গত শতকের আশি এবং নব্বই দশকের সাড়া জাগানো বিদেশি ফুটবলার চিবুজোর আর নেই। দু দিন আগে তাঁর দেশ নাইজিরিয়াতেই প্রয়াত হয়েছেন কলকাতার তিন প্রধানে খেলা স্ট্রাইকার চিবুজোর। বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৫। রেখে গেলেন স্ত্রী এবং পুত্রকে।
১৯৮৬ সালে কলকাতায় খেলতে আসেন চিবুজোর। সঙ্গী ছিলেন আরেক নাইজিরীয় এমেকা এজুগো। তার পর মহমেডান, আবার ইস্ট বেঙ্গল হয়ে ১৯৯৩ সালে খেলেন মোহনবাগানে। সেই সময় তাঁর সঙ্গে সবুজ মেরুনে ছিলেন ক্রিস্টোফার এবং বার্নার্ড। প্রথম বছর এমেকার সঙ্গে জুটি বাঁধলেও এক দু বছর পরে তাঁর সঙ্গে ক্রিস্টোফারের জুটিই জনপ্রিয় ছিল। চিবুজোর ছিলেন আদতে স্ট্রাইকার। প্রচুর গোল করেছেন। চিমা ওকোরির মতো বিধ্বংসী স্ট্রাইকার না হলেও চিবুজোরের দক্ষতায় তাঁর টিম প্রচুর ম্যাচ জিতেছে। প্রচন্ড গতিশীল স্ট্রাইকার ছিলেন। দু পায়ে ভাল ড্রিবল ছিল। আর ছিল প্রচন্ড বুদ্ধি। সেই সময়ে কলকাতা মাঠে তারকা হয়ে উঠতে গেলে নিজস্ব ফুটবলের সঙ্গে একটা এক্স ফ্যাক্টর দরকার হত। চিবুজোরের তা ছিল। সে জন্যই তিন প্রধানে দাপিয়ে খেলেছেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ইস্ট বেঙ্গল কাঠমান্ডুর ওয়াই ওয়াই কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই টিমে ছিলেন চিবুজোর। ১৯৯১ সালে মহমেডান চারটি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়। স্ট্যাফোর্ড, নাগজি, কলিঙ্গ এবং বরদলুই ট্রফিতে মহমেডানকে চ্যাম্পিয়ন করার পিছনে বড় অবদান ছিল চিবুজোরের। সব মিলিয়ে ময়দানে তিনি দাগ রেখে গেছেন, সেই দাগ কখনও মুছবে না। এমনকি গোল করার পর তাঁর সামার সল্ট দেওয়ার ভঙ্গিও মনে থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের। ফুটবলের বাইরে সতীর্থদের মধ্যে প্রচন্ড জনপ্রিয় ছিলেন চিবুজোর। এর পিছনে ওর পিছনে লাগতেন। সবাইকে হাসাতে চাইতেন তিনি।
চিবুজোর ছিলেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। তাঁর ব্যাগে সব সময় থাকত একটা বাইবেল। ফুটবল ছাড়ার পর তিনি গির্জার যাজক হয়েছিলেন। বিয়ে করেছিলেন কলকাতার মেয়েকে। বেশ ভাল বাংলাও বলতেন। চিবুজোরের মৃত্যু সংবাদ কলকাতাব এসে পৌছনোয় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তিন প্রধানে।