কলকাতা: দেশ-বিদেশের কত মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন শচীন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar) তার ইয়ত্তা নেই। তাঁর সঙ্গেই খেলা একাধিক ভারতীয় ক্রিকেটারও তাঁকে ‘আইডল’ মেনেছেন প্রথম থেকেই। বীরেন্দ্র সেওয়াগ (Virender Sehwag), এম এস ধোনিদের (MS Dhoni) বাড়ির দেওয়ালে সাঁটা থাকত শচীনের পোস্টার। জানেন কি, ভি ভি এস লক্ষ্মণের (VVS Laxman) কেরিয়ার শেষ হতে বসেছিল, ভারতীয় ক্রিকেটের ঈশ্বরের কথাতেই উদ্বুব্ধ হন তিনি এবং ফিরে আসেন।
ভারতের সেরা টেস্ট ব্যাটারদের একজন লক্ষ্মণ। ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) তাঁর ২৮১ রানের ইনিংস সম্ভবত কোনও ভারতীয় ব্যাটারের সেরা টেস্ট ইনিংস। ২০০১ সালের ওই একটা ইনিংস এদেশের ক্রিকেটের মানসিকতাই বদলে দিয়েছিল। কিন্তু এই লক্ষ্মণই ১৯৯৯-২০০০ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় মানসিক চাপে ছিলেন ‘ভেরি ভেরি স্পেশ্যাল’। সে সময় তাঁকে ওপেন করানো হচ্ছিল, কিন্তু একেবারেই ফর্মে ছিলেন না। অস্ট্রেলিয়া সফরের শেষ টেস্টে ব্যর্থ হলে বাদ পড়ে যাবেন এমনটা প্রায় নিশ্চিত ছিল। সংবাদমাধ্যমে তেমনটাই লেখা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: Brazil | Germany | সেনেগালের কাছে ৪ গোল খেল ব্রাজিল! অঘটনের হার জার্মানিরও
তেন্ডুলকরের সঙ্গে একচোট আলোচনা করেন লক্ষ্মণ এবং তারপরেই আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে তাঁর। একথা জানিয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এম এস কে প্রসাদ (MSK Prasad)। শচীন @ ৫০ বইতে প্রসাদ বলেছেন, “লক্ষ্মণ শচীনকে তার ফেভারিট ক্রিকেটার কে জিজ্ঞাসা করেছিল। শচীন বলে, লক্ষ্মণ, তুমি যদি না হাসো এবং দাঁত না দেখাও, আমি বলব তুমিই আমার ফেভারিট ক্রিকেটার। লক্ষ্মণ হাসতে শুরু করে আর বলে, শচীন ওর পিছনে লাগছে।
শচীন বাধা দিয়ে বলে, লক্ষ্মণ, আমি একটা কথা বলতে চাই। তোমার এত প্রতিভা, তুমি আমার থেকে সেকেন্ডের ভগ্নাংশ আগে বল দেখতে পাও। ঈশ্বর তোমায় ব্যতিক্রমী প্রতিভা দিয়েছেন তুমি সেটা বুঝতে পারছ না। ঈশ্বর আমাকে সামান্য প্রতিভা দিয়েছেন কিন্তু সেতাকেই আমি বড় করে কাজে লাগাচ্ছি। ব্যাটিংয়ে আমার চারটে অস্ত্র, ডিফেন্স, পুশ, ড্রাইভ এবং লফট। আমি পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝি এবং যুক্তিবোধ ব্যবহার করে সেই অনুযায়ী খেলি।
এই কথাতেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পান লক্ষ্মণ। এরপর থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বার বার ব্যাট জাত্রে জ্বলে উঠেছেন তিনি। সেই সময়ের দুর্দমনীয় অজিদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫০ গড়ে ২৪৩৪ রান আছে তাঁর, সঙ্গে ছটা শতরান। সবমিলিয়ে ১৩৪টি টেস্ট খেলেছেন ডানহাতি হায়দরাবাদি, ৪৫.৯৭ গড়ে করেছেন ৮৭৮১ রান। তার মধ্যে আছে ৫৬টি হাফ সেঞ্চুরি এবং ১৭টি সেঞ্চুরি।