চণ্ডীগড়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ডুবিয়েছিল ডেথ ওভারের বোলিং আর ফিল্ডিং। কিন্তু নাগপুরে সে সবের দরকার হল না। ভারতকে ছয় উইকেটে জিতিয়ে দিল তাদের ব্যাটিং। আরও স্পষ্ট করে বললে অধিনায়ক রোহিত শর্মার মারকাটারি ব্যাটিং। মাত্র ২০ বলে অপরাজিত ৪৬ করে ভারতকে জিতিয়ে দিলেন হিটম্যান। বৃষ্টির জন্য ম্যাচ নেমে আসে আট ওভারে। টস হেরে ব্যাটিং পায় অস্ট্রেলিয়া। আট ওভারে তারা তোলে পাঁচ উইকেটে ৯০ রান। জবাবে ৭.২ ওভারে চার বল বাকি রেখে ভারত চার উইকেটে ৯২ রান তুলে ম্যাচ জিতে গেল। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের জন্য ম্যাচের সেরা রোহিত শর্মাই। তিন ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১। রবিবার হায়দরাবাদে হবে সিরিজের ফয়সালা।
গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে নাগপুরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বৃষ্টি না হলেও মাঠ ভিজে থাকায় আম্পায়াররা ম্যাচ শুরু করতে পারেননি। বার বার মাঠ পরীক্ষা করার পর তাঁরা ঠিক করেন ম্যাচ হবে আট ওভারের। পাওয়ার প্লে হবে দু ওভার। এবং একজন বোলার দু ওভারের বেশি বল করতে পারবেন না। রোহিত শর্মা টস জিতে ফিল্ডিং নেন। বহু দিন পরে দলে ফিরলেন যশপ্রীত বুমরা। আর ঋষভ পন্থ কিপিং করলেও দলে রাখা হয় দীনেশ কার্তিককেও। ভারতের বোলার এবং ফিল্ডারদের দাপটে অজিরা কখনও স্বস্তিতে ছিল না। বিরাট কোহলির ছোড়া বলে রান আউট হয়ে যান ক্যামেরন গ্রিন (৫)। নামেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু অক্ষর প্যাটেলের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান গ্লেন (০)। টিম ডেভিডও বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। তাঁকেও (২) বোল্ড করে দেন অক্ষর। তবু অজিরা যে ওভারপিছু এগারোর বেশি টার্গেট ভারতকে দিতে পারল তার জন্য অ্যারন ফিঞ্চ এবং ম্যাথু ওয়েডকে কৃতিত্ব দিতে হবে। যশপ্রীত বুমরার বলে বোল্ড হওয়ার আগে অধিনায়ক ফিঞ্চ করেন ১৫ বলে ৩১ রান যাতে ছিল চারটি বাউন্ডারির সঙ্গে একটি ওভারবাউন্ডারিও। তবে অজিদের ৯০ হতে পারল উইকৈটকিপার ম্যাথু ওয়েডের জন্য। প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও তিনি সফল। মাত্র ২০ বলে অপরাজিত ৪৩ করেন তিনি। যার মধ্যে ছিল চারটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভারবাউন্ডারি। শেষ দিকে নেমে পাঁচ বলে ৮ রান করে রান আউট হয়ে যান স্টিভ স্মিথ। ভুবনেশ্বর কুমারকে এদিন বিশ্রাম দেওয়া হয়। ভারতের সবচেয়ে সফল বোলার অক্ষর প্যাটেল (২-১৩)। আর বুমরাও প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে সফল (১-২৩)। বাকিদের মধ্যে হর্ষল প্যাটেল দুই ওভারে দিয়েছেন ৩২ রান। আর হার্দিক প্যাটেল (০-১০) এবং যজুবেন্দ্র চহাল(০-১২) এক ওভার করে বল করে কোনও উইকেট পাননি।
ভারতের দুই ওপেনার লোকেশ রাহুলের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল তাঁরা খুব তাড়াতাড়ি জয়ের রান তুলে ফেলতে চান। দুজনের মধ্যে বেশি বিধ্বংসী ছিলেন রোহিতই। জস হ্যাজালউডের প্রথম ওভারেই ওঠে ২০ রান। এর মধ্যে রোহিতই দুটো ছক্কা মারেন স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে। পরের ওভারে বল করতে এসে প্যাট কামিংসকেও প্রহৃত হতে হয়। রোহিত তাঁকেও বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দেন। তৃতীয় ওভারে লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা (৩-১৬) এসে রান ওঠার গতি একটু কমান এবং পাশাপাশি উইকেটও পান। তাঁর পর পর তিন শিকার হলেন লোকেশ রাহুল (১০), বিরাট কোহলি (১১) এবং প্রথম বলেই এল বি ডব্লিউ হয়ে ফেরা সূর্য কুমার যাদব (০)। কিন্তু তাতে দমানো যায়নি রোহিতকে। অজিদের এর পর যে বোলাররা ছিলেন তাঁরা খুবই অনিয়মিত। যেমন ড্যানিয়েল স্যামস, সন অ্যাবট। রোহিতের এদের পাত্তা দেওয়ার কথাও না। পাত্তা দেনওনি। তবে সপ্তম ওভারে প্যাট কামিংসের বলে ফিঞ্চের হাতে হার্দিক পান্ডিয়া (৯) ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলে শেষ ওভারে ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব এসে পড়ে দীনেশ কার্তিকের উপর। কেন রিষভ পন্থ থাকা সত্বেও তাঁকে দলে রাখা হয়েছে তা বোঝানোর জন্য ডি কে পর পর দু বলে ছয় আর চার মেরে ম্যাচের ফয়সালা করে দেন। হতভাগ্য বোলার ছিলেন সেই ড্যানিয়েল স্যামস।