না| ৫৩ বছর পর ইউরো কাপ চ্যাম্পিয়ন ইতালি| ইটস কামিং হোম নয়, ইটস কামিং রোম| ওয়েম্বলিও এগিয়ে রাখল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইতালির পরিসংখ্যানকেই|
টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারাল মানচিনির নতুন ইতালি| কিন্তু ম্যাচের শুরুটা এই পূর্বাভাস দেয়নি| ২ মিনিটের মধ্যে লুক শ-র গোল| গ্যালারি থেকে রিজার্ভ বেঞ্চ, ইতিহাস গড়ার কম্পনটা শুরু হয়ে গিয়েছিল তখন থেকেই|
ওয়েম্বলি গ্যলারির চাঁদের হাটেও বেকহ্যাম, টম ক্রুসদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা| ইউরোর ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত এটাই দ্রুততম গোল| গোল খাওয়ার পর থেকেই, আক্রমণে ঝড় তুলেছিল ইতালি| তবে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেনি| কারণ প্রথমার্ধে কোনওরকমে তাদের সামাল দিয়ে দেন ব্রিটিশ রক্ষণ|
বিরতির পর ঘর সামলাতে আরও বেশি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড| কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি| গোলটা ধরে রাখতে পেরেছিল ৬৫ মিনিট পর্যন্ত| ৬৭ মিনিটে ইনসিগনের কর্ণার| ইংল্যান্ড গোলরক্ষক পিকফোর্ডের হাতে লেগে ফিরে আসে বল| ফিরতি বলে গোল করেন বোনুচ্চি|
তারপর দু দলের মরিয়া চেষ্টা চালালেও কেউই ব্যবধান বাড়াতে পারেনি| ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়| সেখানেও চলে আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের খেলা| কিন্তু দু দলেরই গোলের সুযোগ নষ্ট করার ছবিটা বদলায়নি| বড় মঞ্চে অভিজ্ঞতার অভা্বটা ফুটে উঠছিল দুই শিবিরেই|
টাই ব্রেকার ছাড়া ম্যাচের ফয়সালা হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না| প্রশ্ন উঠতে পারে সাউথগেটের পেনাল্টি শ্যুট আউট নির্বাচন নিয়ে| রহিম স্টার্লিং, লুক শ, গ্রেলিশদের না রেখে, র্্যাশফোর্ড, স্যাঞ্চোদের ওপর কী করে ভরসা করলেন তিনি| যাদের অনায়াসেই আটকে দিলেন ইতালি গোলরক্ষক দোনারুমা| আর র্্যাশফোর্ড নিজেই সুযোগ নষ্ট করল| তাই ইংল্যান্ড গোলরক্ষক পিকফোর্ডের লড়াইটা মাঠেই মারা গিয়ে মূল্য পেল না|
এসব নিয়ে কাটাছেড়া থাকবেই| কিন্তু ততক্ষণে ইউরোর ট্রফির গায়ে ২০২০ ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালির নাম খোদাই করা হয়ে গেছে| হ্যারি কেনদের স্বপ্ন ভঙ্গের মাঝে মাঠেই তখন মানব ঢেউ তৈরি করেছেন ইতালির ফুটবলাররা গ্যালারির উদ্দেশ্যে| এবার ট্রফি নিয়ে রোমে ফেরার পালা মানচিনির দলের|
২০১৮ সালে বিশ্বকাপ না খেলতে পারার যন্ত্রনা হয়ত এই চ্যাম্পিয়নের কাপ হাতে নিয়েই ভুলবেন মানচিনি|