দুবাই: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল (WTC Final 2023) শুরু হওয়ার দিনকয়েক আগে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স (Pat Cummins) এক হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এখন ক্রিকেটাররা দেশ নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানাধীন। ক্রিকেট খেলাটাকে অদূর ভবিষ্যতে ফ্র্যাঞ্চাইজিই নিয়ন্ত্রণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন কামিন্স। ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাও (Rohit Sharma) অনেকটা এই সুরেই বলেছিলেন, ক্রিকেটারদের সময় এখন ফ্র্যাঞ্চাইজির হাতে, তারাই নিয়ন্ত্রণ করে কে কতটা খেলবে আর কতটা বিশ্রাম নেবে।
ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট দেশের বোর্ডের হাত থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের হাতে চলে যাচ্ছে, এই আশঙ্কায় ভুগছে এবার আইসিসি-ও (ICC)। তাই রাশ ধরে রাখতে আইপিএলের (IPL) অনুকরণেই আইন আনতে চলেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা।
সম্প্রতি নাইট রাইডার্স ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে আমেরিকায় খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ইংলিশ ক্রিকেটার জেসন রয় (Jason Roy)। যেসব দেশে নাইট ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে সেখানেই খেলবেন তিনি এবং বিপুল অর্থ আয় করবেন। এর জন্য ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তি সই করেননি রয়। এমন প্রস্তাব নাকি মইন আলি, জোফ্রা আর্চারের মতো খেলোয়াড়ও পেয়েছেন। এতেই প্রমাদ গণেছে আইসিসি। এরকম যদি প্রত্যেক দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা খেলোয়াড়দের নিজেদের চুক্তিতে আবদ্ধ করে নেয় তাহলে দেশের হয়ে খেলার লোকই পাওয়া যাবে না।
আরও পড়ুন: WTC Final 2023 | টেস্ট ফাইনাল হারে ভারতীয় দলের দরজা বন্ধ হতে পারে এই তিনজনের
তাই সবদেশেই আইপিএলের নিয়ম আনতে চলেছে আইসিসি। আইপিএলে কোনও দলে চার বিদেশির বেশি খেলানো যায় না। কিন্তু সব দেশে এমন নিয়ম নয়। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (UAE) টি২০ লিগে এক এক দলে প্রথম এগারোয় ৯ জন বিদেশি খেলতে পারে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়া আটকাতে জোড়া আইন আনতে চলেছে আইসিসি। এক, আইপিএলের মতো কোনও দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এক দলের প্রথম এগারোয় চারজনের বেশি বিদেশি খেলানো যাবে না। দুই, কোনও বিদেশি ক্রিকেটারকে সই করালে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে চুক্তির অঙ্কের কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ দিতে হবে।
জোড়া আইনে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বাড়বাড়ন্ত আটকানো যাবে বলে মনে করছে আইসিসি। ফুটবল খেলায় এখন ইউরোপের বড় বড় ক্লাবই প্রায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ। ক্লাব ফুটবলের সূচি অনুযায়ীই আন্তর্জাতিক সূচি তৈরি করতে হয়। দেশের ফুটবল বোর্ডের থেকে ক্লাবের ক্ষমতা অনেক বেশি। আইসিসির আশঙ্কা এখন থেকে সাবধান না হলে ক্রিকেটও ফুটবলের মতো হয়ে যাবে। ঠিক একই আশঙ্কা করেছিলেন প্যাট কামিন্সও।