রোলাঁ গারোতে এভারেস্ট পতন। সেমিফাইনালে হেরে গেলেন তেরো বারের চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদাল।
শুক্রবার এই দুর্দান্ত কাজটা করলেন শীর্ষ বাছাই এবং বিশ্বের এক নম্বর নোভাক জকোভিচ। প্রথম সেট জিতেও শেষ পর্যন্ত নোভাকের কাছে তিন নম্বর বাছাই রাফা হারলেন ৩-৬, ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪) এবং ৬-২ গেমে। রবিবার ফাইনালে জকোভিচ খেলবেন গ্রিসের পঞ্চম বাছাই স্তেফানো সিসিপাসের সঙ্গে যিনি সেমিফাইনালে ৬-৩, ৬-৩, ৪-৬, ৪-৬ এবং ৬-৩ গেমে হারালেন জার্মানির ষষ্ঠ বাছাই আলেকজান্দার জেরেভকে। এই প্রথম গ্রিসের কেউ গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে উঠলেন। রবিবার নোভাক জিতলে সেটা হবে তাঁর উনিশ নম্বর গ্র্যান্ড স্লাম। সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্পর্শ করবেন বাহান্ন বছর আগে গড়া রড লেভারের একটি অনন্য কীর্তি। সেবারই দুবার করে সব গ্র্যান্ড স্লাম জেতার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন কিংবদন্তী লেভার।
রোলাঁ গারোকে বলা হয় নাদালের নিজের জমিদারি। অনেকে ভালবেসে বলে ওটা এখন রাফা গারো হয়ে গেছে। এই নিয়ে এখানে ১০৮টি ম্যাচ খেললেন রাফা। এবং হারলেন মাত্র তিনটি ম্যাচ। তার মধ্যে জকোভিচের কাছে দুটি। ২০১৫-র কোয়ার্টার ফাইনালের পর এবারের সেমিফাইনাল। ২০০৫ থেকে রোলাঁ গারোতে খেলছেন নাদাল। আর শুক্রবার হারের পর জকোভিচের সঙ্গে তাঁর জয়পরাজয়ের রেকর্ড হল ২৮-৩০। এর মধ্যে নাদালের কাছে তিনটে ফাইনাল হেরেছেন জোকার, যার মধ্যে ছিল গত বারের ফরাসি ওপেন ফাইনালও। ৩৫ বছর বয়সী নাদাল সেমিফাইনাল হেরে খুবই হতাশ। বলেছেন, ” খারাপ লাগছে। তবে জীবন তো এখানেই শেষ নয়। আবার দেখা হবে।” আর জকোভিচ বলেছেন, “একটা বিরাট জয় পেলাম। আমার জীবনের সেরা তিনটে জয়ের মধ্যে এটা একটা।”
৩৪ বছর বয়সী জকোভিচ রবিবার যাঁর বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলবেন সেই সিসিপাসের বয়স মাত্র ২২। এর আগে দুজনের সাক্ষাৎকারে জকোভিচ ৫-২ ম্যাচে এগিয়ে আছেন। তবে তরুণ সিসিপাসের বিরুদ্ধে জকোভিচ যতই ফেভারিট হোন না কেন গ্রীক যোদ্ধা কিন্তু সেমিফাইনালে তাঁর দাপট দেখিয়েছেন। প্রথম দুটো সেটে তিনি ৬-৩, ৬-৩ উড়িয়ে দেন জেরেভকে। কিন্তু জার্মান জেরেভ পরের দুটি সেটে দারুণ ভাবে ফিরে আসেন। জিতে নেন ৬-৪, ৬-৪ গেমে। মীমাংসাসূচক পঞ্চম গেমে কিন্তু সিসিপাস তাঁর জাত চেনান ৬-৩ গেমে সেট এবং ম্যাচ জিতে।
অন্য দিকে নাদাল স্বভাবসিদ্ধ দক্ষতায় প্রথম সেট জিতে নেন ৬-৩ গেমে। জকোভিচ বরাবরই একটু লেট স্টার্টার। নিজেকে তাতাতে তাঁর একটু সময় লাগে। সেই ভাবেই তিনি দ্বিতীয় সেট ৬-৩ জিতে যান। দেখার ছিল তৃতীয় সেটে কী হয়। এবং এখানে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত ৬-৬ হয়ে গিয়ে টাই ব্রেকারে যায় সেট। এবং এখানে জকোভিচ নিজেকে ছাপিয়ে যান। নাদাল শত চেষ্টা করেও সেই জকোভিচের নাগাল পাননি। সার্বিয়ান সেটটি স্পেনীয়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন, জেতেন ৭-৪ পয়েন্টে। এবং এই সেটটাই শুষে নেয় নাদালের সব প্রতিরোধ। চতুর্থ সেটে বিনা প্রতিরোধে তিনি আত্মসমর্পণ করেন যা একেবারেই নাদালোচিত নয়। জকোভিচ ৬-২ গেমে সেট জিতে ম্যাচ জিতে যান।
ফাইনালে পণ্ডিতদের মতে জকোভিচ ভীষণভাবে ফেভারিট। কিন্তু তারুণ্যের জ্যোতি ছড়িয়ে সিসিপাস অভিজ্ঞতাকে হারাতে পারেন কি না তাই এখন দেখার।