কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বছরের পর বছর ধরে গোটা বিশ্বে ‘দাদাগিরি’ দেখানো আমেরিকাও পর্যুদস্ত। বিশ্বাস হচ্ছে না! মনে হতেই পারে, কে এমন আছে, যে আমেরিকার মতো অজেয় দেশকে কাবু করতে পারে! এর উত্তর একটাই, প্রকৃতির পরিশোধ। বিরূপ প্রকৃতির খামখেয়ালে আমেরিকার মতো সর্বশক্তিমান দেশও নাকানিচোবানি খেতে পারে, এটা বিশ্বাস করতে কঠিন হলেও সত্যি। একের পর এক বন্যা, দাবানল, দহনজ্বালাময় গ্রীষ্ম কোমরের হাড় নড়িয়ে দিয়েছে বাইডেনের দেশকে।
উত্তর মধ্য-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকার প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ গ্রীষ্মের দাবদাহে হাঁসফাঁস করছেন। মার্কিন আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধ ও বৃহস্পতিবার গরমের তীব্রতা আরও বাড়বে। ইন্ডিয়ানা, কেন্টাকি এবং ওহিয়োর একাংশে পারদ প্রায় ৪৩ ডিগ্রি ছোঁবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এক আবহাওয়াবিদ জানিয়েছেন, এই তাপমাত্রার অর্থ হল— বজ্রপাত, টর্নেডো, মেঘভাঙা বৃষ্টি ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত। যেমনটা হয়েছে ইয়েলোস্টোনে। এখানকার দেশের সবথেকে পুরনো জাতীয় উদ্যান বিধ্বংসী বন্যায় ভাসছে। উদ্যান কর্তৃপক্ষের তরফে একটি ছবি প্রকাশ করে এ খবর জানানো হয়েছে। প্রায় ৮ হাজার ৯০০ বর্গ কিমি এলাকা জোড়া এই জাতীয় উদ্যানের পাশের নদী উপচে গোটা এলাকা ভেসে গিয়েছে। পর্যটকদের চলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্যানের ভিতরের বেশিরভাগ রাস্তা জলের তোড়ে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত।
আরও পড়ুন: Saigal Hossain: সিবিআইয়ের নজরে অনুব্রতর দেহরক্ষী ধৃত সায়গলের ৫০ লক্ষের ফ্ল্যাট, উদ্ধার একাধিক নথি
ক্যালিফোর্নিয়া ও আরিজোনাতেও অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে। শহরগুলির এখন চুল্লির মতো অবস্থা। বাড়ন্ত তাপমাত্রা ও দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টিতে দাবানলের আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিউ মেক্সিকোতে ইতিমধ্যেই ২টি জায়গায় দাবানল শুরু হয়েছে। যার একেকটির বনভূমি এলাকা প্রায় ৩ লক্ষ একরেরও বেশি। নিউ মেক্সিকো এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার বহুলাংশে গত কয়েক বছর ধরে অনাবৃষ্টি চলছে। মাঝেমধ্যেই এইসব এলাকায় দাবানল জ্বলে উঠছে। চলতি বছরে একের পর এক দাবানল হতে পারে বলে ইতিমধ্যেই দমকল বাহিনীকে সতর্ক করে রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে এবং অকাতরে জ্বালানি হিসেবে পেট্রলের ব্যবহারের ফল এটা। সব মিলিয়ে বিশ্বের সবথেকে ধনী, শক্তিসম্পন্ন আমেরিকাও প্রকৃতির আপন মেজাজের কাছে অসহায় অবস্থায় রয়েছে।