৪-৩-২-১। এমন ছকেই যে কোনো দলের ফুটবল টিমের ফরমেশন হয়। এটা তা ভাবা ভুল হবে। এটা টিম ইন্ডিয়ার বোলার পাওয়া উইকেট সংখ্যা। ইংল্যান্ডের সঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে , প্রথম টেস্ট শুরু হয়েছে। ভারতীয় চার পেসার প্রতিপক্ষকে প্রথম ইনিংসে ১৮৩ রানে থামিয়ে দিয়েছে প্রথম দিনই। পেসাররাই বিপক্ষের ১০ উইকেট নিয়ে নিয়েছেন।
স্কোর কার্ড যে ভাবে একের পর এক বোলার আক্রমণে এলে লেখা হয়, সেটাই মেনে প্রথম লাইনটাই লেখা। বামরাহ নুতন বলে আক্রমণ শুরু করেন। ইনিংস শেষে তিনি নিলেন ৪ উইকেট (২০.৪-৪-৪৬-৪)। অন্যদিকে থেকে আক্রমণ শুরু করেছিলেন মহম্মদ সামি। নিলেন ৩ উইকেট (১৭-২-২৮-৩)। প্রথম চেঞ্জ বোলার হয়ে আক্রমণে আসেন মহম্মদ সিরাজ। নিলেন ১ উইকেট (১২-২-৪৮-১)। এরপর শার্দুল ঠাকুর। নিলেন ২ উইকেট (১৩-৩-৪১-২)। আর দলের একমাত্র স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা উইকেট পাননি (৩-০-১১-০)। তিনি ৩ ওভারের বেশি বল করার সুযোগই পাননি। বোলারদের সাফল্য মাথায় রেখে এই ফরমেশন সাজালাম।
টেস্ট ম্যাচ মানেই তিনটি সেশনের লড়াই। বুধবার শুরু হওয়া ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টটি প্রথম দুটো সেশনে ব্যাট আর বলের সমান সমান লড়াই ছিল। কিন্তু শেষ সেশনে ভারতীয় বোলাররা টেক্কা দিলেন ব্রিটিশ ব্যাটসম্যানদের। প্রথম দুটি সেশনে ২ টি করে উইকেট তোলেন বোলাররা। আর প্রথম দিনের শেষ সেশনে তুলে নিলেন ওঁরা ৬টি উইকেট! তাতে খরচ হল ৫০ রান। আর লাগলো ১৫ টি ওভার।
ম্যাচ শুরু হতেই সোশাল মিডিয়াতে দল নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। আশ্বিন দলে নেই! দেশের এই মুহূর্তে সফলতম বোলার! একটা স্পিনার খেলালে, জাদেজা কি করে অশ্বিনের থেকে এগিয়ে? – নানান প্রশ্ন। কেন নিজেদের শক্তিতে বিশ্বাস রেখে দুই স্পিনার আর তিন পেসার নয়? এসব সমালোচনা উড়ে গেল দলের পেস বোলারদের সাফল্যে। ম্যাচ শুরুর আগে ফিটনেস পরীক্ষাতে পাশ করতে পারলেন না ইশান্ত শর্মা। দলে নেওয়া হয় সিরাজকে।
আরও পড়ুন: BCCI: ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু ২১ সেপ্টেম্বর
উইকেট হাল্কা সবুজ ঘাসে ভরা দেখে চার পেসার খেলানোর রাস্তায় হাঁটে টিম ম্যানেজমেন্ট। তখনই ব্যাটিং আর পেসার শক্তি বাড়াতে দলে আসেন শার্দুল ঠাকুর। দিনের শেষে স্কোর বলছে, বোলারদের বাছাই পর্বে কোহলি – শাস্ত্রী – রাহানেরা সঠিক পদক্ষেপ করেছেন।
এই ইংল্যান্ডেই এক মাস আগে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে চূড়ান্ত ব্যর্থ ছিলেন বুমরাহ। এই ইনিংসে বোঝালেন,তিনি শেষ হয়ে যাননি(২০.৪-৪-৪৬-৪)। কার কার উইকেট নিলেন? প্রথম ওভারেই ফেরান ওপেনের ররি বার্নসকে ( ৫ বলে ০ রান)। এরপর জস বাটলার ( ১৮ বলে ০রান)। টেল এন্ডার স্টুয়ার্ট ব্রড (৩ বলে ৪ রান) এবং জেমস অ্যান্ডারসন (১১বলে ১রান)। একটা বোল্ড, একটা উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ আর দুটি এল বি ডব্লিউ। বোলিং বিশ্লেষন জানিয়ে দিচ্ছে তিনি ৪ টি মেডেন ওভার নিয়েছেন।
That's Stumps on Day 1 of the first #ENGvIND Test!
After the bowlers limited England to 183, @ImRo45 & @klrahul11 guide #TeamIndia to 2⃣1⃣/0⃣. ? ?
Join us tomorrow for Day 2 action from Trent Bridge.
Scorecard ? https://t.co/TrX6JMzP9A pic.twitter.com/4Pc7kZIE0A
— BCCI (@BCCI) August 4, 2021
এবার সামি (১৭-২-২৮-৩)। দলের সেই বোলার যিনি এতোটাই বিপক্ষের চিন্তার কারণ হয়ে ওঠেন যে তার বিপক্ষে রান তোলার ঝুঁকিই নিতে চাননি ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা (ইকনমি রেট:১.৬৪)। অর্থাৎ দেড় রানের সামান্য বেশি। তিনি কাকে কাকে ফেরালেন? ওপেনের ডম সিবলে(৭০ বলে ১৮ রান)। চতুর্থ উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলছিলেন অধিনায়ক রুট আর বেয়ারস্টো। এই জুটি ভাঙেন সামি। বেয়ারস্টোকে ফেরান (৭১ বলে ২৯ রান)। আর ফেরান ডান লরেন্সকে (৪ বলে ০ রান)।
প্রথম চেঞ্জে বিরাট আনেন মহম্মদ সিরাজকে (১২-২-৪৮-১)। তিনি ফেরান জ্যাক ক্রাউলিকে (৬৮ বলে ২৭ রান)। যদিও তিনিই বোলারদের মধ্যে ওভার পিছু বেশি রান দিয়েছে (ইকনমি রেট:৪)।
এবার শার্দুল ঠাকুর (১৩-৩-৪১-২)। সবচেয়ে দামী উইকেটটি তাঁর নেওয়া। ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক জো রুট। ১০৮ বলে ১১টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিলেন ভারতীয় বোলারদের। রুট ফেরেন ৬৪ রানে। আর ফেরান অল্লি রবিনসনকে(৩ বলে ০ রানে)।
আর দলের একমাত্র স্পিনার জাদেজা? মাত্র ৩ ওভার বল করার সুযোগ পান। তাতেই আবার দুটো নো বল! সঙ্গে ইকনমি রেট ৩.৬৬। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট চার পেসার খেলিয়ে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি।
দিনের শেষে ভারতের দুই ওপেনার অতি সচেতন হয়ে ব্যাট করেছেন। ১৩ ওভার খেলে বোর্ডে ২১ রান বসিয়েছেন। ভারত ১৬২ রানে পিছিয়ে। আবার লম্বা ব্যাটিং লাইন আপের খেলা শুরু।
ছবি: সৌ – টুইটার