দলের নেতা ম্যাচের শেষে বলছেন,”পৃথ্বী শাহ আর ঈশান কিশন ক্রিজে থাকলে ১৫ ওভারে ম্যাচ জিতে নিয়ে ফিরে আসত”। নেতা শিখর ধাওয়ান নিজে অপরাজিত ৮৬ রানের ইনিংস খেলেছেন। ভারত ৭ উইকেট সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিতে নিয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেই নেতা দলের দুই জুনিয়র ব্যাটসম্যানের কথা বলেছেন, যারা দাপটে ব্যাটিং করে আউট হয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু কাজটির গতি শুরুতে এনে দিয়ে গিয়েছিল।
সত্যি তারিফ করার মতন পারফরম্যান্স করে দেখলো ভারতীয় দল (অর্জুন রানাতুঙ্গার “বি” দল)। ম্যাচের শুরু বল হাতে “কুলচা”। ক্রুণালের স্পেল তারিফ করার মতন। এরপর ব্যাট হাতে পৃথ্বী, ঈশন আর সুর্যকুমার। “গব্বর” ধাওয়ান ছিলেন নিজের মেজাজে। ৮০ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটে সহজে ম্যাচ জয়। দারুণ শুরু, কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের। দারুণ শুরু সবচেয়ে বেশি বয়সে জাতীয় দলের অধিনায়ক হওয়া শিখর ধাওয়ানের। শুধু ভাবছিলাম, শুরুতে ব্যাট করলে , ওই ৮০ বলে আরও কত কী হতো!
আরও পড়ুন: Happy Birthday: স্মৃতিতে মজে ক্রিকেট দুনিয়া
সাবাশ কোচ। শুরুতে দেখলাম, দলের অধিনায়ককে দিয়ে অভিষেক হতে যাওয়া ঈশনের হতে ইন্ডিয়া ক্যাপ দেওয়ালেন নেতা ধাওয়ানকে দিয়ে। আরেক অভিষেক হওয়া ক্রিকেটার সুর্যকুমার ইন্ডিয়া ক্যাপ পেলেন দলের সহ অধিনায়ক ভুবনেশ্বরের হাত থেকে। কোচ নিজেকে রাখলেন পিছনের সারিতে। রাহুল,আপনাকে দেখে অনেক কিছু শেখার আছে ।
দেশে বিদেশে করোনার দাপাদাপি। শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেও নিস্তার মেলেনি। সিরিজও শুরু হল ৫ দিন পিছিয়ে। তাতে কী! সব ক্রিকেটার নিজের সহজাত খেলাই খেললেন। সহজে দল জিতল। পেসার চাহার, দুই স্পিনার চহাল আর কুলদীপ – তিনজনই ২টি করে উইকেট নিলেন। পান্ডিয়া ভাইরা মাঝের গুরুত্বপূর্ণ ১৫ ওভার বল করলেন। ৬০ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিলেন। ব্যাট হাতে প্রথম ৫ ব্যাটসম্যানই কাজ শেষ করলেন।
একইসঙ্গে দুই দেশে দুটি জাতীয় দল পাঠিয়েছে ভারত। নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলির নেতৃত্বে একটি দল আছে ইংল্যান্ড সফরে। সেখানে ৫ টেস্ট সিরিজের লড়াই।
আরও পড়ুন: টোকিও অলিম্পিকের শর্তাবলী
আর শিখর ধাওয়ানের নেতৃত্বে তুলনামূলক কম অভিজ্ঞ আরেকটি জাতীয় দল সাদা বলের সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কায়। কিছুদিন আগে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে গোহারান হারার পর ভারতের এই “বি” দলটির কাছেও বড় ব্যবধানে হেরে ৩ ম্যাচের শুরু করল লঙ্কা বাহিনী।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট খুইয়ে ২৬২ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা।
জবাবে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৬.৩ ওভারেই জয় তুলে নেয় ধাওয়ানবাহিনী।
যদিও টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ওপেনার আভিশকা ফার্নান্দো এবং মিনোদ ভানুকার মন্দ ব্যাটিং করেননি।
আভিশকা ৩৩ রান করে আউট হতেই , মনে হল ভানুকা গুটিয়ে নিলেন নিজেকে । এরপর ভানুকা রাজাপক্ষে কিছুটা আশা জাগিয়েও হোঁচট খেলেন। ২২ বলে ২৪ রান করে কুলদীপ যাদবের শিকার হন। কিছুক্ষণ পর বিদায় নেন ভানুকাও (২৭)।
শ্রীলঙ্কার রান যে দুশোর গণ্ডি টপকে গেল, তার কারিগর আসালাংকা। তিনি করেন ৬৫ বলে ৩৮ রান। অধিনায়ক শানাকা করেন ৫০ বলে ৩৯ রান। তবে শেষদিকে করুণা করুনারত্নের ৩৫ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের এক ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচে লড়ার রসদ পায় শ্রীলঙ্কা।ভারতীয় বোলাররা বেশি এগুতে দায়নি লঙ্কা ব্যাটসম্যানদের।
ম্যাচ জিততে এক মোক্ষম জবাব দিতে নেমে ভারতের পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ানের ওপেনিং জুটিতে আসে ৫৮ রান। পৃথ্বী মাত্র ২৪ বলে ৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংসটি প্রতিপক্ষের বোলিং ছন্দ শেষ করে দেন।
অধিনায়ক ধাওয়ান ঠান্ডা মাথায় পঞ্চাশ রান পার করে সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকেন। তিনে নামা ঈশান কিশনও ৪২ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন। এরপর মনীশ পান্ডে ২৪ রান করে বিদায় নিলেও দলের জয় সুনিশ্চিত করেই ফেরেন ধাওয়ান ও সূর্যকুমার যাদব। শ্রীলঙ্কার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা নেন ২ উইকেট। বাকি উইকেটটি সান্দাকানের। মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। এই কলম্বো মাঠেই।
ছবি: সৌ – টুইটার