সামনে তাকানো শুরু করে দিল বাংলা? সৈয়দ মুস্তাক আলি (টি-২০) টুর্নামেন্টের জন্য যে ২০ জনের দল বাছা হল, তাতে সেই ইংগিত স্পষ্ট। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে দলের নেতৃত্বে আনা হল। এবার সিএবি’র নিজস্ব টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে ছিলেন সুদীপ। সবচেয়ে বেশি রান তিনিই করেছেন। এই মরশুমে ভারতীয় বোর্ডের প্রথম টুর্নামেন্ট সৈয়দ মুস্তাক আলি(টি-২০)টুর্নামেন্টটি। ৪ নভেম্বর থেকে গুয়াহাটিতে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্টটি।২৭ অক্টোবর সব দলকে পৌঁছে যেতে হবে। থাকতে হবে কোয়ারিন্টাইনে।
আরও পড়ুন: Cricket scam: এবার গ্রেফতার প্রাক্তন বাংলা জুনিয়র ক্রিকেটার !
এই টুর্নামেন্টেই আগের মরশুমে বাংলাকে নেতৃত্ব দিযেছিলেন সিনিয়র ব্যাটসম্যান অনুষ্টুপ মজুমদার। তাঁকে এই দলে রাখাই হয়নি। একমাস আগে বেঙ্গল টি-২০ চ্যালেঞ্জার টুর্নামেন্টে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সুদীপ ৬টি হাফ সেঞ্চুরি করেন। তাঁর সফল নেতৃত্বে ব্যারাকপুর বাশার্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। টুর্নামেন্টে সুদীপ করেন মোট-৪৭৮ রান। তারই পুরস্কার পেলেন সুদীপ। সিএবি’র কর্তারা এবং সিনিয়র নির্বাচকরা সকলের জন্য একটি বার্তা পাঠিয়ে রাখলেন-সফল হলেই সুযোগ মিলবে।
এই টুর্নামেন্টেই আরও দুটি দলের নেতা করা হয়েছিল দুই সিনিয়র ক্রিকেটারকে-অনুষ্টুপ মজুমদার এবং অর্ণব নন্দীকে। অনুষ্টুপ নিয়মিত রান পাননি। তাই এই ফর্ম্যাটের খেলায় তাঁকে এবার দলে রাখা হয়নি। রঞ্জি ট্রফি কিংবা ৫০ ওভারের ম্যাচে তাঁকে দলে রাখার ভাবনা আছে। কিন্তু স্পিনার-অলরাউন্ডার অর্ণব নন্দীকে নিয়ে আর ভাবতে নারাজ নির্বাচকরা। তাঁর ফিটনেস সমস্যা আছে তা ফিজিওর রিপোর্ট থেকেও সকলে জেনেছেন। শরীরের ওজন বাড়িয়ে, বিপ টেস্টে ফেল করে অর্ণব দল থেকে ছিটকে গেছেন। বল কিংবা ব্যাটে তিনি পুরোপুরি অসফল।এই মরশুমে তিনি ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে চলে গেছেন মোহনরাগানে। গত মরশুমেও তিনি লাল-হলুদ কর্তাদের প্রভাবিত করে অনেক কিছু করেন-যা পুরনো ক্লাবকর্তারা মোটেই ভালো চোখে দেখেননি।
বাংলা এবার প্রথম টুর্নামেন্ট থেকেই দলে পাচ্ছে ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহাকে। দলে রাখা হয়নি বছরের পর বছর খেলে চলা আরেক উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান শ্রীবৎস গোস্বামীকে। দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক হয়ে দলে রাখা হয়েছে শাকির হাবিব গান্ধীকে।এমনকি, শুভঙ্কর বল-দাপটে ব্যাট করার সঙ্গে সঙ্গে ভালো উইকেটকিপিংও করেন।
আইপিএলে আরসিবি’র হয়ে ভালো খেলা স্পিনার-অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদ দলে আছেন। পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলেছেন পেসার ঈশান পোড়েল।দু’জনই ভালো কন্ডিশনে আছেন। এছাড়া পেসার জুটি–মুকেশ কুমার আর আকাশদীপও রয়েছেন।
দলের কোচ অরুনলাল খুশি সুদীপ দারুণ ফর্মে থাকায়। নিজের দলের সম্পর্কে তিনি আশাবাদী। বলেছেন,‘টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে আমাদের টিম দেশের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী দল। করোনা পর্বেও ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। সুদীপ খুব ভালো ফর্মে আছে। প্রায় এক দশক হল-বাংলা দলের সঙ্গে আছে। নেতা তো ওকেই মানায়’।
ইতিমধ্যে বিজয়ওয়ারায় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বিপক্ষে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলে এসেছে বাংলার ক্রিকেটাররা। ইতিমধ্যে কলকাতায় খেলতে চলে এসেছে হিমাচল প্রদেশ দল।কিন্তু ২০, ২১, ২৩, ২৪ অক্টোবর যে ৪টি ম্যাচ তারা বাংলা দলের সঙ্গে খেলে গুয়াহাটি যাবে বলে ঠিক ছিল।টানা বৃষ্টির জন্য তা আনিশ্চিৎ। বাংলার ক্রিকেটাররা ইডেনে ইন্ডোরে রোজ অনুশীলন সারছে।
নয়া নেতা সুদীপ বেশি খুশি দলের সঙ্গে জাতীয় দলে থাকা ঋদ্ধিমান সাহাকে পাচ্ছেন বলে। শুরু থেকে ঋদ্ধিকে ড্রেসিংরুমে পাওয়া দলের পক্ষে কাজে লাগবে বলে মনে করছেন বাংলার অধিনায়ক।এবার বাংলা দলের হয়ে অনুশীলনে সামিল হয়েছিলেন রাজ্য দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বাংলার ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। তিনি অবশ্য আগেই বলেছিলেন, এই টুর্নামেন্টে তিনি খেলতে চান না। জুনিয়র ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে চান। রঞ্জি ট্রফিতে খেলার পুরো প্রস্তুতি নিয়ে চলেছেন মনোজ।
বাংলা প্রথম ম্যাচটি খেলবে ছত্রিশগড়ের বিপক্ষে।
বাংলার নির্বাচিত ২০ জন: সুদীপ চ্যাটার্জী(অধিনায়ক), ঋদ্ধিমান সাহা(উইকেটরক্ষক),অভিমুন্য ঈশ্বরণ, অভিষেক দাশ, কাইফ আহমেদ, ঋত্বিক রায়চৌধুরী, রঞ্জোত সিং খাইরা, শাকির হাবিব গান্ধী, শুভঙ্কর বল, করণ লাল, শাহবাজ আহমেদ, ঋত্বিক চ্যাটার্জী, প্রদীপ্ত প্রামাণিক, সুজিত কুমার যাদব, ঈশান পোড়েল, মুকেশ কুমার, আকাশদীপ, অলোক প্রতাপ সিং, মহম্মদ কাইফ এবং সায়ন ঘোষ। চিফ কোচ: অরুনলাল। কোচ: সৌরাশিস লাহিড়ী।