কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত লিভিভ হাসপাতালের ওয়ার্ডে বিয়েটা সেরেই ফেললেন ওকসানা। পেশায় নার্স ওকাসানাকে বিয়ের সাজে খুব সুন্দর লাগছিল। সাদা গাউন। মাথায় অর্কিড ফুলের সাজ। মৃদু স্বরের মিউজিকে উৎসবের আবহ। প্রিয় পুরুষ ভিক্তরের বাহু জড়িয়ে ওকসানা ভুলে গেল কয়েকদিন আগের এক ভয়াবহ মাইন বিস্ফোরণের কথা।
ইউক্রেন-রাশিয়ার সামরিক সংঘাত দু’মাস পেরিয়ে গিয়েছে। রাজধানী কিভ। মারিয়ুপোল। বন্দর শহর ওডেসা। দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের একাধিক শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত। সংঘাত থামারও কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি রোমানিয়া, পোল্যান্ড লাগোয়া পশ্চিমের শহর লিভিভও বাদ যায়নি। ওকসানা এই লিভিভেরই এক হাসপাতালের সেবিকা। নার্স। মাইন বিস্ফোরণে ওকসানার দুটো পা উড়ে গিয়েছে। একটি হাতের করতলও মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
ওকসানা বালানডিনা। ইউক্রেনের এক মেয়ে। দু’মাস আগেও জানতেন না জীবন এভাবে আমূল বদলে যাবে। এক রবিবার আচমকাই দেশে যুদ্ধ শুরু হয়। দিনরাত আহত মানুষের সেবায় নিজেকে সঁপে দেন ওকসানা। সামরিক সংঘাতের শুরুর দিকে লিভিভ শহরে কোনও রকম হামলার আশঙ্কা ছিল না। আহতরা বেশিরভাগেরই চিকিৎসাধীন ছিলেন লিভিভ হাসপাতালে। ওকসানাদের মত সেবিকারাও এখানে আর একরকম যুদ্ধ করছিলেন। এরইমধ্যে একদিন রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা। লিভিভের দরজায় শত্রুপক্ষের মাইন।
আরও পড়ুন: Ethiopian nomadic: চার বছরের খরায় বিপন্ন ইথিওপিয়ার যাযাবর শ্রেণি কি হারিয়ে যেতে বসেছে?
মাইন বিস্ফোরণের পর প্রাণে বাঁচার আশাও ছিল ক্ষীণ। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রাণপন লড়াই করেছেন ওকসানা। ওখানেই একদিন দেখা প্রিয়তম ভিক্তর ভাসিলিভের সঙ্গে। ভিক্তর কি সঙ্গী হিসেবে মেনে নেবে? পা হরিয়ে সংশয় ছিল ওকসানার। ভিক্তর কিন্তু একদম দেরি করেননি। চিরবন্ধনে বেঁধে নিয়েছেন প্রিয়তমা ওকসানাকে। হাসপাতালের ওয়ার্ড বিয়ের আসরে। বর-কনে ঘুরে ঘুরে নাচ করলেন। গান গাইলেন। সবাই হাততালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানাল।